।। আব্দুল্লাহ আল মাহবুব শাফি।।
বিএনএ, নোবিপ্রবি: “সেন্ট মার্টিন” বাংলাদেশ নামক ব-দ্বীপটির সর্ব দক্ষিণের একটি প্রবাল দ্বীপ। বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের মাঝে অসংখ্য প্রবাল রাশি মিলে মিশে একাকার হয়ে তৈরি করেছে দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিন। টেকনাফ থেকে নাফ নদী পেরিয়ে জাহাজ যখনি সমুদ্রে প্রবেশ করবে আপনি হারিয়ে যাবেন নীলের এক অসীম আবেশে। দ্বীপের যত কাছে যেতে থাকবেন আপনি, তত মনে হতে থাকবে ‘কখন নামব, কখন ছুটে যাব সমুদ্রের জলে!’ তবে সেন্টমার্টিনে এমন দৌড় দিলে ভুলই হবে আপনার। যেমন আছে চোরাবালির ভয় তেমনি আছে অসংখ্য কোরাল। তাই সাবধানে এগোনোই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
সেন্টমার্টিন নাম শুনলেই কেমন যেনো বিদেশী লাগে তাই না? আসলেই নামটা ঠিক আমাদের দেশীয় নয় এবং এই নামকরণের পিছনে যথেষ্ট কারণ ও রয়েছে। ১৯০০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ব্রিটিশ ভূ-জরীপ দল এই দ্বীপকে ব্রিটিশ-ভারতের অংশ হিসেবে গ্রহণ করে। জরীপে এরা স্থানীয় নামের পরিবর্তে খ্রিষ্টান সাধু মার্টিনের নামানুসারে “সেন্ট মার্টিন” নাম প্রদান করে। এরপর ধীরে ধীরে এই অঞ্চলের বাইরের মানুষের কাছে দ্বীপটি সেন্টমার্টিন নামেই পরিচিতি লাভ করে। নামকরণ যাই হোক এই দ্বীপের সৌন্দর্য যে অতুলনীয় সে বিষয়ে কারো দ্বিমত নেই। যারা কয়েক যুগ আগে গিয়েছেন তারা নাকি আরো অনেক বেশি সৌন্দর্য দেখতে পেয়েছেন এই প্রবাল দ্বীপটির কিন্তু আমরা এখনো যতটুকু দেখতে পাই আমাদের দেশের তুলনায় সেই বা কম কিসের?
এই দ্বীপের প্রতিটি অংশে লুকিয়ে রয়েছে অপরূপ সৌন্দর্য। আমরা সৌন্দর্য উপভোগ করেছি কোলাহলহীনতায়, সমুদ্রের নির্জনতায়, সাগরের গর্জনে, মুগ্ধ হয়েছি রাতের ভরা জ্যোৎস্নায় সাগরের জোয়ারে ফুলে ফেপে উঠাতে। সবথেকে বেশি ভালো লেগেছে যে জিনিসটি তা হলো স্থানীয় মানুষদের ভালোবাসা। এখানকার মানুষ খুবই অতিথীপরায়ন। খুব অল্প সময়েই তারা আপনাকে আপন করে নিবে। তাদের সরলতা উদারতা আপনাকে মুগ্ধ করবেই। অসংখ্য নারকেল গাছ, কেয়া গুল্ম আর সবুজ বনানী এই দ্বীপকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। উত্তাল সাগরের নোনা জল যখন আছড়ে পরে কেয়া গাছের ফাঁকে, ঝিরি ঝিরি বাতাসে তৈরি হয় সফেদ ফেনা, সে এক মাতাল করা দৃশ্য। রাতের জোৎস্না এসে যখন লুটোপুটি খায় চিকচিকে বালুর বুকে, নীল আকাশ তখন আরও নীলাভ হয়। সুনসান নীরব রাতে চারদিকে শুধু সাগরের হুংকার আর ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার গর্জন। অপূর্ব, অসাধারণ, অদ্ভুত সুন্দর, অসহ্য সুন্দর। হাজারো জোৎস্না রাতের চেয়েও সুন্দর সেন্টমার্টিনের একটি নির্ঘুম চাঁদনী রাত, এখানে সময়ের কাটা এগিয়ে চলে কিন্তু সৌন্দর্য পিপাসার তৃষ্ণা মেটে না।
আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছিলো নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ৭ মার্চ রাতে। পরদিন ভোরে আমরা পৌঁছাই টেকনাফ। সেখানে নেমে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা সেরে নিই সবাই। তারপর একটু আশেপাশের এলাকায় একটু ঘুরাঘুরি করে চলে যাই জাহাজের জেটিতে। জেটি থেকেই পিপাসু চোখ নাফ নদীর দিকে তাকিয়ে, হায়! কখন পৌছব সেই সমুদ্রে! অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শিক্ষা- ১৫ ব্যাচের সবাই শুরু করলো অনিন্দ সুন্দর দারুচিনি দ্বীপের উদ্দেশ্যে যাত্রা। যাত্রা শুরু করে বোঝা গেল নাফ নদীটিও সৌন্দর্য্যে অপরূপা। নদীর একদিকে পাহাড়, যা কিনা আমাদের টেকনাফ। অন্যদিকে দূরে মায়ানমার। অপূর্ব সবুজ প্রকৃতি। জাহাজ চলার কিছুক্ষণের মাঝেই গাঙচিল হল আমাদের সাথী। জাহাজের যাত্রীরা চিপস, বাদাম, চকলেট যার কাছে যা ছিল ছুঁড়ে দিচ্ছিল ওদের। জাহাজ ঘিরে শত শত গাঙচিল। আমরা চলেছি, ওরাও চলেছে আমাদের সাথে। এভাবেই চললো নাফ নদী পর্যন্ত। মোহনার দিকে যতই এগিয়ে এলাম গাঙচিলের সংখ্যা কমে এল। ধীরে ধীরে আমরা ঢুকে পড়লাম নীল দরিয়ায় তথা আমাদের বঙ্গপোসাগরে। স্রোতের তীব্রতা বেড়ে গিয়েছে, একদিকে সমুদ্রে যাত্রার রোমাঞ্চ অন্যদিকে বড় বড় ঢেউ এর জাহাজের সাথে আছড়ে পড়ার জন্য তৈরি হওয়া ভয়। সবমিলিয়ে এ এক সিনেমার গল্পের মত অনুভূতি। জাহাজে সবাই ব্যস্ত ছিলো ছবি তোলায়, ডেকে দাঁড়িয়ে সমুদ্র বিলাসে। অবশেষে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর আমরা এসে পৌঁছালাম আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য সেন্টমার্টিনে।
দ্বীপের উত্তর পাশে নারিকেল জিঞ্জিরা। মাঝে দ্বীপের সবচেয়ে সরু স্থান গলাচিপা যেখানে পূর্ব এবং পশ্চিম দুই পাশের সমুদ্রের গর্জন শোনা যায়। এবং সর্ব দক্ষিণে ছেড়াদিয়া বা ছেঁড়াদ্বীপ। সেন্টমার্টিন নামে এলাকাটির বহুল প্রচার থাকলেও সরকারি কাগজপত্র, রেকর্ডপত্র, মানচিত্র ও দলিল দস্তাবেজে নারিকেল জিনজিরা লিপিবদ্ধ রয়েছে। আরবি শব্দ জাজিরা অর্থ দ্বীপ। এ দ্বীপে প্রচুর নারকেল গাছ রয়েছে। প্রায় ত্রিশ হাজার নারকেল গাছ রয়েছে বলে এলাকাবাসীদের ধারণা। সে থেকেই এটি নারিকেল জিনজিরা হিসেবেই পরিচিত হয়ে আসছিলো। এখানে একটি লাইট হাউস রয়েছে যা গভীর সমুদ্রে চলাচলরত জাহাজ, নৌকা ও নাবিকদের দিক নির্দেশনা দিয়ে আসছে।
জাহাজের জেটিতে নেমেই আমরা চলে গেলাম আমাদের আগে থেকেই বুকড করে রাখা সাকিনা রিসোর্টে। রিসোর্টে এসে সবাই ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম। কোরাল মাছ আর বিভিন্ন আইটেমের ভর্তা দিয়ে পেট পূজো করলাম সবাই। তারপর খাওয়ার পর্ব শেষে সবাই সবার মত দ্বীপটি ঘুরতে চলে গেলো। আমরা ক’জন চলে গেলাম সমুদ্রস্নানে। সাথে চললো ছবি তোলা, প্রচুর ছবি তুলেছি আমরা। বন্ধুদের সাথে সমুদ্রে কাটানো সময়টা ছিলো অসাধারণ, অনবদ্য এবং রোমাঞ্চকর। সমুদ্রস্নান শেষে আবার রিসোর্টে ফিরে গেলাম। গোসল করে পরিপাটি হয়ে আমরা বের হলাম সেন্টমার্টিন ঘুরতে, এই দ্বীপের জনপদের মানুষদের সাথে কথা বলতে। আমরা গিয়েছিলাম প্রখ্যাত লেখক জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার প্রয়াত হূমায়ূন আহমেদের রিসোর্ট “সমুদ্র বিলাশ” এ। তারপর আমরা চলে গেলাম স্থানীয় বাজারে ঘুরতে। কিছু কেনাকাটা করলাম সবাই। তারপর বিচের পাশের বেঞ্চ গুলোতে বসে আকাশের তারা দেখতে দেখতে কখন যে ঘন্টা পার হয়ে গেলো আমরা টেরই পেলাম না। রাতে খাওয়ার পর্বে ছিলো কোরাল মাছের বারবিকিউ। খাবার খেয়ে আমরা ফিরে আসলাম রিসোর্টে। রাতে শুরু হলো ব্যাচের সবাইকে নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমাদের বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক ও তাঁর পরিবার এবং আমাদের ব্যাচ কো -অর্ডিনেটর সহকারী অধ্যাপক ফাতেমা বেগম পপি ও তাঁর পরিবার। অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গান, নাটিকা, নাচ প্রদর্শন করে। শেষের দিকে সবার অংশগ্রহণে মেয়েদের পিলো পাসিং, ছেলেদের মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা এবং র্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হয়। তারপর প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে অতিথিবৃন্দ পুরস্কার তুলে দেন। আমাদের ব্যাচ থেকেও আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে উপহার তুলে দেওয়া হয়। এভাবেই কেটে যায় দারুচিনি দ্বীপে আমাদের প্রথম দিন।
দ্বিতীয় দিনের শুরু হয় সূর্যোদয় দেখার মাধ্যমে। সূর্যোদয় দেখা শেষে চলে গেলাম বাংলাদেশের শেষ সীমানা ছেঁড়াদিয়া দ্বীপ দেখতে। এটি সেন্টমার্টিন থেকে আলাদা। ভাটার সময়ই শুধু এই দ্বীপে যাওয়া যায়। জোয়ারের সময় এটি সেইন্ট মার্টিন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই দ্বীপের সৌন্দর্য ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। সেন্টমার্টিন ভ্রমণে আসলে ছেঁড়াদিয়া না গেলে আপনার ভ্রমন অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। পুরো দ্বীপে এক ঘণ্টা ঘুরাঘুরি করলাম সবাই। তারপর আবার ট্রলারে করে ফিরে আসলাম সেন্টমার্টিনে। সেখান থেকে সকালের নাস্তা সেরে রিসোর্টে ফিরে আসলাম সবাই। একটু রেস্ট নিয়ে চলে গেলাম দ্বীপের একটি বিদ্যালয়ে আমাদের ইনক্লুসিভ এন্ড স্পেশাল এডুকেশন কোর্সের ডাটা কালেকশনের কাজে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের ব্যবহার ছিলো অমায়িক, অসাধারন। বিদ্যালয়ের কাজ শেষ করে এবার ফেরার পালা। আমাদের শীপ ছিলো দুপুর ২ টায়। তাই দুপুর ১ টার দিকে আমরা সবাই রিসোর্ট থেকে চেক আউট দিয়ে জেটির উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লাম। জাহাজে উঠেই বুকটা হুহু করে উঠলো। এই রোমাঞ্চকর ভ্রমন যে শেষ হতে চলেছে, আবার কবে আসবো সেন্টমার্টিন এই ভেবেই মনটা খারাপ হয়ে গেলো। যে এই দ্বীপে একবার আসে সে দ্বীপের সৌন্দর্যের নেশায় পড়ে যায়। বারবার ফিরে আসতে চায় সবাই এই নারিকেল জিঞ্জিরায়। জাহাজ জেটি ছাড়লো ঠিক ২ টায়। ধীরে ধীরে সেইন্ট মার্টিন আমাদের চোখের সীমানা থেকে মুছে গেলো। আমরা ফেলে আসলাম নোনা জলের মাঝে জেগে থাকা এক অবারিত সৌন্দর্যের স্বপ্নভূমিকে। আর সাথে করে নিয়ে আসলাম এক আকাশ সমান অভিজ্ঞতা ও দ্বীপের জন- জীবন নিয়ে স্মৃতি হিসেবে তোলা ছবি।
পর্যটকরা অনেকে সেন্টমার্টিন আসেন নীল পানির খোঁজে। কেউবা আসেন দেশের সর্ব দক্ষিনের শেষ প্রবালটিতে বসে ছবি তুলতে, সমুদ্রের গর্জন শুনতে বা যান্ত্রিক জীবনের গ্লানি ভুলতে প্রিয়জনের সাথে নির্জনে একটু একান্ত সময় কাটাতে। কেউ আসেন নদী-সাগর পেরিয়ে দ্বীপটির রহস্য উন্মোচনে। তেমনি আমরাও গিয়েছিলাম এই দ্বীপের সৌন্দর্য অবলোকনে।
জাহাজ টেকনাফের জেটিতে পৌঁছায় বিকেল সাড়ে ৪ টায়। ব্যাচের সবাই মিলে আমরা গ্রুপ ছবি তুললাম। তারপর আমাদের রিজার্ভ করা বাসে উঠে পড়লাম সবাই। বাস টেকনাফ থেকে ছাড়লো সন্ধ্যা ৭ টায়। ফিরতি পথে আমাদের যাত্রা বিরতি ছিলো কক্সবাজার। এখানে আমরা ২ ঘণ্টা ঘুরাঘুরি করার সুযোগ পাই। কলাতলি বীচে বসে সমুদ্র দেখতে দেখতে আমরা ভ্রমন ক্লান্তি কাটানোর চেষ্টা করলাম। তারপর গেলাম বার্মিজ মার্কেটে কেনাকাটা করতে। নানাজাতের আচার, বার্মিজ স্যান্ডেল, সমুদ্রের শামুক- ঝিনুক দিয়ে বানানো নানা ধরনের শোপিস সহ অনেককিছু কিনলাম আমরা। রাতে খাবার পর্ব শেষ করলাম কলাতলি রেস্তোরাঁয়। কক্সবাজার পর্ব শেষ করে আবার আমরা বাসে উঠলাম। বাস ছাড়লো রাত দেড়টায়। ভ্রমন ক্লান্তিতে একে একে সবাই বাস ছাড়ার সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়তে লাগলো। কেউবা আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমাদের ট্যুরের ছবি পোস্ট দিচ্ছিলো। আমরা নোয়াখালী পৌঁছাই পরদিন(১০ মার্চ) সকাল ৯ টায়। শেষ হলো আমাদের ব্যাচের প্রথম ব্যাচ ট্যুর।
এছাড়াও সেন্টমার্টিনে কথা হয়েছিলো কয়েকজন জেলে ভাইয়ের সঙ্গে। গভীর সমুদ্রে গিয়েও তারা মাছ ধরেন। আব্দুস সালাম নামক এক মাছ বিক্রেতার (জেলে) সাথে কথা বললে, তিনি জানান, আমি প্রতিদিন সকালে সমুদ্রে মাছ ধরতে বের হই। আমার ছোট একটা বাচ্চা আছে, ও বড়শি দিয়ে মাছ ধরে। আমরা সুন্দরী মাছ, চাঁদা মাছ, কোরাল মাছ, বাগদা চিংড়ি এসব মাছ ধরে বাজারে বিক্রি করি।
সবকিছুর প্রথম সবসময় সুন্দর হয়, তেমনি আমাদের এই ট্যুরটিও আমাদের স্মৃতিতে থেকে যাবে আজীবন। শেষ বয়সে মোবাইলে তুলে নিয়ে আসা ছবিগুলো দেখে হয়তো আমাদের চোখগুলো ভিজে যাবে নোনাজলে। অনুভূত হবে সেইসব রোমাঞ্চের দিনগুলো।
শিক্ষা বিভাগের ১৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাসুদ বিল্লাহ তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘এটি ছিলো আমাদের প্রথম ব্যাচ ট্যুর। আমার জীবনে কাটানো অন্যতম সেরা ৩ টি দিন ছিলো। এই ভ্রমণের স্মৃতি আমার আজীবন মনে থাকবে। ‘
কীভাবে যাবেন: আমরা গিয়েছিলাম নোয়াখালী থেকে সরাসরি টেকনাফ রিজার্ভ করা বাসে। এছাড়াও নোয়াখালী থেকে বাসে করে সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারবেন। তারপর সেখান থেকে যেতে হবে টেকনাফ। টেকনাফ থেকে জাহাজে করে সেইন্ট মার্টিন। নোয়াখালী থেকে কক্সবাজার বাস ভাড়া পড়বে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পড়বে আরো ১৫০-২০০ টাকা। সাধারণত জাহাজের ক্লাস ও মান অনুযায়ী সেন্টমার্টিন যাওয়া আসার টিকেট ভাড়া ৮০০ থেকে ১৫০০ টাকার পর্যন্ত হয়ে থাকে। টেকনাফের জেটি ঘাট থেকে প্রতিদিন ৯টা থেকে ৯টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই জাহাজগুলো সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে এবং বিকেল ৩টা থেকে ৩টা ৩০ মিনিটের মধ্যেই সেইন্ট মার্টিন থেকে ফিরতি পথ ধরে। জাহাজের টিকিট সংগ্রহ করার সময় উল্লেখ্য করতে হবে আপনি কবে ফিরবেন। কারণ যাওয়া এবং আসার ভাড়া একই টিকিটে নেওয়া হয়ে থাকে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে থাকার ব্যবস্থা : সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণে কেমন খরচ হবে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করবে আপনি কেমন খরচ করবেন, এবং কি ধরনের রিসোর্ট এ থাকবেন, কেমন খাওয়া দাওয়া করবেন তার উপর নির্ভর করবে। স্ট্যান্ডার্ড হোটেল বা রিসোর্টে রুম ভাড়া ১২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা। বাজারের দিকে মোটামুটি ভালো মানের হোটেল ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা ভাড়াতে পাওয়া যায়। এই ভাড়া এমনি সাধারণ দিনের জন্য প্রযোজ্য। ছুটির দিনে লোকজন বেশি থাকে তাই ভাড়া একটু কম বেশি হয়। এক রুমে কয়েকজন মিলে থাকলে ভাড়া ভাগ হয়ে অনেকটা কমে যাবে। এ ছাড়া আরও কম টাকায় থাকতে চাইলে স্থানীয় মানুষদের বাড়িতে অল্প টাকায় থাকতে পারবেন।
বিএনএ/এমএফ