বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনের প্রতিটি পর্বেই তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৪৪ ধারা ভাঙ্গার ঐতিহাসিক সভায় অংশগ্রহণ করেন এবং ১০ জনীয় ৩য় ব্যাচে অংশ নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রথমে হাসপাতালে এবং পরে ব্যারাকে এসে কন্ট্রোল রুমের প্রচার কার্যে অংশ নেন।
২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে শহীদ মিনার নির্মাণেরও তিনি ছিলেন গর্বিত অংশীদার। সিমেন্টের জন্য পিয়ারু সর্দারের বাড়ি থেকে গুদামের চাবি আনা, গুদাম খুলে দেয়া, রাজমিস্ত্রি জোগাড় করা, নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণসহ সবখানেই ছিলেন মো. আলী আছগর।
১৯৫২ সালের ২৭ এপ্রিল নতুনভাবে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। এটাই ছিল সর্বশেষ সংগ্রাম পরিষদ। এ উপলক্ষে পুরানো ঢাকার বার লাইব্রেরিতে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন আলী আছগর।
একুশের আন্দোলনে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষার ক্ষেত্রে আলী আছগর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে ডা. গোলাম মাওলা ও কামরুদ্দিন আহমদের অনুরোধে পুরনো ঢাকার মিটফোর্ড স্কুলের একজন ছাত্রকে ভাষা-আন্দোলন সংক্রান্ত একটি জরুরি কাগজ পৌঁছাতে গিয়ে তিনি বিপত্তিতে পড়েন। পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য পচাঁ, দুর্গন্ধময় ময়লার স্তুপ ও ড্রেন পার হয়ে এক বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে শখের ফ্রেঞ্চ কাটিং দাড়ি কেটে ব্যারাকে আসেন।
ডা. মো. আলী আছগর ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা করেছেন ঢাকায় এবং বাঞ্ছারামপুরে। তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের সুচিকিৎসার জন্য একটি চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। ডা. আলী আছগর বর্তমানে অবসর জীবন-যাপন করছেন।
সূত্র: যারা অমর ভাষা সংগ্রামে, লেখক: এমআর মাহবুব
সম্পাদনায়: মনির ফয়সাল
পড়ুন আগের পর্ব: ভাষা সৈনিক(৮) আলী আছগর, ডা.