বিএনএ, মিরসরাই: মিরসরাইয়ে মাদককারবারি সন্তানের অত্যাচার নির্যাতনে ঘরছাড়া হয়েছেন সুরমা বেগম (৫৩) নামে এক অসহায় বৃদ্ধা মা। ঘরছাড়া বৃদ্ধা সুরমা বেগম নিজ সন্তানের বিচার চেয়ে ধারে ধারে ঘুরেও বিচার পাচ্ছেন না। বিচার না পেয়ে চরম অমানবিক জীবন যাপন করছেন তিনি। সন্তানের হাতে খুন হওয়ার আতঙ্কে নিজ মাতৃভিটায় ও স্বস্তি পাচ্ছেন না।
নিজ সন্তানের হাতে লাঞ্চিত ও নির্যাতিত বৃদ্ধা সুরমা বেগমের মায়ের বাড়ি উপজেলার মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মহামায়া রাবার ডেম এলাকায়। নিজ মায়ের বাড়িতে ঘর করে সুরমা বেগম বসবাস করে আসছেন গত ১০ বছর ধরে। তারই ছেলে মেহেদি হাসান (৩৪) ও তার পুত্র বধু রাশেদা আক্তার (৩০) ঘরে বাংলা মদের অবৈধ ব্যবসায় করে আসছে। মাদক ব্যবসায়ে মায়ের বাধা পেয়ে বৃদ্ধ মায়ের উপর একের পর এক অত্যাচার নির্যাতন করে আসছেন। বৃদ্ধা মায়ের জমি লিখে নিজের নামে লিখে নিতে দিনের পর দিন অমানষিক নির্যাতন করে আসছে। ছেলে মেহেদি হাসান একজন মাদক ব্যবসায়ি হওয়ায় সমাজের প্রতাপশালী দুষ্টশ্রেণীর লোকদের সাথে সখ্যতা রয়েছে। ফলে বার বার নির্যাতনে বিচার চেয়ে কোন প্রতিকার পান নাই।
স্থানিয় ইউপি সদস্য কালাম বরাবরে নিযাতনের অভিযোগ করলে উল্টো সুরমা বেগমের বাড়ি ঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে ও লুটপাট চালায়। পরে স্থানিয় ইউপি সদস্য কালামের সহযোগীতায় মিরসরাই থানায় ছেলে মেহিদি হাসান ও তার পুত্রবধু রাশেদা আক্তারকে বিবাদি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে সুরমা বেগম জানান, ছেলে ও ছেলের বউ বাংলা মদের ব্যবসা করায় গত ১০বছর যাবত তার ৩ মেয়েকে নিয়ে একা থাকেন। ছেলে মেহেদি হাসান তার কোন বরণ পোষণ চালান না। বড় মেয়ের জামাতা তার খরচ চালায়। তাই বাপের ভিটায় বড় মেয়ের জামাতাকে একটি ঘর করে দিয়ে একাত্রে থাকেন। কিন্তু এতে ছেলে মেহেদি হাসান ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিনিয়ত তার উপর অত্যাচার ও নির্যাতন চালিয়ে আসছে সাথে যুক্ত হয় পুত্রবুধু রাশেদা আক্তার।
স্থানিয় ওয়ার্ড মেম্বার কালাম জানান, মহামায়া রাবার ড্যাম এলাকায় মেহেদি হাসান ও তার ৪ সহযোগী জাফর (৫২) পিতা চকু মাষ্টার, দিদার ( ৪৫) পিতা বেরু মাষ্টার , হোরা মিয়া (৩৫) পিতা কবির আহম্মদ, আব্দুল্লাহ (২৪) পিতা ইউসুফ নবি ও মিয়া (৩৩) সহ দীর্ঘদিন যাবত মদের ব্যবসায় করে আসছে। রাজনৈতিক গ্রুপিংয়ের কারণে তাদের ব্যাপারে আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারছি না। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারি আনোয়ার মাদক কারবারি মেহেদি থেকে মাসোহারা নিয়ে তাকে মাদক ব্যবসায় সুযোগ করে দিয়েছে। তার যেকোন অপরাধে সেক্রেটারি আনোয়ার সহযোগীতা করে আসছে। সে আমাদের মান্য করে না, তাই তার পরিবার কিংবা তার বিচার আমাদের পক্ষে করা সম্ভব নয়। বিষয়টি উপজেরা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে ও জানানো হয়েছে।
মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন বলেন, কে মদের ব্যাবসা করছে সেটি দেখার দায়িত্ব থানা পুলিশের আমার নয়।
মিরসরাই থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কবির হোসেন জানান, সুরমা বেগম নামে এক বৃদ্ধ মহিলার লিখিত অভিযোগ পেয়ে থানা পরিদর্শক (এসআই) সুমন নাথকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রদান করেছি।
এসআই সুমন নাথ জানান, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশ মোতাবেক অভিযুক্ত মেহেদি হাসান ও তার স্ত্রীর খোঁজে তাদের বাড়ি গিয়ে পাওয়া যায়নি। পুলিশের উপস্থিতির খবর পেয়ে সটকে পড়েছে। তবে অন্য মাধ্যমে মেহেদি হাসানের সাথে যোগাযোগ হয়েছে। তাকে থানায় আসতে বলা হয়েছে।
বিএনএ/আশরাফ, এমএফ