বিএনএ ডেস্ক: লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠে আজ সকাল ৯টায় ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজে ইমামতি করেন শোলাকিয়া ঈদগাহের প্যানেল ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান।
ঈদের জামাতে নামাজ আদায় করেন শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ শামীম আলম, জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকীসহ প্রশাসনে বিভিন্নস্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
এর আগে ভোর থেকে দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা ঈদের নামাজ আদায় করতে শোলাকিয়ায় এসে জড়ো হতে থাকেন। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বেলা বাড়ার সাথে সাথে কিশোরগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে আগত মুসল্লিদের ঢল নামে ঐতিহ্যবাহী এই মাঠটিতে। ধারনা করা হচ্ছে, এবার সাড়ে চার লাখের অধিক মুসল্লি এক সঙ্গে ঈদের জামাত আদায় করেন শোলাকিয়ায়।
দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ‘শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল’ নামে ২টি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। একটি সকাল ৬টায় ভৈরব বাজার থেকে অপরটি একই সময়ে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। ছেড়ে আসা ট্রেন ২টি সকাল ৮টায় কিশোরগঞ্জ এসে পৌঁছায়। জামাত শেষ হলে ট্রেন দুটি পুনরায় সকাল সাড়ে ১০টায় ভৈরব বাজার ও ময়মনসিংহের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
পুলিশ, র্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদা পোশাকে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, বাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয় মাঠের আশপাশে।
ঈদগাহ ময়দানে মুসল্লিদের প্রবেশের জন্য মোট ২৩টি ফটকের মধ্যে পাঁচটি ফটকের প্রবেশপথ খোলা রাখা হয়। এসব প্রবেশপথে স্থাপিত আর্চওয়ে দিয়ে মুসল্লিরা শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করেন। প্রবেশ করার পূর্বে তিন দফা মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে মুসল্লিদের দেহ তল্লাশি করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত, ১৮২৮ সালে এই মাঠে প্রথম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। আর তাতে সোয়া লাখ মুসল্লি একত্রে ঈদের নামাজ আদায় করেন। সেই থেকে নাম হয় সোয়া লাখিয়া। তখন থেকেই ক্রমে ক্রমে সোয়া লাখিয়া নাম পরিবর্তিত হয়ে শোলাকিয়া নাম ধারন করে। এখন পর্যন্ত দেশের সর্ববৃহত ঈদগাহ মাঠ হিসেবে দেশ-বিদেশের মানুষের কাছে পরিচিতি পেয়েছে এ মাঠটি।
বিএনএনিউজ২৪/এমএইচ