17 C
আবহাওয়া
৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২০, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ব্যাংকে ব্যাংকে পাল্টা নিয়ন্ত্রণ

ব্যাংকে ব্যাংকে পাল্টা নিয়ন্ত্রণ

bank

বিএনএ ডেস্ক: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কিছু ব্যাংকে পাল্টা নিয়ন্ত্রণের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) এসআইবিএলে গিয়ে আগের পরিচালকরা নিয়ন্ত্রণ নেন। ইউসিবির বর্তমান পর্ষদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে শেয়ারহোল্ডারদের একটি অংশ। কিছুদিন আগে মালিকানা বদল হওয়া ন্যাশনাল ব্যাংকে আবার মালিকানা বদলের গুঞ্জন উঠেছে। এর আগেই ইসলামী ব্যাংকে এস আলম গ্রুপের কাউকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং পরিচালকরা পালিয়ে রয়েছেন। সব মিলিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ ব্যাংক ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ বন্ধ রেখেছে বলে জানা গেছে।

বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৭ সালে নিয়ন্ত্রণ হারানো বেসরকারি খাতের এসআইবিএলে গতকাল দলবল নিয়ে যান সাবেক চেয়ারম্যান মেজর (অব.) ডা. রেজাউল হকসহ কয়েকজন পরিচালক। তারা দুই ডিএমডিকে পদত্যাগে বাধ্য করেন। আর এমডি উপস্থিত ছিলেন না। ২০১৭ সালে ইউসিবির পর্ষদ থেকে পারটেক্স গ্রুপের সবাইকে সরিয়ে কর্তৃত্ব নেয় সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পরিবার। তাদের আর ব্যাংকে ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শেয়ারহোল্ডার ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। এ ছাড়া ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। তাদের নিয়োগ দেওয়া পরিচালক বা কর্মকর্তাদের আর ঢুকতে না দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অবশ্য এস আলম গ্রুপের নিয়োগ দেওয়া বড় পর্যায়ের কেউ গত মঙ্গলবার থেকে ব্যাংকটিতে আসছেন না। ২০১৭ সালের পর নিয়োগ পাওয়া কয়েকজন কর্মচারী গতকাল ব্যাংকে এলে তাদের বের করে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ইউসিবির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা পারটেক্স গ্রুপের এম এ হাসেম পরিবার মালিকানা ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছে। এ জন্য বুধবার কয়েকজন শেয়ারহোল্ডারের নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিএসইসি চেয়ারম্যান বরাবর একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে ব্যাংকের আর্থিক খারাপ অবস্থার চিত্র তুলে ধরে অবিলম্বে মালিকানা বদল চাওয়া হয়। অন্যদিকে গতকাল শেয়ারহোল্ডারদের ব্যানারে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তাঁর পরিবারের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ব্যানারে লেখা ছিল– ‘স্বৈরাচার সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী দুর্নীতিবাজ অবৈধভাবে লন্ডনে ইউসিবি ব্যাংকের ১২ হাজার কোটি টাকা পাচারকারী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তাঁর পরিবার থেকে ইউসিবি ব্যাংকের মুক্তি চাই। লুটেরা প্রতিহত কর। ইউসিবি ব্যাংক রক্ষা কর।’

২০১৭ সালে শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত এসআইবিএলের মালিকানা নেয় এস আলম গ্রুপ। বাংলাদেশ ব্যাংক ও একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে সব পরিচালককে তুলে নিয়ে এই ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। গতকাল ওই সময়কার চেয়ারম্যান মেজর (অব.) ডা. রেজাউল হক, তখনকার অন্যতম পরিচালক আনিসুল হকসহ কয়েকজন পরিচালক ব্যাংকে যান। তারা ব্যাংকে গিয়ে বোর্ডরুম ও চেয়ারম্যানের জন্য নির্ধারিত কক্ষে গিয়ে বসে পড়েন। এ সময় অনেক কর্মকর্তা সেখানে জড়ো হয়ে ব্যাংকটি এস আলমমুক্ত করার দাবি তোলেন। উপস্থিত সবার চাপে পদত্যাগে বাধ্য হন এস আলম গ্রুপের আস্থাভাজন ব্যাংকের ডিএমডি আব্দুল হান্নান খান ও মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। অবশ্য পরিচালনা পর্ষদের সবাই পলাতক থাকায় তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এদিকে গত সোমবার থেকে আর অফিস করছেন না বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি কোথায় আছেন তাও জানেন না কর্মকর্তারা। বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা গত বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউ প্রধান ও নীতি উপদেষ্টাকে বের করে দেন। তারা কেউ আজ আর অফিসে আসেননি। এতে করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি গ্রহণেও অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। যদিও নির্বাহী পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে দৈনন্দিন কাজ অব্যাহত রেখেছেন। কোনো ধরনের সংকট যেন তৈরি না হয়, সে জন্য তারা গতকাল বৈঠক করেন। ব্যাংক খাতের এ পরিস্থিতিতে বেশির ভাগ ব্যাংকের ঋণ অনুমোদন ও বিতরণ বন্ধ রয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ