বিএনএ, ঢাকা : রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের স্ত্রী শাম্মী আক্তার মনির ফোনেই ট্রেনের ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক্ষক (টিটিই) শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রীর স্ত্রীর মামাতো বোন ইয়াসমিন আক্তার নিপা। যে তিন জন মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়েছিলেন তাদের একজন মো. ইমরুল কায়েস। সে ইয়াসমিন আক্তারের ছেলে।
ঘটনার রাতে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তার ও ইয়াসমিন আক্তার একসঙ্গেই ছিলেন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ইয়াসমিন আক্তার। তাঁর ভাষ্যমতে, তাঁর ছেলে ইমরুল কায়েস ফোন দিয়ে ট্রেনে ঝামেলার কথা জানালে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তার রেলওয়ের একজন কর্মকর্তাকে ফোন করে টিটিই শফিকুল ইসলামকে বরখাস্ত করতে বলেন।
শনিবার (৭ মে) স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের ইয়াসমিন আক্তার নিপা বলেন, ছেলেদের সঙ্গে ‘অসদাচরণ’ করার কারণে টিটিইকে তিনি বদলি করতে মন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারকে বলেছিলেন। তখন শাম্মী তাকে জানান, ‘বদলি নয়, বরখাস্তই করে দিচ্ছেন’। সঙ্গে সঙ্গে তিনি রেলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ফোন করে বরখাস্ত করতে বলেন।
নিপা আরো বলেন, আমার ছেলে ও তার দুই চাচাতো ভাই টিকিট কেটেই ট্রেনে ওঠেছিল। ট্রেনের এসি কেবিনের সিট ফাঁকা থাকায় গার্ডের অনুরোধে সেখানে গিয়ে বসে। তখন টিটিই শফিকুল ইসলাম এসে টিকিট দেখতে চান। এসি কেবিনের টিকেট না পেয়ে টিটিই তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এরপর তারা নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। তখন টিটিই আরো খেপে যান।
নিপা বলেন, ঘটনার পরপরই যদি টিটিই শফিকুল ফোন করে বলতো যে, তার ভুল হয়ে গেছে। বুঝতে পারিনি। স্যরি-ট্যরি বললে বিষয়টা ঠিক হয়ে যেতো। কিন্তু তিনি তা না করে, বিষয়টিকে ভাইরাল করে দিয়েছেন।
৫ মে (বৃহস্পতিবার) রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে বিনা টিকিটে তিন যাত্রী ঢাকায় যাচ্ছিলেন। তাঁরা ট্রেনের এসি কামরায় বসেছিলেন। তাঁদের কাছে ভাড়া চাইলে টিটির সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে ওই তিন যাত্রী নিজেদের রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দেন। টিটিই শফিকুল ইসলাম তাঁদের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা ভাড়া নিয়ে এসি কামরা থেকে শোভন কামরায় পাঠান। ওই তিন যাত্রী শোভন কামরাতেই ঢাকা পৌঁছান। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মুঠোফোনে টিটিই শফিকুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি জানানো হয়।
বিএনএনিউজ/এইচ.এম।