বিএনএ, নীলফামারী: নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার (৮ জুলাই) সকাল ৬টায় ওই পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ ৫২ দশমিক ২৮ সেন্টিমিটার পরিমাপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এই মৌসুমে এই পয়েন্টে সর্বোচ্চ উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হলো।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, জুন মাসের শুরু থেকে তিস্তার পানি বাড়া-কমার মধ্যে আছে। গত সোমবার (১৯ জুন) তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছিল। এরপর মঙ্গলবার (২০ জুন) থেকে পানি আরও কমতে শুরু করে স্বাভাবিক হলেও আজ আবার বেড়েছে।
এদিকে ডিমলা উপজেলার তিস্তা নদীগর্ভের বেশ কয়েকটি এলাকাসহ উপজেলার কালিগঞ্জ, ঝারসিংহেসর, খগারচর, জুয়ার চর, বাংলাপাড়া, উত্তর খড়িবাড়ী, বাইশপুকুর ও জলঢাকা উপজেলার ফরেস্টের চর, ভাবনচুর,ডাউয়াবাগড়িসহ বেশ কয়েকটি চরে পানি উঠেছে। তবে পানি বাড়লেও বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ডিমলা উপজেলার খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের পশ্চিম চরখালিশা গ্রামের আতিয়ার রহমান বলেন, তিস্তার পানি কখনও বাড়ছে, আবার কখনও কমছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি নিমজ্জিত হয়ে যাবে। আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি।
খালিশা চাঁপানী ইউনিয়নের ছোটখাতা চরের বাসিন্দা আমেনা বেগম বলেন, গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বেড়েছে। গতকাল রাতে পানির প্রবাহ বেড়ে যায়। ঘরে পানি উঠেছে, পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে আছি আমরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের দোমোহনিতে উজানের ঢলে পানি বাড়ায় ২৪ ঘণ্টা পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল। এজন্য আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রাম পুলিশ দিয়ে স্থানীয়দের সতর্ক করেছি। বন্যা মোকাবিলায় আমরা সার্বক্ষণিক চেষ্টা করছি।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা বলেন, গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় পানি প্রবাহিত হয়েছিল ৫১ মিটার ৯৫ সেন্টিমিটার কিন্তু রাত ১০টার দিকে নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই হয়েছিল। আজ সকাল ৬ টায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজের ৪৪টি গেট খুলে পানি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুপুরের দিকে পানি কমে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় আমরা মানুষকে সচেতন করেছি। কোথাও কোনো সমস্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ড তা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
বিএনএ/এমএফ