বিএনএ, চট্টগ্রাম: ইস্টি কুটুম, মিষ্টি কুটুম এসো স্বাদের বাড়ি, খেতে দেবো রসের পিঠা বসো তাড়াতাড়ি, হিম কুয়াশার কলরবে মাতবে পিঠা উৎসবে, আরারগিন ফুয়াদ্দে পিঠা, হাত পাচ চইদ্দ দুই টিয়া নইদ্দ, এভাবেই আঞ্জলিক এবং চলিত ভাষায় কবিতা লিখে প্রতিটা স্টলকে সাজানো হয়েছে হৃদয় হরণ, ডিম সুন্দরী, ছইনপাক্কন, দুধপুলি, ফুলঝুড়িসহ নানান প্রকারের পিঠায়। আবার এসব স্টলগুলোর নামও দেওয়া হয়েছে ডিপার্টমেন্ট আর বাঙালিয়ানার সংমিশ্রণে। বলছিলাম চট্টগ্রাম সরকারি হাজী মুহাম্মদ কলেজের পিঠা উৎসবের কথা।
পিঠা উৎসব উপলক্ষ্যে শুক্রবার থেকেই নিজেদের স্টল তৈরিতে ব্যস্ত ছিলো প্রতিটা ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীরা। উৎসবের দিন শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকেই শাড়ি-পাঞ্জাবীতে সেজেগুজে কলেজের জিরো পয়েন্টে উপস্থিত হতে থাকে শিক্ষার্থীরা।
এদিন কলেজের বিভিন্ন ডিপার্ট্মেন্টের ১৬টি স্টল তৈরি করা হয়। স্টলগুলোর নাম হলো, রাষ্ট্রের রসনা, মিডা চুনচুইন্না, পৌষালি, স্বাদের সমীকরণ, পিঠার সাতকাহন, ঠাকুরমার ঝুড়ি, ফুয়েদ্দে ফিডার দোয়ান, পিঠার পসরা, পিষ্টক, ফেওলের পিঠা ঘর, পিঠা কুঞ্জ, পিঠা পার্বন, ফোটন ফ্লেভার, পৌষী, পুলি প্রসাদ, রসময় ব্যঞ্জন।
গ্রামীণ এবং বাঙালির ইতিহাস-ঐতিহ্যে সাজানো এসব স্টলে অন্তন, মিষ্টি ডোনাট, দুধ পাকন, কারস্টর্ড কাপ, চিকেন ঝাল, বিন্নি চাউলের পিঠা, মালাই কেক, সুজি বাপা পিঠা, পাকন পিঠা, দুধ চিতই, পেষ্টি কেক, সুজির বরফি, জার কেক, কুচি পিঠা, নারিকেল নাড়ু, বিনি চালের শাফি টুকরা, সূর্যমুখী, হৃদয় হরণ, তামু চিকেন, ছিটকা পিঠা, শাগু দানা, মধুভাত, নারিকেল পুলি, মহেশখালীর মিষ্টি পান, ডিম সুন্দরী, ছইনপাক্কন, দুধপুলি, খাজা, শামুক পিঠা, ফুলঝুড়ি, চাইন্না পিঠা, ক্ষীর, মালপোয়া, কদম পিঠা, পুয়া পিঠা, পুলিচা, খানা, আনতাসা পিঠা, হাফাইননে পিঠা, ঝাক্কা পিঠা, আতিক্কে পিঠা, মোমো, বউ পিঠা, হাতঝড়া, বসন্ত পিঠা, পেস্ট্রি, গোলাপ পিঠা, ছাচ পিঠা, শিমের ফুল, মুগপাকন, সেমাই লাড্ডু, লবঙ্গ লতিব, বেলি ফুল, সাবু দানার, ডুম পান্তুয়াসহ শত প্রকারের পিঠা সাজানো হয়।
সায়মা সুলতানা মাইশা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, “৩৫-৪০ রকমের পিঠা দিয়ে আমাদের স্টলটাকে সাজানো হয়েছে। এসব পিঠার দাম রাখা হচ্ছে ১০-৪০ টাকা পর্যন্ত। ঘন্টা দু’য়েকের মধ্যে আমাদের প্রায় পিঠা বিক্রি হয়ে গেছে। বিভিন্ন শিক্ষার্থীরা এসে খুবই আনন্দের সহিত এসব পিঠা কিনে নিচ্ছেন।”
মাগদুমা সুবহান নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, “প্রতি বছর কলেজ কর্তৃপক্ষ এই উৎসবের আয়োজন করে। উৎসবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিটা ডিপার্টমেন্ট অংশ গ্রহণ করে। এবার অন্যান্য বছরের চেয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেশি। একসাথে হরেক রকমের পিঠার স্বাদ নিতে পিঠা উৎসবে আসছেন বলে জানান তিনি।”
অনুষ্ঠানের সার্বিক বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম জানান, “তারুণ্য উৎসব ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষ্যে এই পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কোনোরকম বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুন্দর এবং সুশৃঙ্খলভাবে পিঠা উৎসব শেষ হয়েছে। শিক্ষার্থী উৎসবমুখর পরিবেশে এই উৎসব উদযাপন করে।”
বিএনএনিউজ/ নাবিদ