বিএনএ,ঢাকা:বর্তমানে কিশোর গ্যাং একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহা পরিদর্শক (আইজিপি)ড. বেনজীর আহমেদ।সন্তানের মাদকাসক্তির বিষয়ে পরিবারকেই সচেতন থাকতে হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার (১১ জানুয়ারি)রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে র্যাব সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে আইজিপি আরও বলেন,পরিবারের দায়িত্ব তার সন্তান কোথায় যায়,কী করে তার খোঁজ রাখা,নিয়ন্ত্রণ করা।এটি অভিভাবকের সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ব।বিষয়গুলোর প্রতি পরিবারকে সচেতন থাকতে হবে।এ দায়িত্ব অভিভাবকদের নিতে হবে।
তিনিবলেন,পত্রিকার পাতা খুললেই কিশোর গ্যাং।আর কিশোর গ্যাং মোকাবেলায় আইন বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।কিশোর অপরাধে দমনে নতুন আইনে যে অবকাঠামোর কথা উল্লেখ রয়েছে, তা গড়ে না ওঠায় আপরাধ দমনে অনেক ক্ষেত্রে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক শিশুদের হেফাজতে নিতে হলে নানা ধরনের নিয়ম রয়েছে।তাদের বিচার শিশু আদালতে করতে হবে।মোবাইল কোর্টে দেয়া যাবে না।দেশে কয়টি শিশু আদালত রয়েছে?প্রভিশন অফিসার কতজন আছেন,কোথায় তারা।অনেকেই জানেন না। শিশুদের ধরে আনলে সংশোধনাগারে রাখতে হবে।কিন্তু কয়টি সংশোধনাগার আছে?এগুলো নেই, তবে কি কিশোর গ্যাং ও শিশু অপরাধীদের গ্রেফতার করা যাবে না? শিশু আদালত নেই তাতে কি বিচার হবে না? হবে, সব কিছুই করতে হবে।তবে শিশুদের সচেতনতার জন্য পরিবাবকে দায়িত্ব নিতে হবে।
কিশোর গ্যাং কালচার প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে আইজিপি বলেন, এ কিশোর-কিশোরীরাই কিন্তু আগামি দিনের বাংলাদেশ।তথা ২০৪১ সালের ধনী দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। সেই শিশুরা ড্রাগ নিয়ে কিংবা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হয়ে ধ্বংস হয়ে যাক সেটি কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন,কলাবাগানের ঘটনাটি পূর্ণাঙ্গ ক্রাইম। হত্যা হয়েছে, ধর্ষণ হয়েছে।কিন্তু তারা দুই জনই কিশোর।কিন্তু দেশের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের বয়সী সবাই শিশু।মানবাধিকার ও এনজিওকর্মীরা হইচই করে অনেক আইন পরিবর্তন-সংশোধন করেছেন।আইজিপি হিসেবে আধুনিকায়নে কোন দ্বিমত নেই।তবে অত্যাধুনিক আইন করতে গিয়ে দেশের মধ্যে কোনো সমস্যা তৈরি হচ্ছে কিনা সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।শিক্ষার উদ্দেশ্য নিজেকে পরিশোধিত করা।ভালো-মন্দ চিনতে পারা।অসৎ সঙ্গ ত্যাগ করতে হবে।বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে দেশপ্রেমের চর্চা করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মুজিব বর্ষ উপলক্ষে অনেক কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা থাকলেও অতিমারিতে তা সম্ভব হয়নি।দুই হাজার শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সহায়তা দেয়া হবে। জেএসসির শিক্ষার্থীদের ৫ হাজার, এসএসসি’র শিক্ষার্থীদের ১০ হাজার ও অন্যান্য শ্রেণির অসচ্ছল শিশুদের ৩ হাজার টাকার শিক্ষা সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক(অপারেশন)কর্নেল তোফায়েল আহমেদ বলেন,শিক্ষার্থীদের একটি করে ব্যাগ দেয়া হচ্ছে,যার মধ্যে ১টি এলইডি লাইট, কলম, পেন্সিল ও বঙ্গবন্ধুর রোজ নামচাসহ বেশ কিছু বই রয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেএসসি, এসএসসি মিলিয়ে ২৫ শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১ জানুয়ারি থেকে র্যাব সেবা সপ্তাহ শুরু হয়েছে।বিভিন্ন মসজিদে দোয়া মাহফিল, রক্তদান কর্মসূচি, শীত বস্ত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে সপ্তাহ পালিত হয়েছে।
বিএনএনিউজ/আরকেসি