বিএনএ, ঢাকা : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন পরিবহন যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের জাতীয় আয় ১৭ শতাংশ এবং ভারতের ৮ শতাংশ বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে এমন কথা বলা হয়েছে।
“সাফল্যের জন্য সংযোগ : পূর্বাঞ্চলীয় দক্ষিণ এশিয়ায় পরিবহন সংহতকরণের চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলন বিচারে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিইন) মোটর যান চুক্তির (এমভিএ) শক্তি বিশ্লেষণের পাশাপাশি এ ধরনের নিরবচ্ছিন্ন আঞ্চলিক সংযোগের ফাঁক-ফোঁকড় চিহ্নিত করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনে এমভিএ শক্তিশালী করতে দেশগুলো কি ধরনের আঞ্চলিক নীতি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে সে সম্পর্কে আলোকপাত করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সুবিধা বাড়াতে কি ধরনের অবকাঠামো বিনিয়োগ করতে পারে তার প্রস্তাবনা রাখা হয়।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের বাণিজ্য মাত্র ১০ শতাংশের মতো এবং ভারতের বাণিজ্যের মাত্র ১ শতাংশ। যদিও পূর্ব এশিয়া এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার অর্থনীতিতে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য যথাক্রমে ৫০ শতাংশ এবং মোট বাণিজ্যের ২২ শতাংশ।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের একটি কোম্পানির তুলনায় ব্রাজিল বা জার্মানিতে একটি কোম্পানির সঙ্গে বাণিজ্য করা ভারতের একটি কোম্পানির জন্য প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম ব্যয়বহুল। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উচ্চ ট্যারিফ, প্যারা-ট্যারিফ এবং নন-ট্যারিফ বাধা ও প্রধান বাণিজ্য বাধা হিসেবে কাজ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতে গড় শুল্ক বিশ্বের গড়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।
পূর্ববর্তী বিশ্লেষণ নির্দেশ করে যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ১৮২ শতাংশ বৃদ্ধি এবং বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ১২৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
এই বিশ্লেষণে দেখা গেছে দুই দেশের মধ্যে পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা রপ্তানি আরও বাড়াতে পারে, যার ফলে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানি ২৯৭ শতাংশ এবং বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানি ১৭২ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
ভৌগলিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, নেপাল, ভুটান এবং পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের জন্য একটি কৌশলগত প্রবেশদ্বার করে তুলেছে। বাংলাদেশ ও ভুটানের বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য, ট্রানজিট ও লজিস্টিক নেটওয়ার্কের উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউস হতে পারে।
গত এক দশকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু ধারণা করা হচ্ছে এটি তার বর্তমান সম্ভাবনার চেয়ে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার কম। আঞ্চলিক সড়ক ও জলপথ করিডোর, অগ্রাধিকার স্থল বন্দর এবং বাণিজ্যের জন্য ডিজিটাল ও স্বয়ক্রিয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন বিনিয়োগের মাধ্যমে আঞ্চলিক ও বাণিজ্য ট্রানজিট জোরদার করতে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে সহায়তা করছে।
দুর্বল পরিবহন সংযোগ ব্যবস্থা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্তকে ভারী করে তোলে। দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ-ভারতের বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত অতিক্রম করতে বেশ কিছু দিন সময় লাগে।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।