বিএনএ ডেস্ক: রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ কম্পন অনুভূত হয়। রিক্টার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫.৬। এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমার।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১১৪ কিলোমিটার গভীরে এ কম্পনের সৃষ্টি হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ দপ্তরের (ইউএসজিএস) ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনেকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এ ভূমিকম্প বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে বেশি অনুভূত হয়েছে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মমিনুল ইসলাম জানান, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের অবস্থান ঢাকা থেকে ৪৭৭ কিলোমিটার পূর্ব-দক্ষিণ পূর্ব দিকে।
এ দিকে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশেও বৃহস্পতিবার ভোরে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ২০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
পাকিস্তানের সরকারের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পের সময় অনেকেই ঘুমের মধ্যে ছিলেন। এ সময় বাড়িঘর ভেঙে পড়ার কারণে হতাহতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে।
ভূমিকম্পে কমপক্ষে আরও ৩ শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে অনেককেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ধ্বংসস্তূপ থেকে হতাহতদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। কর্মকর্তারা বলছেন, ভূমিকম্পের কারণে বেলুচিস্তানের হারনাই জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।জাপানের রাজধানী টোকিও তে আজ ৬. ১ মাত্রার ভুমিকম্প হয়।
বিশ্বে ৮ দিনে ১১ দফা ভূমিকম্প
২ অক্টোবর রাত ১২টা ২৯ মিনিটে ফুজিতে ৭.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়
২ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে ব্রাজিলে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৩ অক্টোবর দুপুর ১টা ২২ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রে ৩.৩ মাত্রাার ভুমিকম্প অনুভূত হয়
৩ অক্টোবর দুপুর ২টা ৪৩ মিনিটে সিলিলি (পূর্ব আফ্রিকা) ৫,৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৪ অক্টোবর সকাল ৯টা ৫৪ মিনিটে দক্ষিণ জর্জিয়ায় ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনু্ভূত হয়।
৫ অক্টোবর রাত ১১টা ৫৬ মিনিটে জাপানে ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৬ অক্টোবর রাত ১২টা ৩৬ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রে ৪.৬ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৭ অক্টোবর ভোর ৪টা ০১ মিনিটে পাকিস্তানে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৭ অক্টোবর রাত ৭টা ৪১ মিনিটে জাপানে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৮ অক্টোবর রাত ১২টা ২৯ মিনিটে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে ৫.৮ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
৮ অক্টোবর রাত ২টা ১৩ মিনিটে নিউজিল্যান্ডে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
বাংলাদেশে স্বরণীয় যত ভূমিকম্প
বাংলাদেশে ১৯০০ সালের পরবর্তী সময়ে প্রায় ১০০টির বেশি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। তন্মধ্যে প্রায় ৬৫টির বেশি ভূমিকম্প ১৯৬০ সালের পরবর্তী সময়ে রেকর্ড করা হয়। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ফ্রিকোয়েন্সি লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডেটা অনুযায়ী, সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প আঘাত হানে। মূলত উৎপত্তিস্থল থেকে সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ভূমিকম্প প্রবেশ করে। বাংলাদেশে ২০২০ সালে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুটি ভূমিকম্প হয়েছিল, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৪ দশমিক ৪ এবং ৩ দশমিক ৭। ওই ভূমিকম্প দুটির উৎপত্তিস্থল আগ্নেয়গিরি থেকে গড়ে ৬৮০ কিলোমিটার দূরে ছিল। ২০২১ সালে মে ও জুনেও দুটি ভূমিকম্প ঢাকা ও তার আশপাশের এলাকায় আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩-এর বেশি।
১৯৮৮ সালে সিলেটে মাঝারি থেকে বড় আকারের ভূমিকম্প দেখা দিয়েছিল, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৮। ওই ভূমিকম্পে টেকটোনিক প্লেটের গভীরতা ছিল প্রায় ৪৫ কিলোমিটার। রিখটার স্কেলের হিসাবে চার মাত্রার ভূমিকম্পকে হালকা ধরে নেওয়া হয়। অন্যদিকে ছয় থেকে সাত মাত্রার ভূমিকম্পকে শক্তিশালী হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। এ মাত্রার ভূমিকম্পে মানুষ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে। এ পর্যন্ত বিশ্বে প্রায় ৩৭টির বেশি বড় ধরনের ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। রিখটার স্কেলে যেগুলোর মাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫-এর বেশি।
গত ২৭ এপ্রিল সকাল ৮টা ২১ মিনিটে বাংলাদেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬।
বিএনএ নিউজ২৪/ওজি