বিএনএ ডেস্ক : আমাদের দেশে বর্তমানে যে প্রচলিত নারিকেলের জাত রয়েছে তার ফলন খুবই কম। গাছ প্রতি বছরে সর্বোচ্চ ৫০টি নারিকেল পাওয়া যায় এবং ফলন পেতে ৬/৭ বছর সময় লাগে।ভিয়েতনামি নারিকেলে ২/৩ বছরেই ফলন পাওয়া যাবে। ফলনের পরিমাণ আমাদের দেশি জাতের চেয়ে প্রায় ৩-৫ গুণ বেশি। উপযুক্ত পরিচর্যা করলে প্রতি বছর প্রায় ২৫০টি নারিকেল পাওয়া সম্ভব।
উন্নত এ জাতের সম্প্রসারণ করা গেলে আমাদের দেশের নারিকেলের উৎপাদন প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে। ফলন বেশি, লাভও বেশি।
নারিকেল গাছ সাধারণত ২ প্রকার। লম্বা ও খাটো। বাংলাদেশে প্রায় সব গাছই লম্বা ধরনের। নতুন করে সরকার খাটো জাতের নারিকেল গাছের আবাদ শুরু করেছে। ভিয়েতনাম থেকে বর্তমানে যে ২টি জাত আনা হয়েছে। ডুয়া জিয়াম জাং এবং ডুয়া জিয়াম লাক (সিয়াম গ্রীণ এবং সিয়াম ব্লু জাত)। প্রতিটি জাতের গাছে ২০০-২৫০টি নারিকেল হয়। ৩ বছরেই ফল দেয়।
চাষাবাদ পদ্ধতি
আদর্শ পিটের মাপ হবে ৩ ফুট X ৩ ফুট X ৩ ফুট। গর্ত তৈরির পর প্রতি গর্তে ১৫-২০ কেজি পচা গোবর অথবা আবর্জনা পচা সার দিতে হবে। মাটিতে অবস্থানরত পোকার আক্রমণ থেকে চারাকে রক্ষার জন্য প্রতি গর্তে ৫০ গ্রাম পরিমান বাসুডিন প্রয়োগ করতে হবে। সকল কিছু মিশিয়ে গর্ত ভরাট করার পর পানি দিয়ে গর্তটাকে ভিজিয়ে দিতে হবে। যাতে সকল সার ও অন্যান্য উপাদান মাটির সাথে মিশে যায়। যার জন্য চারা গাছের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে। গর্তের মাঝখানে নারিকেল চারা এমনভাবে রোপণ করতে হবে যাতে নারিকেলের খোসা সংলগ্ন গোড়ার অংশ মাটির উপরে থাকে। চারা রোপনের সময় মাটির নীচের দিকে ভালোভাবে চাপা দিতে হবে। যাতে চারাটি শক্তভাবে দাড়িয়ে থাকতে পারে। এরপর সেচ দিতে হবে। নারিকেল ফসলের জন্য সেচ এবং নিষ্কাশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুষ্ক মৌসুমে প্রতিদিন সেচ এবং বর্ষার সময় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। নারিকেল গাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। গাছের গোড়ায় পানি জমলে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হয়।
২০ দিন পর আগাছা পরিস্কার করতে হবে। ছত্রাক জাতীয় রোগ থেকে মুক্তির জন্য ১৫ দিন পর পর ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। চারা রোপনের প্রথম মাস থেকে ২৪তম মাস পর্যন্ত প্রতি মাসে নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী এই আন্ত:পরিচর্যা চালিয়ে যেতে হবে। গাছের ২৪ মাস বয়সের পর প্রতি গাছে বছরে ৫.৫ কেজি ইউরিয়া, ১০ কেজি টিএসপি, ৭ কেজি এমওপি এবং ৫০ কেজি গোবর সার প্রতি বছর ৪ ভাগের ৩ মাস পর পর গাছের গোড়ায় প্রয়োগ করতে হবে।
বিএনএ/ওজি