বিএনএ, বিশ্ব ডেস্ক: পাকিস্তানকে জবাব দিয়েছে ভারত। দেশটি ২৪ মিনিটে ২৫ হামলা চালিয়েছে। এ হামলায় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন ভারতীয় মুসলিম নারী কমান্ডার কর্নেল সোফিয়া কুরেশি। ভারতের চালানো এ অভিযান নিয়ে কথা বলেছেন সোফিয়ার পরিবার। বুধবার (০৭ মে) ভারতীয় সংবাদসংস্থা এএনআইর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তান এবং পাকিস্তান অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে (পিওকে) অপারেশন সিঁদুর পরিচালনা করেছে। এ হামলায় ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানের বিস্তারিত তথ্য জাতির সামনে তুলে ধরেন ভারতীয় কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশির পিতা তাজ মোহাম্মদ কুরেশি বলেন, আমরা খুব গর্বিত। আমাদের মেয়ে দেশের জন্য অসাধারণ কাজ করেছে। পাকিস্তানকে ধ্বংস করা উচিত। আমার দাদা, বাবা এবং আমি সবাই সেনাবাহিনীতে ছিলাম, এখন সে রয়েছে।
সোফিয়ার মা হালিমা কুরেশি জানান, আমাদের বোন ও মায়েদের সিঁদুরের প্রতিশোধ আমরা নিয়েছি। ছোটবেলা থেকেই সোফিয়া বলতো, সে বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। আজ তার সেই স্বপ্ন পূর্ণ হয়েছে।
উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং বলেন, অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার শিকারদের ন্যায়বিচার প্রদান করা হয়েছে। ৯টি সন্ত্রাসী ঘাঁটি সফলভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, যা নিশ্চিত করা হয়েছে যে কোনো বেসামরিক নাগরিক ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানান, পেহেলগামে হামলার উদ্দেশ্য ছিল কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর প্রচেষ্টা ব্যাহত করা। এই হামলা ছিল বর্বরোচিত, যেখানে নিহতদের সামনে তাদের পরিবারের সদস্যদের আতঙ্কিত করা হয়েছিল।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারত পাকিস্তানের ৬টি এলাকায় ২৪টি বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও অন্যান্য অস্ত্রে হামলা চালিয়েছে। এসব হামলা পাঞ্জাব প্রদেশের ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে, শিয়ালকোট, শকরগড় এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মীরের কোটলি ও মুজাফফরাবাদে হয়।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর পূর্বাঞ্চলে ১৩ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে রয়েছে দুই-তিন বছর বয়সী একটি শিশু মেয়ে, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। আহতদের মধ্যে রয়েছেন ৯ নারী ও ২৮ পুরুষ।
মুজাফফরাবাদের কাছে বিলাল মসজিদে চালানো হামলায় তিনজন নিহত হন, আহত হন এক মেয়ে ও এক ছেলে। কোটলির আব্বাস মসজিদে হামলায় নিহত হন ১৬ বছর বয়সী এক মেয়ে ও ১৮ বছর বয়সী এক ছেলে, আহত হন এক মা ও তার মেয়ে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের হামলার পর পাঞ্জাব প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল ও অন্যান্য জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ।
এদিকে পাকিস্তান দাবি করেছে, তাদের পাল্টা হামলায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ও একটি যুদ্ধ ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, শত্রুর আগ্রাসনের জবাবে প্রতিরক্ষামূলকভাবে আমরা ৩টি রাফায়েল জেট, একটি মিগ-২৯, একটি এসইউ বিমান এবং একটি হেরন যুদ্ধ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছি।
তিনি জানান, জম্মু, আখনুর ও শ্রীনগরের সাধারণ এলাকাগুলোতে একটি করে বিমান এবং অবন্তীপুরে দুটি বিমান গুলি করে নামানো হয়েছে।
বিএনএনিউজ/ বিএম