২১ ফেব্রুয়ারিতে আমতলার সভা, গুলিবর্ষণসহ পরবর্তীকালে আন্দোলনের প্রায় সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা থেকে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে শহীদ মিনার নির্মাণের শেষ পর্যন্ত ছিল তাঁর কর্মব্যস্ততা। ভাষা-আন্দোলনের কর্ম তৎপরতা বজায় রাখতে আন্দোলনের শেষ দিনগুলোতেও তিনি অনবদ্য ভূমিকা রাখেন। হুলিয়া মাথায় নিয়ে রাতের অন্ধকারে ব্যারাক হোস্টেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ছাত্রনেতাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন। সর্বশেষ সংগ্রাম পরিষদ গঠনের সকল কর্মকাণ্ডে অংশ নিয়েছেন এবং বিশেষ ভূমিকা পালনসহ নিয়মিত বৈঠকে যোগদান ও নানা কর্মতৎপরতার মাধ্যমে আন্দোলনকে জিইয়ে রাখেন। ভাষা-আন্দোলনের কর্ম তৎপরতা বজায় রাখার জন্য সাংগঠনিক কাজে তিনি জড়িত থাকেন ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত। তিনি ছিলেন ২য় সর্বদলীয় পরিষদের সদস্য।
১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গঠন ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অন্যান্য ছাত্রনেতাদের সঙ্গে অংশগ্রহণ; একই বছর মে মাসে ৯২-ক ধারা জারির পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে আত্মগোপন এবং ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত দেশের গণতন্ত্রী প্রগতিশীল রাজনীতিতে প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তাঁর। বায়ান্ন’র আন্দোলনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তিনি প্রায় প্রতিটি পর্বে, প্রতিটি মিছিলে অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে এনাটমি বিভাগে ‘একুশে সংগ্রহশালা’ ও ‘ভাষা-আন্দোলনে জাদুঘর’ স্থাপনে তাঁর উদ্যোগ খুবই স্মরণীয়। ভাষা-আন্দোলন সংগঠনে তিনি যেমন ছিলেন অগ্রনায়ক ঠিক তেমনি এই আন্দোলনের চেতনা বিকাশের ক্ষেত্রেও তিনি পথিকৃৎ। তিনিই প্রথম গঠন করেন ‘একুশে পরিষদ’ ও ‘ভাষা-আন্দোলন জাদুঘর’। এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে ভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস লিখাসহ নানা কার্যক্রমে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। রাষ্ট্রভাষা-আন্দোলনের ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রেও তিনি অগ্রনায়ক।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(৪) আহমদ রফিক পর্ব: ০২