25 C
আবহাওয়া
২:৪৫ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ১৯, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও ভোয়া বন্ধের আহ্বান জানালেন ইলন মাস্ক

রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও ভোয়া বন্ধের আহ্বান জানালেন ইলন মাস্ক


বিশ্ব ডেস্ক: বিলিয়নিয়ার উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক মার্কিন সরকার-তহবিলপ্রাপ্ত দুটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান—রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি (RFE/RL) ও ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA)—বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এই মন্তব্য করেছেন তার এক্স (পূর্বে টুইটার) প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টের মাধ্যমে।

মাস্ক, যিনি ট্রাম্প প্রশাসনের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হয়েছেন, এই মন্তব্য করেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেল-এর এক্স পোস্টের জবাবে। গ্রেনেল এই দুই গণমাধ্যমকে কটাক্ষ করে লিখেছিলেন, “রেডিও ফ্রি ইউরোপ ও ভয়েস অফ আমেরিকা হল মার্কিন জনগণের করের অর্থে পরিচালিত গণমাধ্যম। এটি রাষ্ট্র পরিচালিত একটি সংস্থা, যেখানে চরম বামপন্থী কর্মীদের আধিপত্য রয়েছে। এটি অতীতের একটি ধ্বংসাবশেষ। আমাদের আর সরকারি অর্থে পরিচালিত গণমাধ্যমের দরকার নেই।”

এই মন্তব্যের সাথে একমত প্রকাশ করে মাস্ক পোস্টটি পুনঃটুইট করেন এবং লেখেন, “ইউরোপ এখন মুক্ত। কেউ আর এগুলো শোনে না। শুধু কিছু চরম বামপন্থী উন্মাদ নিজেদের মধ্যে কথা বলে, আর বছরে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার করদাতাদের অর্থ অপচয় করে।”

তিনি আরও লেখেন, “হ্যাঁ, এগুলো বন্ধ করে দাও।”

সরকারি অর্থে পরিচালিত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বিতর্ক

RFE/RL ও VOA উভয়ই মার্কিন কংগ্রেসের অর্থায়নে ইউএস এজেন্সি ফর গ্লোবাল মিডিয়া (USAGM)-এর আওতায় পরিচালিত হয়।

ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংবাদ প্রচার করছে এবং এটি ৪৯টি ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করে। সাপ্তাহিক গড়ে ৩৬.২ কোটি মানুষের কাছে সংবাদের তথ্য পৌঁছায়। ২০২২ সালের হিসাবে, সংস্থাটিতে ৯৬০ জনের বেশি কর্মী কাজ করছিল।

রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি (RFE/RL) ২৭টি ভাষায় ২৩টি দেশে সংবাদ পরিবেশন করে। এটি ৭০০ জনেরও বেশি স্থায়ী সাংবাদিক ও ১,৩০০ জন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক পরিচালনা করে, যার মাধ্যমে প্রতি সপ্তাহে ৪৭ মিলিয়নের বেশি মানুষ তথ্য পেয়ে থাকে।

সরকারি ব্যয় হ্রাসের পক্ষে মাস্কের অবস্থান

মাস্ক মার্কিন প্রশাসনের “ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি” নামক একটি কর্মসূচির নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যা সরকারি ব্যয় কমানোর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। যদিও এটি মার্কিন সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মতো মন্ত্রিসভা পর্যায়ের কোনো সংস্থা নয়।

তিনি মার্কিন করদাতাদের অর্থ ব্যবহারের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের জন্য সরকারি অর্থায়নের বিরোধিতা করেছেন। এছাড়া, তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছেন, যা বিদেশি সাহায্য ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।

ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে USAID বিলুপ্ত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এতে এর জনবল কমানো হয়েছে এবং বেশিরভাগ সহায়তা প্রকল্প স্থগিত করা হয়েছে। এর ফলে আগামী তিন বছরে মিয়ানমারের মানবাধিকার, গণতন্ত্র ও স্বাধীন গণমাধ্যম প্রকল্পগুলোর জন্য বরাদ্দ ৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এছাড়াও, মিয়ানমার-থাইল্যান্ড সীমান্তের শরণার্থী শিবিরগুলোতে হাসপাতাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সংকট দেখা দিয়েছে।

মার্কিন করদাতাদের অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে বিতর্ক তীব্র হয়ে উঠছে। সরকারি অনুদানে পরিচালিত গণমাধ্যম ও সাহায্য সংস্থাগুলো বন্ধের পক্ষে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, এতে সরকারি বাজেট কমানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে সমালোচকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মানবিক সহায়তা প্রদানকে দুর্বল করে দেবে।

প্রথম ট্রাম্প প্রশাসনও সরকারি তহবিলপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও বৈদেশিক সাহায্য কর্মসূচি সীমিত করার পরিকল্পনা করেছিল, যা মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যদের কঠোর বিরোধিতার সম্মুখীন হয়।

বিএনএনিউজ২৪, এসজিএন

Loading


শিরোনাম বিএনএ