বিএনএ চট্টগ্রাম: মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দিয়ে টাকা ও ইয়াবা আত্মসাতের ঘটনায় চট্টগ্রমের সাতকানিয়া থানার তিন পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ৮ আগস্ট তাদের গ্রেফতার করা হয়।তবে ঘটনাটি জানাজানি হয় ৯ আগস্ট রাতে।ঘটনাটি ঘটেছে সাতাকানিয়া থানা পুলিশের ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রে।
গ্রেফতার হওয়া তিন পুলিশ কনস্টেবল হলেন— সাতকানিয়া থানার ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের কনস্টেবল বিমল চাকমা (৪৬),শাহ মোহাম্মদ হাসান (২৭), ও আরাফাত নাজিম উদ্দীন (২৬)।
ঘটনাটি অস্বীকার না করলেও মন্তব্য করতে রাজি হননি সাতকানিয়া থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন।তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট ঢেমশাস্থ নাপিতের চর এলাকায় এক অভিযান চালিয়ে কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করেন তদন্ত কেন্দ্রের তিন কনস্টেবল বিমল চাকমা (৪৬),শাহ মোহাম্মদ হাসান ও আরাফাত নাজিম উদ্দীন।সে সময় জব্দ করা হয় ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির টাকা। জব্দ ইয়াবার পাশাপাশি প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা রেখে ২০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা সোর্সসহ তাদের সহযোগিদের ভাগও দেন তারা। এরপর সেই টাকা ও ইয়াবা এনে সরকারি পুলিশ ব্যারাকে রাখা হয়! আর ওসিসহ সিনিয়র কর্মকর্তাদের না জানিয়ে নিজেরাই মাদক ব্যবসায়ীদের ছেড়ে দেন ওই তিন কনস্টেবল। বিষয়টি টের পেয়ে সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নির্দেশে ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই জাহাঙ্গীর আলম তদন্তে নেমে এর সত্যতা পান। জেরার মুখে মাদকের টাকা আত্মসাৎ ও মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত তিন কনস্টেবল । তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় আসামি থেকে উদ্ধার করা ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির টাকা।
পরে ঢেমশা তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এস আই জাহাঙ্গীর আলম বাদি হয়ে তিন পুলিশ কনস্টেবল ও ৫ মাদক ব্যবসায়ীসহ মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এদের মধ্যে পুলিশ সোর্স সোলায়মান রয়েছেন। এরপর তিন পুলিশ কনস্টেবলকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে তিন পুলিশ কনস্টেবল জানিয়েছেন,গত ৬ আগস্ট তারা নাপিতের চর এলাকার বেলাল হোসেনের ভাড়া বাসা থেকে সোর্স সোলায়মানকে সঙ্গে নিয়ে বেলালকে ৩০ থেকে ৪০ পিস ইয়াবা ও নগদ এক লাখ টাকাসহ আটক করে তাদের হেফাজতে নেন।সোর্স সোলায়মানের বুদ্ধিতে রমজান আলী নামের এক মাদক ব্যবসায়ী থেকে ২শ পিস ইয়াবা কেনার কথা বলে তাকে ওই বাসাতে আসতে বলা হয়। যদিও সেখানে রমজানের ছেলে আরাফাত ২শ’ পিস ইয়াবা নিয়ে গেলে তাকেও আটক করেন তিন কনস্টেবল।
আটক বেলাল ও আরাফাতকে নিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে মৌলভীর দোকান এলাকায় যান।পরে অটোরিকশা চালক নেজামের মাধ্যমে ২শ পিস ইয়াবাসহ আটক কিশোর আরাফাতকে ছেড়ে দেয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন তিন পুলিশ কনস্টেবল।আর বেলালের বাসা থেকে উদ্ধার করা ১ লাখ টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা বেলালকে, ২০ হাজার টাকা সোর্স সোলায়মানকে দেয়া হয়। সেইসঙ্গে তাদের দুইজনকেও ছেড়ে দেন। আদায় করা বাকী ১লাখ ১০ হাজার টাকা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন বলে জানায় তারা।
বিএনএনিউজ/আরকেসি