বিএনএ, ঢাকা : বর্তমানে দেশে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা ৩৬ লাখ ৫০ হাজার হলেও মোটরসাইকেলের ড্রাইভিং লাইসেন্সের সংখ্যা ২৩ লাখ ৫০ হাজার। অথ্যাৎ আরও ১৩ লাখ মোটরসাইকেলের চালক রয়েছে, যাদের কোন লাইসেন্স নেই। এমনটাই বলছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।
সাম্প্রতিক সময়ে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়া প্রেক্ষিতে সোমবার বাংলাদেশের একাধিক সংবাদপত্রে সতর্ক থাকতে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিআরটিএ।
বাংলাদেশে মোটরসাইকেল চালকদের ফুল হাতা শার্ট, ফুল প্যান্ট, কেডস বা জুতাসহ মানসম্মত নিরাপত্তা সরঞ্জাম পরে মোটরসাইকেল চালাতে আহ্বান জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিআরটিএ বলছে, গঠনের দিক থেকে মোটরসাইকেলে একটি অনিরাপদ বাহন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, এই বছরের প্রথম চারমাসে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৮৩০ জন নিহত হয়েছে।
স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহারের কথা থাকলেও এখন ও মহাসড়ক ও দূরপাল্লায় মোটরসাইকেল যাতায়াত করতে দেখা যাচ্ছে।
এই বছর ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় মোটরসাইকেলের চাপে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক ফেরি ভরে যেতেও দেখা গেছে।
ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় শুধুমাত্র মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আটশোর বেশি মানুষ ঢাকার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট তাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছে, মোটরসাইকেলের কারণে সড়কে দুর্ঘটনার হার ক্রমেই বাড়ছে। এআরআইয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, বর্তমানে সড়কে যত হতাহতের ঘটনা ঘটছে, তার ৪০ শতাংশই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কারণে হচ্ছে। অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় হতাহতের প্রবণতা দিনে দিনে বাড়ছে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যান ২ হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই হার ৫০ শতাংশ বেশি।
বিআরটিএ বলছে, মোটরসাইকেল চলাচলে অনেক ক্ষেত্রে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত গতি, ওভারটেকিং, নিয়ম না জানা বা নিয়ম না মানা ইত্যাদি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পেছনে প্রধান কারণ।
বিআরটিএ বলছে, মোটরসাইকেল চলাচলে অনেক ক্ষেত্রে হেলমেটসহ নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি ব্যবহার না করা, অতিরিক্ত গতি, ওভারটেকিং, নিয়ম না জানা বা নিয়ম না মানা ইত্যাদি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার পেছনে প্রধান কারণ।
বিআরটিএ আরও যেসব পরামর্শ দিয়েছে
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা যাতে না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। এগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- অভিভাবকগণ সন্তানদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করুন।
- চালক ও আরোহী উভয়েই হেলমেট, চেস্ট গার্ড, নি গার্ড, এলবো গার্ড, গোড়ালি ঢাকা জুতা বা কেডস, আঙ্গুল ঢাক গ্লাভস, ফুল প্যান্ট-শার্ট ব্যবহার করুন।
- স্বল্প দূরত্বে মোটরসাইকেল ব্যবহার করুন, মহাসড়কে চালাবেন না।
- মোটরসাইকেলে একজনের বেশি আরোহী বহন করবেন না।
- অধিকাংশ ক্ষেত্রে মোড় বা বাঁক ঘোরার সময় মোটরসাইকেল কাত হয়ে পড়ে যায়। এ কারণে বাঁক অতিক্রম সময় স্বল্পগতিতে মোটরসাইকেল চালান।
- মোটরসাইকেল চালানোর সময় ইয়ার ফোন বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করবেন না।
- ট্রাফিক আইন, ট্রাফিক সাইন মেনে চলুন।
- হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র ব্যবহার করুন। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাবেন না।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।