21 C
আবহাওয়া
৯:৫৬ অপরাহ্ণ - ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » দুই দশক পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন

দুই দশক পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন

দুই দশক পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন, থাকছেন না বর্তমান কমিটির সদস্যরা

বিএনএ, চট্টগ্রাম: দুই দশক পর চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন হতে যাচ্ছে। ২০০১ সালের জুলাই মাসে ২১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এটি ছিল চট্টগ্রাম মহানগরে সংগঠনের প্রথম কমিটি। আগামী ১১ এপ্রিল নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের উপস্থিতিতে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

গত শনিবার (৬ মার্চ) বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম সম্মেলনে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানা গেছে।

দলীয় নেতাদের কেউ কেউ চাচ্ছেন সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। আবার বড় একটা অংশের বক্তব্য, সম্মেলন হলে বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তাই কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি গঠন করা গেলে ভালো হয়।

আবার কারো কারো পরামর্শ, তৃণমূলে সম্মেলন করে নগর কমিটিগুলোর সম্মেলন করা হোক।

দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় নেতাকর্মীরা হতাশ হয়ে ঝিঁমিয়ে পড়ার পর সম্মেলন ঘিরে আবারও চাঙ্গা হয়ে উঠছে। সর্বশেষ ২০০১ সালে তিন মাসের জন্য ছয় সদস্যের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক নেতা জানান, বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এইচ এম জিয়াউদ্দিন, তিন যুগ্ম আহ্বায়ক কে বি এম শাহজাহান, সালাউদ্দিন আহমেদ, আমিনুল ইসলামসহ ২১ সদস্যের কমিটির বেশির ভাগ নতুন কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা চাচ্ছেন নতুন নেতৃত্বের হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে। আর সম্মেলনের দিনই নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে চান তারা।

নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এইচ এম জিয়াউদ্দিন জানান, আমাদের দায়িত্ব দেওয়ার পর তৃণমূলের কমিটিগুলো গঠন করেছি। নগর কমিটির সম্মেলন করার চেষ্টা করলেও বিভিন্ন কারণে তা হয়নি। এবার নতুন কমিটিতে আমিসহ আমাদের তিন যুগ্ম আহ্বায়কের কেউ থাকছি না। আমরা চাচ্ছি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যাঁরা সক্রিয় তাঁদের নেতৃত্বে আনতে।

একই কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কে বি এম শাহজাহান জানান, আমাদের মধ্যে কোনো বিভাজন নেই। আমরা চাচ্ছি সবাইকে নিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমেই নতুন নেতৃত্ব আসুক। সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে কমিটি হবে। ১০১ সদস্যের কমিটি হতে পারে। পদগুলোতে একাধিক প্রার্থী থাকলে ভোটাভুটিতে নেতৃত্ব আসবে।

এদিকে, সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে রোববার ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের তিন নেতা। তারা হলেন, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. জমির সিকদার, যুগ্ম সম্পাদক এ কে এম নাজিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা। তাদের সাথে রয়েছেন চট্টগ্রামের কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতারা।

জানতে চাইলে নাফিউল করিম বলেন, দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হচ্ছে। তাই সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, পোস্টার ডিজাইন, সম্মেলনের স্থান নির্ধারণ, উপ-কমিটি গঠন, কারা কোন দায়িত্ব পালন করবে সব বিষয়ে সহযোগিতা করতে ঢাকা থেকে এসেছি।  শান্তিপূর্ণ একটি সম্মেলন আয়োজনের সব ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্মেলনকে ঘিরে মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারীরা নিজ নিজ বলয়ে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন। নতুন কমিটিতে স্থান পেতে শীর্ষ নেতাদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন।

সম্মেলন ঘিরে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন— সাবেক মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত দেবাশীষ নাথ দেবু, আজিজুর রহমান আজিজ, আরশাদুল আলম বাচ্চু। অন্যদিকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত হেলাল উদ্দিন, সুজিত দাশ, আব্দুর রশিদ, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। এছাড়াও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক এডভোকেট এ এইচ এম জিয়া উদ্দিনের অনুজ এডভোকেট তসলিম উদ্দিন, আজাদ খান অভি ও শাহেদ আলী রানা, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহবায়ক কেবিএম শাহজাহান ও তার অনুসারী মো. জসিম উদ্দিন, মনোয়ার জাহান মনি, কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল।

দেড় মাস আগে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। আলোচনা ছিল, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পরপরই চট্টগ্রাম মহানগরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো ভেঙে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। সিটি নির্বাচনের পর এসব কমিটির দিকে তাকিয়ে আছেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।

২০১৩ সালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যের বর্তমান কমিটি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। চার বছর আগে এই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। একইভাবে ২০১৩ সালে কেন্দ্র থেকে দেওয়া ১০১ সদস্যের মহানগর যুবলীগের তিন মাসের আহ্বায়ক কমিটি এরই মধ্যে সাত বছর আট মাস সময় পার করেছে। কেন্দ্র থেকে দেওয়া ২৯১ সদস্যের মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিরও সাড়ে পাঁচ বছর আগে মেয়াদ শেষ হয়েছে। আর ১৭ বছর ধরে বহাল মহানগর শ্রমিক লীগের একই কমিটি। এ কমিটির পাশাপাশি নগর কৃষক লীগের কমিটিও মেয়াদোত্তীর্ণ।

এসব কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কবে নাগাদ সম্মেলন হবে তা তাঁরা জানেন না। আর নতুন কমিটি সম্মেলনের মাধ্যমে হতে পারে অথবা কেন্দ্র থেকেও ঘোষণা করা হতে পারে।

সংগঠনগুলোর নেতারা জানান, ২০১৯ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে চট্টগ্রাম নগরে এসব সংগঠনের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন কিংবা কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি দেওয়ার কথা শোনা গেলেও চসিক নির্বাচনের কারণে হয়নি। এখন কেন হচ্ছে না, তা স্থানীয় নেতারা জানেন না।

বিএনএনিউজ/মনির,এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ