বিশ্ব ডেস্ক: দুর্নীতির অভিযোগে নিজের চিফ অব স্টাফ গ্রেফতার হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর পদত্যাগ করেছেন পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিও কস্তা। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) তিনি পদত্যাগ করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, একটি লিথিয়াম উত্তোলন ও হাইড্রোজেন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী আন্তোনিওর চিফ অব স্টাফকে গ্রেফতার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রী কস্তার বিরুদ্ধেও তদন্ত শুরু করার ঘোষণা দেয় প্রসিকিউটর অফিস।
এর পর প্রেসিডেন্ট মার্সেলো রেবেলো দে সোসার সঙ্গে দেখা করে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন আন্তোনিও কস্তা। তবে পদত্যাগ করার আগে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৬২ বছর বয়সি কস্তা।
প্রধানমন্ত্রী কস্তা ২০১৫ সাল থেকে ক্ষমতায় ছিলেন। টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেছেন, কোনো ফৌজদারি অপরাধের সঙ্গে তাঁর জড়িয়ে যাবে—এটা দেখে তিনি ‘বিস্মিত’। ‘কোনো অবৈধ কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া আমার বিবেক বিরুদ্ধ’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, প্রধানমন্ত্রী পদের মর্যাদা সততা, ভালো আচরণ এবং কোনো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ তৈরির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অতএব, এই পরিস্থিতিতে আমি পদত্যাগ করেছি।’
প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির এক বিচারক পুলিশকে ৩৭টি স্থানে তল্লাশি করার অনুমতি দিয়েছেন। এসব স্থানের মধ্যে রয়েছে—প্রধানমন্ত্রী কস্তার চিফ অব স্টাফের কার্যালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, পরিকাঠামো মন্ত্রণালয়, সাইনস শহরের সিটি কাউন্সিলের অফিস এবং বেশ কিছু ব্যক্তিগত বাড়ি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, তদন্তটি উত্তর পর্তুগালে লিথিয়াম অনুসন্ধান, দেশের দক্ষিণ উপকূলে সাইনসের একটি হাইড্রোজেন উৎপাদন প্ল্যান্ট এবং ডেটা সেন্টার স্থাপনে অবৈধ সুবিধা আদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কস্তার নাম উল্লেখ করা না হলেও বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রধানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমে তাঁর নাম উল্লেখ করা হয়েছে, ভিতর এসকারিয়া। সেই সঙ্গে সাইনসের মেয়র এবং আরও তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। পর্তুগালের অবকাঠামো মন্ত্রী এবং পর্তুগালের পরিবেশ সংস্থার প্রধানকেও বিবৃতিতে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসিকিউটরের কার্যালয় বলেছে, তদন্তে দেখা গেছে, সন্দেহভাজনরা লিথিয়াম অনুসন্ধানের জন্য প্রক্রিয়াগুলো সহজ করতে প্রধানমন্ত্রী কস্তার নাম এবং কর্তৃত্বকে ব্যবহার করেছেন। বিনিময়ে তারা সুবিধা নিয়েছেন।
বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ