বিএনএ,চট্টগ্রাম: শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসব। ঢাকে পড়বে কাঠি আর উলুধ্বনিতে মুখরিত হবে আজ মণ্ডপ। হিন্দু সমপ্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও সকল মন্দিরে মন্দিরে প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। পাঁচদিনব্যাপী দুর্গোৎসবে আজ মহাষষ্ঠী। ষষ্ঠী তিথিতে বেলতলায় দেবীর অধিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার মহাসপ্তমী, শুক্রবার মহাঅষ্টমী আর শনিবার হবে মহানবমীর পূজা। পঞ্জিকা মতে এবার নবমী পূজার পরই দশমীর বিহিত পূজা হবে। তবে বিজয়া দশমী উদযাপন হবে রোববার।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে গত ২ অক্টোবর শুরু হয়েছে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। গতকাল পঞ্চমীর দিনে মন্ডপে মন্ডপে ছিল দেবীর বরণ ও চন্ডীপাঠ। মহাষষ্ঠী তিথিতে দেবী দুর্গার বোধন–আমন্ত্রণ এবং অধিবাস। সায়ংকালে বিহিত পূজার মাধ্যমে মন্দিরে মন্দিরে অধিষ্ঠিত হবেন মা দুর্গা। গতকাল প্রতিমা তৈরির কাজ শেষে, মন্দিরে মন্দিরে চলছিল শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হবে দোলায় বা পালকিতে। পালকি বা দোলায় দেবীর আগমন বা গমন হলে এর ফলাফল হয় ‘মড়ক’, যা শুভ ইঙ্গিত নয়। শাস্ত্রমতে, খাদ্যশস্যে পোকা–মাকড়ের আক্রমণ হবে। রোগব্যাধি বাড়বে। দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল হয় ‘ছত্রভঙ্গ’। এটা সামাজিক ও রাজনৈতিক এলোমেলো অবস্থাকে ইঙ্গিত করে।
চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য জানান, এবার চট্টগ্রাম মহানগরীর ১৬ থানায় ১৯২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হচ্ছে। পাশাপাশি চট্টগ্রাম জেলার ১৫ উপজেলায়ও উৎসাহ উদ্দীপনায় দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে। নগরীর প্রধান পূজা মন্ডপ জেএমসেন হলসহ প্রতিটি পূজা মন্ডপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীও রয়েছে বলে জানান লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য। তিনি প্রতিটি পূজা মন্ডপকে নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলার আহবান জানান।
সারাদেশের মতো চট্টগ্রামেও প্রতিটি পূজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় রয়েছেন পুলিশ, আনসার, র্যাবসহ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সারাদেশে সেনা সদস্যরা কাজ করছেন। ইতোমধ্যে প্রতিটি পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেছেন সেনা সদস্যরা। নির্ভয়ে পূজা উদযাপনের জন্য পূজা কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলেছেন।
চট্টগ্রামে জেএমসেন হল মেলাঙ্গনে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় ভাবে দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে।
এ ছাড়া রামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, হাজারী গলি পূজা মন্ডপ, চট্টেশ্বরী কালী মন্দির, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কুসুম কুমারী স্কুল পূজা মন্ডপ, আগ্রবাদ একতা সংঘ পূজা মন্ডপ, দক্ষিণ নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, উত্তর নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, প্রবর্তক সংঘ বাংলাদেশ দুর্গা পূজা মন্ডপ, জামালখাল চেরাগী পাহাড় সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, দেওয়ানজী পুকুর পাড় সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, রাজাপুকুর পাড় সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, আসকার দিঘির পাড় লোকনাথ মন্দির সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, সদরঘাট কালী মন্দির, পাথরঘাটা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা মন্ডপ, পাথরঘাটা গঙ্গা বাড়ি সার্বজনীন দুর্গা পূজা মন্ডপ, গোসাইলডাঙ্গা সার্বজনীন দুর্গা মন্দির পূজা মন্ডপসহ বিভিন্ন মন্দির ও মন্ডপে দুর্গোৎসবের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিএনএনিউজ / আরএস