বিএনএ, বিশ্বডেস্ক: গতি কমিয়ে শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় অশনি। যার ফলে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ অশনির গতি উঠছে ১১৭ কিলোমিটারে। গত ৬ ঘণ্টায় উপকূলের দিকে ধেয়ে আসার গতি কমিয়ে স্থির অবস্থায় থেকে আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তি সঞ্চয় করছে অশনি।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সর্বশেষ বুলেটিন-৬ এ তথ্য জানানো হয়। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সকল নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম কেন হলো অশনি? কে-ইবা দিলো এই নাম, জানার আগ্রহ সবার মনেই। চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে অশনি নাম পেলো ঘূর্ণিঝড়।
বিশ্বজুড়ে ঘূর্ণিঝড় নামকরণে ওয়ার্ল্ড মিটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের (ডব্লিউএমও) একটি তালিকা রয়েছে। এতে চক্রাকারে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর দেয়া নাম অনুযায়ী নামকরণ হয় ঘূর্ণিঝড়গুলোর।
এই তালিকা অনুযায়ী এবারের ঘূর্ণিঝড়টির নাম দিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ‘অশনি’ শব্দের অর্থ ক্রোধ। ডব্লিউএমওর ওয়েবসাইটে নামটির উচ্চারণও দেয়া আছে।
ডব্লিউএমও তালিকা অনুসারে এ অঞ্চলে আসানির পর যে ঘূর্ণিঝড়টি আসবে, তার নাম দিয়েছে থাইল্যান্ড। সেই নামটি হবে ‘সিত্রাং’। ডব্লিউএমওর ৪৫তম বার্ষিক সভা হয় ২০১৮ সালে। ওমানের রাজধানী মাসকাটে অনুষ্ঠিত সেই সভায় দীর্ঘ মেয়াদে যেসব ঘূর্ণিঝড় আসবে সেগুলোর নাম চূড়ান্ত করা হয়।
উত্তর ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর ১৬৯টি ঘূর্ণিঝড়ের নাম এরই মধ্যে নির্ধারিত করা আছে। এই অঞ্চলের ১৩টি দেশের ১৩টি করে দেয়া নামের ভিত্তিতে ১৩টি চক্রে আছে মোট ১৬৯টি ঝড়।
১৯৫৩ সাল থেকে আটলান্টিক নিরক্ষীয় অঞ্চলে ঝড়ের নামকরণ করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হ্যারিকেন সেন্টারে তৈরি তালিকা অনুযায়ী। এমনটাই জানিয়েছে ডব্লিউএমও। বর্তমানে বিশ্বে ছ’টি আঞ্চলিক বিশেষ আবহাওয়া কেন্দ্র (আরএসএমসি) এবং পাঁচটি আঞ্চলিক ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র রয়েছে। এখান থেকেই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ এবং সতর্কবার্তা ছড়িয়ে পড়ে।
বঙ্গোপসাগর এবং আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালের সেপ্টেম্বরে। ঘূর্ণিঝড়ের নামের এই তালিকাটি লিঙ্গ, রাজনীতি, ধর্মীয় বিশ্বাস এবং সংস্কৃতির নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বর্ণানুক্রমিকভাবে সাজানো দেশগুলোর দেওয়া নাম অনুসারে তৈরি করা হয়েছে। ঝড়ের নাম থাকলেও কোনও পদবি থাকে না। দক্ষিণ চিন সাগর থেকে থাইল্যান্ড অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে যে ঝড় আসে, তার নাম বদলানো হয় না।
বাংলাদেশ থেকে যে নামগুলো দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে ‘অগনি’, ‘হেলেন’ এবং ‘ফানি’। অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত থেকে দিয়েছে ‘গতি’, ‘ মেঘ’, ‘আকাশ’। পাকিস্তান দিয়েছে ‘লায়লা’, ‘নার্গিস’ ও ‘বুলবুল’। ‘অশনি’র পর যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হবে, তার নাম হবে ‘সিত্রং’। এই নামটি থাইল্যান্ড দিয়েছে। ভবিষ্যতে ঘূর্ণিঝড়ের যে নামগুলো ব্যবহার করা হবে, তার মধ্যে রয়েছে ভারতের ভবিষ্যতে যে নামগুলি ব্যবহার করা হবে তার মধ্যে রয়েছে ভারতের ‘ঘূর্ণি’, ‘প্রবাহ’, ‘ঝড়’ এবং ‘মুরাসু’। বাংলাদেশের ‘বিপর্যয়’, সৌদি আরবের ‘আসিফ’, ইয়েমেনের ‘দিকসাম’, ইরানের ‘তুফান’, এবং শ্রীলঙ্কার ‘শক্তি’।
বিএনএ/এমএফ