বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের কর্ণফুলীতে জোরপূর্বক মসজিদের জায়গা দখল করে ও ঘনবসতি এলাকায় ছাড়পত্রবিহীন আওয়ামীলীগ নেতার ব্রিকফিল্ড চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এই অবৈধ ব্রিকফিল্ড বন্ধ করতে জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও নিরব রয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় একটা সূত্র বলছে উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এই অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করা হচ্ছে।
দেখা গেছে, গত ৮ থেকে ১০ বছর যাবত পরিবেশ আইনকে বৃদ্দাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধভাবে চলছে এই ইটভাটা। এলাকাবাসীর সমন্বয়ে ইটভাটা বন্ধ করতে গত ২১ই নভেম্বর জেলা প্রশাসকের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় এক ফারুক নামের প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা। তিনি উপজেলার ইছানগরে ৮নং ওয়ার্ডে ঘনবসতি এলাকায় মসজিদের জায়গা দখল করে প্যারাগণ ব্রিকফিল্ড নামের এক অবৈধ ইটভাটা নির্মাণ করেন। স্থানীয় একটি সূত্র বলছে ইট ভাটার মালিক বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় গত প্রায় ৮-১০ বছর যাবৎ এলাকার অসহায় কৃষকদের জমির পাশে ব্রিকফিল্ড নির্মাণ করে। এই অবৈধ ইটভাটা মালিকের নাম মোহাম্মদ ফারুক। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। ক্ষমতার জোরে তিনি শহর আলী জামে মসজিদের ওয়াকফকৃত জমি অবৈধ ভাবে জোরপূর্বক দখল করে পরিবেশ ও কৃষি জমি নষ্ট ও দখল করে আসছে বলে জানায় তারা।
সরেজমিন ব্রিক ফিল্ড এলাকা ঘুরে দেথা গেছে এই ছাড়পত্রিবহীন অবৈধ ব্রিকফিল্ডের অনিয়ন্ত্রিত ধোয়ার কারণে উক্ত এলাকায় ৫০-৬০ কানি কৃষি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অবৈধ ব্রিকফিল্ড নির্মাণের কারণে এলাকার শত শত মানুষের শ্বাসকষ্টর মত ভয়াবহ রোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানান স্থানীয় কয়েকজন ভুক্তভোগী ।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী পর্যালোচনা করলে ইট ভাটাটি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়। দেখা গেছে ব্রিকফিল্ডের আধা কি.মি এর ভিতরে ৬টি স্কুল রয়েছে তার মধ্যে হাজী আলীম উদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজ, ইছানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাউথ চট্টগ্রাম স্কুল এন্ড কলেজ, খোয়াজনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আছিয়া মোতালেব রিজিয়া নাছরিন উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাক স্কুল, ও ১টি মাদরাসা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, মঙ্গনিয়া আলতাফিয়া মাদরাসার পাশেই ব্রিকফিল্ড নির্মাণ করায় স্কুল ও মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীদের আসা যাওয়ার পথে ব্রিকফিল্ড শ্রমিকদের কাছ থেকে ইভটিজিং এর স্বীকার হচ্ছে, কোমলমতি শিশুদের ব্রিকফিল্ডের ধোয়ার কারণে অল্প বয়সেই রোগ বালাই সৃষ্টি হচ্ছে। অবৈধ ভাবে গর্ত করে এলাকার অসহায় মানুষদের কৃষি জমি নষ্ট ও দখল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। ইট ভাটার মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ভয়ে এলাকার কোন মানুষজন মুখ খুলছে না।
এবিষয়ে কথা বলতে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাসুমা জান্নাতকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
বিএনএনিউজ /নাবিদ/এইচমুন্নী