বিএনএ,কক্সবাজার: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন কক্সবাজারের খামার মালিক ও গৃহস্তরা। কক্সবাজারে এবছর চাহিদার তুলনায় ২১ হাজার ৬৭৩ টি পশু বেশি মজুদ রয়েছে। জেলায় বাজার ধরতে প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৯৬ হাজার ৬৮৭ গবাদিপশু। চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ১৪ টি।
কক্সবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের দেয়া তথ্য মতে, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে কক্সবাজার জেলায় কোরবানিযোগ্য ১ লাখ ৯৬হাজার ৬৮৭টি পশু প্রস্তুত রয়েছে। এই পশুগুলোর মধ্যে গরু (ষাঁড়, বলদ, গাভী) ১ লাখ ৪৮৯টি, মহিষ ৫ হাজার ১০৫ টি, ছাগল ৮ হাজার ৪১৭ টি, ভেড়া ১০ হাজার ৬৭৬টি।
এবারের ঈদে কক্সবাজার জেলায় সাপ্তাহিক হাটসহ ছোট-বড় ৯৪টি কোরবানি পশুর হাট বসতে যাচ্ছে । এর মধ্যে স্থায়ী হাট রয়েছে ৪৮ টি এবং ঈদুল আজহা উপলক্ষে অস্থায়ী হাটের সংখ্যা ৪৬টি। উপজেলা ভিত্তিক অনুমোদিত বাজারের সংখ্যা – কক্সবাজার সদরে ১৪টি, রামু উপজেলায় ১৩টি, চকরিয়ায় ১৬টি, পেকুয়ায় ৮টি, উখিয়ায় ৮টি, টেকনাফে ৭টি, মহেশখালীতে ৬টি ও কুতুবদিয়ায় ৬টি । তবে বেসরকারি হিসাবে বাজারের সংখ্যা শতাধিক বলে জানা গেছে। এ দিকে কক্সবাজার সদরে ১৪টি কোরবানের পশুর হাট ইজারা হলেও প্রাণী সম্পদ অফিসের তথ্যমতে পশুর হাট বসছে ৭টি।
বাজারে ক্রেতা বিক্রেতা ও সর্বসাধারণের নিরাপত্তা বিবেচনায় এবার ৩ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন প্রশাসন।
জানা গেছে, বাজারে কোরবানের পশু পরীক্ষার জন্য প্রাণী সম্পদ দপ্তরের পক্ষ থেকে থাকবে পশু টেষ্ট মেডিকেল টিম। জাল নোট সনাক্তকরণের জন্যে বাজারে থাকছে বিশেষ জালনোট সনাক্তকরণ মেশিন। ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বন্ধে এবং ক্রেতা- বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম।
কক্সবাজারের স্থানীয় সরকার শাখার উপ পরিচালক এসএম ফেরদৌস ইসলাম বলেন, কোরবানের পশুর হাটের নানা বিষয় নিয়ে প্রস্তুতির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তারা নিয়ম অনুয়ায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়া ক্রেতা-বিক্রেতাদের র্নিবিঘ্নের জন্য প্রতিটি বাজারে নিরাপত্তা জোরদারের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। সর্বসাধারণ যাতে নির্বিঘ্নে পশু ক্রয় বিক্রয় করতে পারে সে ব্যাপারে পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রতিটি বাজারে ১টি করে পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করবে পাশাপাশি সাদা পোশাকে ও বিশেষ পুলিশ সদস্যরা আলাদাভাবে মোতায়েন থাকবে।
টেকনাফের হ্নীলা এগ্রো ফার্মের সত্বাধিকারী তারেক মাহমুদ রনি বলেন, এবছর প্রচুর পরিমান পশু খামারে মজুদ করা হয়েছে। ছোট বড় ও মাঝারী ধরনের একদম ঘরোয়া পশু পাওয়া যাবে। ইতিমধ্যে তিনি হ্নীলা নাফ ফিলিং ষ্টেশনের পাশে পশু প্রদর্শনী ও বিক্রি করছেন।
কক্সবাজারের বৃহৎ হাট খরুলিয়া বাজারে জুহুর আলম নামে এক ক্রেতা জানান, এবছর তুলনামূলকভাবে দাম একটু সস্তা মনে হচ্ছে। মানুষ পছন্দের পশু প্রথমে দেখছেন দামে আর সুন্দরে পছন্দ হলে ক্রয় করছেন। তাই তিনিও দুটি গরু ক্রয় করলেন ।
কক্সবাজার জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন জানান, কক্সবাজারে গত বছরের তুলনায় চলতি বছর অনেক বেশি পশুর যোগান রয়েছে। যা চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে পাঠানো সম্ভব হবে। গবাদিপশুকে যেন কোন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার না করে সেজন্য আমরা খামারি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে প্রচারণা চালিয়েছি। প্রতি বছরের মতো এ বছরও প্রতি হাটে মেডিকেল টিম বসানো হবে বলে জানান এই কর্মকর্তা৷
বিএনএ/ এইচ এম ফরিদুল আলম শাহীন, ওজি/এইচমুন্নী