বিএনএ, ঢাকা: কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলকে হাইকোর্টের আরেক বেঞ্চে তলব করা হয়েছে। দুই আসামিকে শুনানি ছাড়াই জামিন দেওয়ার ঘটনায় আগামী ১৬ আগস্ট হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সারওয়ার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৭ জুলাই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একই দিনে জামিন দেন জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। এ ঘটনায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করায় তাকে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে আইন লঙ্ঘন করে জামিন দেওয়া ৯ আসামির জামিন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিকে ২০ জুলাই শুনানিতে হাইকোর্ট কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেন, আপনি একজন সিনিয়র জেলা জজ। দীর্ঘদিন বিচারকাজ করেছেন। আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? টেম্পারিং করে আপনি ভুল করেননি। জেনে-শুনে আপনি ক্রাইম করেছেন। বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
শুনানিতে জেলা জজের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত। একপর্যায়ে হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। একপর্যায়ে বলেন, ভুলে এটা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, আপনি ভুল করেননি। আপনি জেনে-বুঝে ক্রাইম করেছেন।
এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা ক্ষমা চাচ্ছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়।
এদিন আদালত থেকে বেরিয়ে সংবাদকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমি আল্লাহপাকের কাছে বিচার দিলাম।’
প্রসঙ্গত, ২১ জুন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুর হওয়া আসামিদের আইন ভঙ্গ করে আদেশে মিথ্যা তথ্য লিখে একই দিনে জামিন দেওয়ার ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজকে তলব করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিএনএ/এমএফ