একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খন্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভান্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে ২০১৮ সাল থেকে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে। ওয়েব সাইট সার্ভার রক্ষনাবেক্ষণ জটিলতার কারণে কিছু দিন বন্ধ ছিল। আবারও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ১ মার্চ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বাংলাদেশ স্বাধীনতার নেপথ্যে গণ মাধ্যমের ভূমিকা, বিশেষ করে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের।
আজ প্রকাশিত হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৮
২৬শে মার্চের অনুষ্টান থেকে
আবদুস সালাম
“নাহমাদুহু ওয়ানুসাল্লীআলা রাসুল্হীল কারিম”
আসসালামু আলায়কুম,
প্রিয় বাংলার বীর জননীর বিপ্লবী সন্তানেরা। স্বাধীনতাহীন জীবনকে ইসলাম ধিক্কার দিয়েছে। আমরা আজ শোষক প্রভুত্বলোভীদের বিরুদ্ধে সর্বাত্নক সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছি। এ গৌরবোজ্জ্বল স্বাধিকার আদায়ের যুদ্ধে, স্বাধীনতার যুদ্ধে, আমাদের ভবিষ্যৎ জাতির মুক্তিযুদ্ধে মরণকে বরণ করে যে জানমাল কোরবানী দিচ্ছি, কোরআনে করিমের ঘোষণা- তারা মৃত নহে, অমর।
দেশবাসী ভাইবোনেরা, আজ আমরা বাংলার স্বাধীনতার সংগ্রাম করছি।
আল্লাহর ফজল করমে বাংলার আপামর নরনারী আমাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সংগ্রাম করে চলছেন। আর সবখানে আমাদের কর্তৃত্ব চলছে। আমরা যারা সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছি- তাদের আপনারা সকল প্রকার সহযোগিতা দিন। এমনকি খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও সহায়তা দিন। স্মরণ রাখবেন দুশমনরা মরণকামড় দিয়েছে। তাদের এ সোনার বাংলাকে সহজে তাদের শোষণ থেকে মুক্তি দিতে চাইছে না। কোন অবাঙালী সৈনিকের কাজেই সাহায্য করবেন না।
মরণ তো মানুষের একবার। বীর বাংলার বীর সন্তানেরা শৃগাল-কুকুরের মতো মরতে জানে না। মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী।
কোন গুজবে কান দেবেন না। খালি হাতে কয়েকজন মিলে কোন পশ্চিমা মিলিটারীর মোকাবেলা করবেন না। ওরা আমাদের দেশে এসে আমাদের খেয়েই শক্তি যুগিয়ে আমাদের নির্বিচারে হত্যা করবে-তা হতে পারে না। দশজনে হলেও একজনকে খতম করুন। সমস্ত প্রকার অস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত থাকুন। যারা নিরস্ত্র তারা অন্তত সোডার বোতল, বাজি প্রস্তুতকারীরা মরিচের গুঁড়ার ঠোঙ্গা বানায়ে ওদের প্রতি নিক্ষেপ করলে টিয়ার গ্যাসের কাজ করবে। বিজলী বাতির বাল্বে এসিড ভরে তাও নিক্ষেপ করুন। একেবারে খালি হাতে থাকবেন না। মরবেন তো মেরেই ইতিহাস সৃষ্টি করুন।
“নাছরুম মিনাল্লাহে ওয়া ফাতহুন কারিব”। আল্লাহর সাহায্য ও জয় নিকটবর্তী।।
(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র – পঞ্চম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ১১)
চলবে
আরও পড়ুন আগের পর্ব :
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৭
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৬
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৫
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৪
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০৩
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০২
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-০১
সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা