বিএনএ, চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামের পটিয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে ১৩তম গ্রেডে(উন্নীত স্কেল) বেতন নির্ধারণের (ফিক্সেশন) নামে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সেখানকার প্রত্যেক শিক্ষকের কাছ থেকে ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষক জানিয়েছে, পটিয়া উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি পরিচয়দানকারী স্বপন কান্তি নাথ, সাধারণ সম্পাদক দিল মোহাম্মদ সানি ও অশোক চক্রবর্তী নামে এক শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসে ফিক্সেশনের খরচ বাবদ জনপ্রতি ৫শ’ টাকা করে আদায় করছেন। পটিয়া উপজেলায় ১৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৮৩৫ জন সহকারী শিক্ষককে ফিক্সেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। এসব শিক্ষকদের কাছ থেকে অন্তত ৪ লাখ ১৭ হাজার ৫শ’ টাকা থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি স্বপন কান্তি নাথ বলেন, লকডাউনের মধ্যে এক সপ্তাহধরে ১০/১২ জন শিক্ষক অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে ফিক্সেশনের জন্য তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যা ১০ মে’র মধ্যে জমা দিতে হবে। তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন। একই কথা বলেন সাধারণ সম্পাদক দিল মোহাম্মদ সানিও।
জানতে চাইলে পটিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু আহমেদ বলেন, কোনো শিক্ষকের কাছ থেকে টাকা না নেয়ার বিষয়ে কঠোর নিষেধ রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ কার্যক্রম আগামী ১০ মে’র মধ্যে জরুরিভিত্তিতে সম্পাদন করতে মাঠ পর্যায়ে কর্মপরিকল্পনা পাঠানো ও বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। গত ২৭ এপ্রিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মোহম্মদ মনসুরুল আলম এ আদেশ জারি করেন।
আদেশে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষকদের বেতন স্কেল গত বছর ৯ ফেব্রুয়ারি ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। এ সংক্রান্ত অপশন আইবাস প্লাস সফটওয়ারে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সংযুক্ত করে জেলা/উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসারের ডিডিও আইডি থেকে বেতন নির্ধারণের সুযোগ দেওয়া হয়।
সফটওয়ারে স্নাতক ও স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রির চেয়ে কম শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষকদের উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণের অপশন সংযোজনের জন্য ইতোমধ্যেই আইবাস প্লাস প্রকল্প দফতরকে চিটি দেয়া হয়। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে অধিকাংশ উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক সহকারী শিক্ষকদের বর্ণিত উন্নীত স্কেলে বেতন নির্ধারণ কার্যক্রম অদ্যাবধি সম্পন্ন হয়নি।
ওই কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সমাপনের জন্য মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর জন্য সময়বদ্ধ পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষকদের নাম বিদ্যালয়ের নাম, যোগদানের তারিখ, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বর্তমান বেতন স্কেল ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে প্রাপ্ত টাইম-স্কেল/উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সংখ্যা ও প্রাপ্তির তারিখ ছকে সংকলিত করে অন্যান্য প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র স্ব স্ব জেলা/উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসে প্রেরণপূর্বক প্রাপ্তি স্বীকার গ্রহণ করতে হবে।
১০ মে’র মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট থেকে প্রাপ্ত জেলাভিত্তিক বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালকের (অর্থ) নিকট পাঠাতে হবে।