বিএনএ, গাজীপুর : গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রূপনগর এলাকায় বুধবার (৭) এপ্রিল দুপুরে সুবর্ণা আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ এবং তাঁকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও ননদকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা – নিহত সুবর্ণার পরিবার এবং কালিয়াকৈর থানা পুলিশের তথ্যসূত্রে জানাগেছে, গৃহবধূ সুবর্ণা সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার চিলগাছা এলাকার শুকুর আলীর মেয়ে। গেল পাঁচ মাস আগে একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে ইউনুস আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পারিবারিক ভাবে বিয়ে হলেও তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ-বিবাদ লেগেছিল। তাদের এই বিবাদ দেখে প্রতিবেশীরা বিরক্ত বোধ করতেন এবং তাদেরকে মাঝে – মধ্যে পরামর্শ দিতেন বিদেশ বাড়ীতে এসে ঝগড়া বিবাদ না করার জন্য । মিলে-মিশে সংসার চালানোর জন্য।
এ দিকে গৃহবধূ পরিবারের লোকজন দাবি করছেন, সুবর্ণার কখনো আত্ম হত্যা করার মতো মেয়ে না। তাকে তার স্বামী,ননদ, এবং শশুর মিলে অমানবিক নির্যাতনের কারণে, আত্ব হত্যার সৃষ্টি হয়েছে তাই তারা সরকারের কাছে এ ঘটনার জন্য সুস্থ তদন্ত করে সু- বিচারের আকুতি জানান।
সূত্র মতে, নিহত দম্পতি পরিবার রূপনগর এলাকার হাফিজ উল্লাহর ভাড়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন। সুবর্ণার স্বামী ইউনুস আলী চঁন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ইকোটেক্স পোশাক কারখানায় কাজ করেন। প্রতিদিন তাদের স্বামী -স্ত্রী মধ্যে টুকিটাকি নানা বিষয়ে ফ্যাসাদ লেগে থাকলেও গৃহবধূ কখনো সংসার ভাঙ্গার পক্ষে ছিল না। নিজের মতো করে সে স্বামীকে পাওয়ার জন্য সব সময় চেষ্টা করতেন ।
প্রতিদিনের ন্যায় বুধবার খুব ভোরে বাসা থেকে বেরিয়ে পড়েন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে ইউনুস আলী। আনুমানিক সকাল আটটার দিকে তাঁর বোন নাসরিন বেগম সুবর্ণাকে ঘুম থেকে ডাকতে যান কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ পান না। পরে ননদ নাসরিন জাম দিয়ে ঘরের দরজা ধাক্কা দেন। রোমের মধ্যে যেয়ে তিনি দেখেন,গৃহবধূ সুবর্ণা আক্তার গলায় রশি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে রয়েছেন। নাসরিন ভয়ে হতভম্ব হয়ে তড়িত করে
ইউনুস আলীকে খবর দেন।
পরে ইউনুস বাসায় আসে এবং ভাই-বোন মিলে ওই গৃহবধূর লাশটি ফ্যান থেকে মাটিতে নামান। তাদের মধ্যে কথা বলার সাড়া শব্ধ টের পেয়ে জান ওই বাসার কেয়ারটেকার সন্তোষ মীর মৃধা।পরে তিনি, কালিয়াকৈর থানা–পুলিশকে অবহিত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দম্পতির ঘর থেকে গৃহবধূ সুবর্ণা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহত সুবর্ণার লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
কালিয়াকৈর থানা–পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুদ্দোহা জানান, ময়নাতদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। এঘটনা পরিকল্পিত আত্মহত্যা হয়েছে না নিজে থেকেই হয়েছে এ ছাড়া তদন্তের স্বাথে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবর্ণার স্বামী, শ্বশুর ও ননদকে আটক করা হয়েছে।
বিএনএনিউজ/রুকন,জেবি