বিএনএ, ময়মনসিংহ : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে রিফাত (৯) নামে এক দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থীকে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে গরুর মত বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (৪ জুন) দুপুরে রামগোপালপুর ইউনিয়নের মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছ গ্রাম) এ ঘটনা ঘটে। তবে, বিষয়টি স্থানীয়দের মাঝেই গোপন থাকে। পরে নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) শেয়ার দিলে জানাজানি হয়।
নির্যাতনের শিকার রিফাত রামগোপালপুর ইউনিয়নের মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছ গ্রাম) সুরুজ মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় রামগোপালপুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ালেখা করে।
অভিযুক্ত ফাতেমা বেগম ডৌহাখলা ইউনিয়নের তাতকুড়া গ্রামে মৃত বারেক ডাকাতের স্ত্রী ও ফাতেমার ছেলে হিমেল (২৫)।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার রিফাতের বাবা সুরুজ মিয়া বলেন, গতমাসের শেষের সপ্তাহে ফাতেমা বেগমের ভাইয়ের স্ত্রী রিফাতকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গাছ থেকে আম পেড়ে দিতে বলে। পরে রিফাত আম পাড়ার জন্য গাছে উঠলে ফাতেমা ও তার ছেলে হিমেল রিফাতকে পিটিয়ে পিটিয়ে গাছ থেকে নামায়। এরপর থেকে রিফাত সপ্তাহখানেক জ্বরে ভোগে।
তিনি আরও বলেন, জ্বর কিছুটা সেরে উঠলে গত শুক্রবার (৪ জুন) আমি বাড়িতে না থাকায় ফাতেমার ছেলে হিমেল রিফাতকে বাড়ি থেকে নিয়ে গাছের সাথে গরুর রশি দিয়ে বেধে মারধর করে। পরে আমি বাড়িতে ফিরে বিষয়টি জানতে পেরে রিফাতকে তাদের বাড়িতে গিয়ে রশি খুলে ছেলেকে বাড়িতে নিয়ে আসি। এরপর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিগনকে জানালে বিচারের আশ্বাস দেয়।
তিনি বলেন, রিফাতের মা ৫ বছর আগে সৌদি আরবে যায়। এরপর থেকে ছেলেমেয়েকে নিজেই মায়ের মত লালনপালন করেছি। আমি বাড়ির বাইরে কাজে গেলে স্থানীয়রা বিভিন্ন কাজ করায়। প্রতিবেশিরাও ছেলেকে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে মধুবন আদর্শ গ্রামের (গুচ্ছ গ্রাম) সভাপতি জামাল আহমেদ বলেন, আমি নির্যাতনের বিষয়টি মঙ্গলবার জানতে পেরেছি। গতকাল বিষয়টি নিয়ে বসার কথা ছিল। তবে, বসা হয়নি। তিনিও এই নির্যাতনের সঠিক বিচার দাবি করেন।
নির্যাতনের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ফাতেমা বেগম। তবে, তার ছেলে হিমেল নির্যাতনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার ঘর থেকে মোবাইল চুরির করার অপরাধে তাকে গাছের সাথে বেঁধে রেখেছিলাম। পরে রিফাতের বাবা আমার বাড়িতে এসে আমাকে পিটিয়ে ছেলেকে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে গৌরীপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। তবে, খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান মারুফ বলেন, বিষয়টি জানা নেই। বিষয়টি জেনে ব্যবস্থা নেবো।
বিএনএনিউজ/ হামিমুর রহমান/এইচ.এম।