বিএনএ, চট্টগ্রাম : ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার অংশগ্রহণে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলা। শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। এ মেলা চলবে ২ মার্চ পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি শিরীষতলায় ৪৩ হাজার বর্গফুট জায়গায় আয়োজিত মেলায় ১৫৫টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলায় প্রবেশ করা যাবে। বই মেলায় বিকেল থেকে ভিড় করছেন নানা বয়সী মানুষেরা। তবে তখনও কিছু স্টলে নির্মাণকাজ চলছিল।
পাঠকদের বই মেলায় আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র বলেন, পাঠকরা মেলায় আসুন। আপনাদের নতুন প্রজন্মকেও নিয়ে আসুন। মাদকমুক্ত, সঙ্কীর্ণতামুক্ত সমাজ গড়তে শিশুদের হাতে বই তুলে দিন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, বইমেলার সাথে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য জড়িত। বই মেলাকে সফল করতে মেলার নিরাপত্তার জন্য আমরা সচেষ্ট থাকব।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, বই মেলার উপযোগী কোন খাস জমি পাওয়া গেলে সেখানে বই মেলাসহ বিভিন্ন আয়োজনের জন্য স্থায়ীভাবে ইনশাল্লাহ বরাদ্দ পাওয়া যাবে।
চসিকের আয়োজনে চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজ, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্য-সাংস্কৃতিক সংগঠনের সহযোগিতায় এ বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৪৩ হাজার বর্গফুটে ঢাকা ও চট্টগ্রামের ৯২টি প্রকাশনা সংস্থার ১৫৫টি স্টল রয়েছে মেলায়। এর মধ্যে ডাবল স্টল ৭৮টি, সিঙ্গেল ৭৭টি। এবারের বইমেলার বাজেট ৫০ লাখ টাকা। এবারও জাতীয় জীবনে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য একুশে সম্মাননা স্মারক পদক ও সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হবে।
বাতিঘর, প্রথমা, অন্যধারা, সাহিত্য বিচিত্রা, মূর্ধন্য, লাবণ্য, তৃতীয় চোখ, আবির প্রকাশন, গলুই, বলাকা, খড়িমাটি, শব্দশিল্প, কাকলী, কালধারা, বিদ্যানন্দ, কথাপ্রকাশ, নন্দন, শৈলী প্রকাশন, বলাকা, ইতিহাসের খসড়া, রাদিয়া, চন্দ্রবিন্দু, গল্পকার, প্রজ্ঞালোক, নালন্দা, শিশুপ্রকাশ, প্রতীক, আদিগন্ত, ভোরের কাগজ প্রকাশন, শিখা, সত্যয়ন, নন্দন, শালিক, কথাবিচিত্রা, কথা প্রকাশ, আফসার ব্রাদার্স, বাবুই, গাজী, কিডস পাবলিকেশন, হাওলাদার, ফুলঝুড়ি, নাগরী, ফুলকি, জ্ঞানকোষ, কিংবদন্তি, প্রথমা, দ্বিমত, সালফি, ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, মাইজভা-ারী প্রকাশন, আলোকধারা বুকস, লাল সবুজসহ বিভিন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে।
এব মধ্যে বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি বিদ্যানন্দের স্টলটিকে ঘিরে পাঠক দর্শকদের কৌতূহল দেখা গেছে। সেখানে মেয়েদের ও ছেলেদের বই পড়ার স্থান রাখা হয়েছে।
মেলায় ঢুকতে হাতের বামে সড়কের একপাশে রয়েছে চসিকের তত্ত্বাবধানে, নগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহযোগিতায় ‘ইতিহাস কথা কয়’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। মেলায় শিশু কর্নারে বিভিন্ন রাইড, মুখরোচক খাবারের স্টল, মৃৎশিল্প সামগ্রীর স্টল ছিল জমজমাট।
অনুষ্ঠানে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহাম্মদ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, চসিকের শিক্ষা স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জুসহ কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদ, মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেমসহ বিভাগ ও শাখা প্রধানবৃন্দ এবং চসিকের উপ-সচিব আশেকে রসুল টিপু, সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী প্রয়াস উপস্থিত ছিলেন।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।