বিএনএ, ঢাকা: রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল কাউসার আলীর ছোড়া গুলিতে নিহত হন কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম। এ ঘটনায় নিহত মনিরুলের ভাই বাদি হয়ে গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে কনস্টেবল কাউসারকে আসামি করা হয়েছে।
শনিবার রাত ১২টার দিকে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই পুলিশ কনস্টেবল ফিলিস্তিন দূতাবাসের বাইরে অবস্থিত পুলিশ বক্সে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
নিহত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোণা। তিনি ২০১৮ সালে পুলিশে যোগ দেন।
সহকর্মীকে হত্যার ঘটনায় আটক পুলিশ সদস্য কাউসারকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরইমধ্যে তাকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম গণমাধ্যমকে জানান, গতরাতের ঘটনায় নিহতের ভাই মাহাবুবুল আলম বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। সে মামলায় কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। তবে আদালত এখনও কোনো নির্দেশ দেননি। হত্যার ঘটনায় তদন্ত চলছে জিজ্ঞাসাবাদে প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ডিউটিতে প্রায়ই দেরিতে আসায় কাউসারকে কারণ দর্শানোর কাগজ দেখাচ্ছিলেন মনিরুল। সে সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন কাউসার। তাতে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পরে বলে ধারণা পুলিশের। ডিপ্লোমেটিক জোনে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ সদস্যদের হাতে ব্রাজিল থেকে আমদানি করা এসএমটি সাবমেশিনগান দেয়া হয়। এ অস্ত্র দিয়ে মিনিটে ৬০০ রাউন্ড গুলি করা যায়। কাউসার এই অস্ত্র দিয়ে উন্মাদের মতো ৩৮ রাউন্ড গুলি ছুড়েছেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জানান, হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে আত্মসমর্পণ করার আহ্বান জানালে রাত সোয়া একটার দিকে তিনি আত্মসমর্পণ করেন। তাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে এবং নিহত পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন আহত হয়েছেন। তিন রাউন্ড গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সাজ্জাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আহত সাজ্জাদ পুলিশকে জানিয়েছেন, ওই সড়ক দিয়ে সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি দেখেন এক পুলিশ সদস্য উপুড় হয়ে পড়ে আছেন। কনস্টেবল কাউসারের কাছে এর কারণ জানতে এগিয়ে গেলে কাউসার তাকে লক্ষ্য করেও গুলি ছোড়েন। তখন তিনিও গুলিবিদ্ধ হন।
ঘটনার পর রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ পুলিশ সদর দফতর ও ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রাত ২টা ৩০ মিনিটে পুলিশের মহাপরিদর্শক সাংবাদিকদের বলেন, কনস্টেবল কাউসার আহমেদ উন্মাদের মতো এলোপাতাড়ি গুলি ছুঁড়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমরা কিছু গুলির খোসা ও ২০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছি। আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যকে নিরস্ত্র করে গুলশান থানায় নেয়া হয়েছে। আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। মনিরুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বিএনএনিউজ/ রেহানা/ বিএম/ হাসনা