বিএনএ, জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল একাংশের কমিটির মেয়াদ গত ২৩ জুলাই শেষ হয়েছে । মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর পার হলেও এখনো নির্বাচন নিয়ে ভাবছেন না এই কমিটি।
জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৩ জুলাই অনুজীব বিজ্ঞানের শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়াকে সভাপতি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামালকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে আরো এক বছর পার করলেও নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছেন না জবি নীল দল। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম। ফলে অভিযোগ প্রকাশ করেছেন নীল দলের সাবেক শিক্ষক নেতা ও আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা।
নীল দলের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামছুল কবির অভিযোগ করে বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর জুন মাসেই নির্বাচন দিতে হবে। সেখানে এখন একবছর পার হয়ে গেছে। ক্যাম্পাস খোলার অজুহাতে বর্তমান কমিটি এখনো নির্বাচন দিচ্ছে না। গত একবছরে তারা সশরীরে দুইটি সাধারণ সভা করেছে, ভিসি স্যারের সাথে সভা করেছে তাহলে নির্বাচন দিতে সমস্যা কোথায়? ভার্চুয়ালিও তো নির্বাচন করার সুযোগ রয়েছে। ভার্চুয়ালি নির্বাচন হোক।’
নীল দলের ২০১৪-১৫ সেশনের সাধারণ সম্পাদক মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ জানান, ‘নীল দলের এখন অবস্থা ভালো না। তারা এখন দুইটি দলে বিভক্ত। একটা সময় নীল দল খুব স্ট্রং ছিল। এখন তারা অর্গানাইজড না। আমি চাই নির্বাচনের মাধ্যমে যোগ্য একটি নেতৃত্ব আসুক, নীল দলের আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনুক।’
নতুন কমিটির বিষয়ে নীল দলের বর্তমান কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. জাকারিয়া মিয়াকে গত দুইদিন থেকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে নীল দলের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আগামী কমিটি নিয়ে আমাদের সভা হয়েছে। আমরা শীঘ্রই কমিটি দিব। কবে নাগাদ নির্বাচন হবে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ ক্যাম্পাস খোলার প্রথম দিন নির্বাচন হবে।’
জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল একটি বৃহৎ দল হিসেবেই ক্যাম্পাসে পরিচিত ছিল। এরপর গঠনতন্ত্রকে অমান্য করে সাবেক উপাচার্যপন্থি কিছু শিক্ষক নীল দল থেকে বেরিয়ে বিভক্ত হয়ে ২০১৭ সালে আরেকটি নীলদল গঠন করে। এতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরুণ কুমার গোস্মামীকে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল্লাহ-আল-মাসুদ মনোনীত করা হয়।
নীল দল এই অংশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.অরুন কুমার গোস্বামী বলেন, ‘ আমাদের কোন গঠনতন্ত্র নেই, আমরা আমাদের মধ্যে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর মধ্য দিয়েই চলি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এই কমিটি দিয়েই কার্যক্রম চলবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে নির্বাচনের কথা ভাববো।’
যদিও সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ক্যাম্পাসে শুধু ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে, তবে ক্যাম্পাসে বিভাগীয় ও দাপ্তরিক সব কাজ সচল থাকবে। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব দপ্তর ও বিভাগীয় কাজ অব্যাহত আছে। এ ছাড়া করোনা উপেক্ষা করে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন জাতীয় উৎসবেও অংশ নিচ্ছেন নীল দল সমিতি ও এর সদস্যরা।
বিএনএনিউজ/সাহিদুল,মনির