বিএনএ রিপোর্ট : বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থার বাংলাদেশ মিশন ও দেশের দূতাবাসে ৭মার্চ পালিত যথাযথভাবে পালিত হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ – ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ডানা
আম্মান (জর্ডান), ৮ মার্চ : জর্ডানে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ-এর ৫০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গতকাল ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জর্ডানে ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ডানা। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে যুক্ত হন শিক্ষাবিদ ও জর্ডান ডিপার্টমেন্ট অভ আণ্টিকস এর সাবেক পরিচালক ডক্টর মন্থেস জাহাস জামহাওয়ি এবং ঢাকা থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও অভিনেতা এম খালেকুজ্জামান।
জর্ডানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণটি ইংরেজি সাবটাইটেলসহ দেখানো হয়।
জর্ডানে ইউনেস্কোর শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ডানা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের প্রতিটি লাইন তাঁর হৃদয় থেকে উৎসারিত। প্রতিটি শব্দ তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থার সাক্ষ্য বহন করে। তিনি তাঁর জীবনের মধ্য দিয়েই দেখিয়েছিলেন যে তিনি ব্যক্তিগত লাভকে অগ্রাহ্য করতে এবং তাঁর দেশ ও মানুষের জন্য আত্মত্যাগ করতে সর্বদা প্রস্তুত ছিলেন। তিনি যখন ঘোষণা করেন ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দিব’, তাঁর মধ্য দিয়েই প্রকাশ পায় তাঁর জাতির জন্য বঙ্গবন্ধুর অপরিমেয় ভালবাসা। বিশ্বের যেকয়টি দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা লাভ করেছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম।
বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ যে ভাষণ দিয়েছিলেন তা এতটাই প্রেরণাদায়ক ও ঐতিহাসিক যে ইউনেস্কো ২০১৭ সালে তাঁর সেই অবিসংবাদিত ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রামান্য দলিল হিসেবে গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের এক অনন্য সম্পদ উল্লেখ করে প্রিন্সেস ডানা বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাষণটিতে একটি স্বাধীন দেশের ঘোষণা যেমন ছিল সেই সাথে ছিল উপনিবেশিক রাষ্ট্রগুলো যেভাবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও জাতিগত ভাবে একটি জনগোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্ন করে তোলে তার বিরুদ্ধে একটি সাহসী উচ্চারণ। সম্পদ ও উপযুক্ত সমরাস্ত্র বিহীন একটি ছোট দেশের শুধু মাত্র সহায় সম্বলহীন মানুষের শক্তিকে ভিত্তি করে স্বাধীনতার স্বপ্নকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া ও তাকে বাস্তবায়িত করার ঘটনা বিশ্বে বিরল। যা হয়ত একজন মহান নেতৃত্বের কারনেই সম্ভব হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেস্কো তার নিজস্ব ইতিহাসকেই সমৃদ্ধ করল।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ ‘ওরাটরি ব্রিলিয়েন্স এন্ড স্ট্র্যাটিজিক মাস্টার স্ট্রোক অভ সেভেন্থ মার্চ স্পিচ’ শীর্ষক তাঁর উপস্থাপনায় বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে চারটি আঙ্গিকে বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে প্রথমত ২৩ বছরের বঞ্চনা, দ্বিতীয়তঃ তৎকালীন রাজনৈতিক অচলাবস্থা, তৃতীয়ত ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এবং চতুর্থত স্বাধীনতার আশ্বাস ব্যক্ত করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ঐতিহাসিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ব্যক্ত করেন। একই সাথে তিনি বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের আইনগত ভিত্তিও ব্যাখ্যা করেন।
অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ওপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্মিত একটি স্বল্পদৈর্ঘ্য তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। উল্লেখ্য, জর্ডানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত এই ওয়েবিনারটি দূতাবাসের ‘মুজিব বর্ষ ওয়েবিনার সিরিজ’ এর ৫ম ওয়েবিনার।
অটোয়া, কানাডা
জাতির পিতা ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বজ্রকন্ঠে সমগ্র জাতিকে উদ্ধুদ্ধ করে স্বাধীনতার এবং সার্বভৌম দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য লাখো জনতার মাঝে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। এ ভাষণের মধ্য দিয়েই বাঙালি জাতির স্বাধীন বাংলাদেশের রূপরেখার পরিপূর্ণতা লাভ করে। এটি বাঙালি জাতির জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দিন। বাংলাদেশ হাইকমিশন অটোয়ায় গতকাল এ উপলক্ষ্যে বিশেষ কর্মসূচি পালন করা হয়।
কর্মসূচির অংশ হিসাবে দিবসের শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান। পতাকা উত্তোলনের সময় জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। পরে বঙ্গবন্ধুসহ সকল শহিদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এ সময় অত্র হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
দিবসের পরবর্তী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে হাইকমিশনারের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে প্রেরিত ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী দু’টি পাঠ করে শোনান হয়।
এর পর শুরু হয় ভার্চুয়াল বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান। উক্ত আলোচনা অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান। ভার্চুয়াল বিশেষ আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত বিশিষ্ট অতিথিদের মধ্যে ছিলেন অটোয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ফেলো নিপা ব্যাণার্জী, বিশিষ্ট রাজনৈতিক কলামিস্ট প্রফেসর ড. মোজাম্মেল হক খান, প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. খলিকুজ্জামান, কানাডায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত অজয় বিশারিয়া, বিশিষ্ট সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাবেক সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার মুজিববর্ষের জন্য বিশেষভাবে রচিত দুই বাংলার শিল্পীদের গাওয়া একটি গান- “হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি তুমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান” অবমুক্ত করেন। ভার্চুয়াল এ অনুষ্ঠানে সংযুক্ত সকলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন ।
ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনে
ভিয়েনাস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ও স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে গতকাল ‘ঐতিহাসিক ৭ মার্চ’ পালন করা হয়েছে। সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটি উপলক্ষ্যে গৃহীত কার্যক্রম শুরু হয়। দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণসহ অস্ট্রিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিকেলে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে এক অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। এই আলোচনা সভায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাগণ, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া ও স্লোভাকিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী বাঙালি, সাংবাদিক, ছাত্রছাত্রীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আলোচনা অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। আলোচনার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, আমরা প্রত্যেকই স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করার সাহস ও অনুপ্রেরণা পাই। তিনি বলেন ৭ মার্চের ভাষণ শুধু এ দেশের নিপীড়িত মানুষের অধিকার আদায়ের নয়, এ ভাষণ বিশ্বের নানা প্রান্তের নিপীড়িত জনগণের মুক্তির গান। এ জন্যই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ সমূহের একটি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণকে ইউনেস্কো স্বীকৃতি দিয়েছে।
অনুষ্ঠানের প্রধান আলোচক মফিদুল হক তাঁর উপস্থাপনায় ৭ মার্চের ভাষণের ঐতিহাসিক পটভূমি, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য, বিশ্বপরিমন্ডলে এই ভাষণের অবস্থান এবং ইউনেস্কো কর্তৃক এই ভাষণকে International Memory of the Word Register-এ অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ একটি নতুন ধারার জাতীয় মুক্তি আন্দোলন ও একটি জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় অনস্বীকার্য অবদান রেখেছে। ভাষাভিত্তিক অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তা, পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায় এবং সংঘাতের বিপরীতে সম্প্রীতির বিজয় অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ যুগযুগ ধরে অনুপ্রেরণা দিয়ে যাবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
আলোচনা পর্বে বক্তরা বলেন, ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমেই মূলত দিশেহারা বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা পায়। এ ভাষণের পরেই বাঙালি জাতি স্বাধীনতার চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করে।স্বাধীনতা সংগ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের অমিত শক্তির উৎস ছিল ঐতিহাসিক এই ভাষণ। আমাদের ইতিহাস ও জাতীয় জীবনে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ এক অপরিহার্য অধ্যায় যা আমাদের সবসময় প্রেরণা যুগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সকল শহিদ, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদ্যাপন
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে গতকাল ইউনেস্কো’র ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদ্যাপন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এবং একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে।
আলোচনা পর্বে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ১৯৭১ সালে জাতির পিতা প্রদত্ত ৭ মার্চের ভাষণ একটি জাতিকে কীভাবে বজ্রকঠিন ঐক্যের পতাকাতলে সমবেত করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণে উজ্জীবিত করেছিল তা উঠে আসে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘এটি কোনো পূর্বলিখিত ভাষণ ছিল না। এটি ছিল ঐ সময়ের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর হৃদয় উৎসারিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া। এতে একদিকে রয়েছে আমাদের সূদীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস, আর অন্যদিকে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা’। তিনি আরো বলেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের সফল পরিণতি হচ্ছে স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ। ৭ মার্চের ভাষণ যাতে সর্বদা দীপ্যমান থাকে এবং জাতির পিতার সম্মোহনী দরাজ কন্ঠ যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অনুরণিত হয় সেজন্য নতুন প্রজন্মকে ভাষণটি বার বার শোনানোর আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নানা কর্মসূচির আয়োজন করে যাচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। স্ব স্ব অবস্থান থেকে সকল প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
অন্যান্য আলোচকগণ ভাষণের প্রেক্ষাপট, বিষয়বস্তু, সুদূর প্রসারী প্রভাবের ওপর আলোকপাত করেন। জাতির পিতার এই ভাষণে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একজন সুযোগ্য রাষ্ট্রনায়কের সুচিন্তিত কৌশলের সবটুকুই প্রতিভাত হয়েছে মর্মে মন্তব্য করেন বক্তাগণ।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অভ্ দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করে।
বিএনএনিউজ২৪/এসজিএন