20 C
আবহাওয়া
৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ - নভেম্বর ২৪, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » নোবিপ্রবির নীলদীঘির পাড়ে শিক্ষা বিভাগের চড়ুইভাতি

নোবিপ্রবির নীলদীঘির পাড়ে শিক্ষা বিভাগের চড়ুইভাতি


বিএনএ, নোয়াখালী : ‘চড়ুইভাতি’ শব্দটি শুনলেই কেমন চনমনে ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যায়। সময়ের স্রোতে স্মৃতিতে ধুলো জমলেও শব্দের চিত্রকল্পে ধুলো জমে না। পৌষ-মাঘের শীত আর বাড়ন্ত শীতের সবজি চুরি করে সাধের চড়ুইভাতির স্মৃতি কুয়াশাঘেরা জীবনে আগুনের উষ্ণতা।

শৈশব, কৈশোরের ফেলে আসা হাজারো মধুর স্মৃতির মধ্যে অন্যতম একটা স্থান দখল করে আছে পাড়ার বন্ধুরা মিলে ‘চড়ুইভাতি’ খেলা। স্থানভেদে যার আরেক নাম ‘জোলাভাতি’।

‘চলো না ঘুরে আসি অজানাতে, যেখানে নদী এসে মিশে গেছে’ গিটারের টুংটাং শব্দে মুখরিত নীলদীঘির পাড়। কার গানের গলা ভালো আন্দাজ করা বেশ মুশকিল! সবাই ব্যস্ত খুব।

আকাশমণি গাছের ফাঁকে ফাঁকে লাল, নীল কাগজের সারিগুলো, হলুদ সোনালি ফুল, ঝরা পাতার শব্দ, পাখির ডাক , পুরো নীলদীঘির পাড় যেনন একটুকরো রঙিন ক্যানভাস।

বলছিলাম নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষা বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ৭ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত চড়ুইভাতির কথা। “চতুর্মাত্রিক অনুরণন, অখন্ডত্বের সূচনা” প্রতিপাদ্য নিয়ে এই চড়ুইভাতি অনুষ্ঠিত হয়।

রবিবার (০৭ নভেম্বর) বেলা ১২ টায় চড়ুইভাতি অনুষ্ঠান শুরু হয় এবং সারা দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনে মুখরিত ছিল নীলদীঘি প্রাঙ্গণ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন, গান ও আড্ডা ছিল চড়ুইভাতি অনুষ্ঠানে। চড়ূইভাতি অনুষ্ঠানটি আলোকিত করে রেখেছিলেন শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক বিপ্লব মল্লিক, সহকারী অধ্যাপক ওয়ালিউর রহমান আকন্দ, সহকারী অধ্যাপক নওরীন ইয়াসমীন, সহকারী অধ্যাপক ফাতেমা বেগম পপি এবং সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মো. সিয়াম।

রবিবার সকাল হতে না হতেই সবাই জড় হয় পূর্বনির্ধারিত স্থান নোবিপ্রবির নীলদীঘির পাড়ে। বাজারের দায়িত্বে থাকা সবাই বাজার নিয়ে যথাসময়ে হাজির হয়। প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে শুরু হয় কাজের ধুম।

দায়িত্ব অনুযায়ী সবাই যে যার মতো শুরু করে কাজ। কেউ পানি আনা, কেউ কাটাকাটি, কেউ চুলা জ্বালানো, কেউ আবার হাঁড়ি-পাতিল পরিষ্কারের কাজে নামে। কাঠ কুড়ানো, চুলা বানানো, চাল ধোয়া, মাংস কাটাসহ সব কাজই করা হয়েছে মিলেমিশে। রান্নার দায়িত্বে ছিল ‘নাম’ ও আরো অনেকে। রান্না করতে করতে একসময় দুপুর গড়িয়ে বিকাল হলো। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে শুরু হলো ভোজন পর্ব। রাঁধুনীদের রন্ধনশিল্পে মুগ্ধ হলো সবাই।

চড়ুইভাতি নিয়ে শিক্ষা বিভাগের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফ মিরাজ  বলেন, ” এই প্রথম ৪ ব্যাচ একসাথে একত্রিত হতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।এই বন্ধন যেন অটুট থাকে,সবাই যার যার জায়গা থেকে সেই চেষ্টা করবো।আপকামিং ফেয়ারওয়েল এ সবার এরকম স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ কামনা করছি।”

তৃতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “১৬তম ব্যাচকে ধন্যবাদ এমন একটি সুন্দর আয়োজন করে পুরো বিভাগকে একত্র করার জন্য। দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে সবার কাছে।”

৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান হ্যাপি বলেন, ‘আয়োজনে আমরা ১৬ ব্যাচ থাকায় আনন্দ অনেক বেশি ছিলো। অনেক ছবি তুলেছি, সবাই মিলে গান গেয়েছি। এক কথায় স্মৃতির পাতায় মনে রাখার মত একটা দিন কাটিয়েছি। ‘

শিক্ষা বিভাগের প্রধান ও চেয়ারম্যান বিপ্লব মল্লিক বলেন, ‘এই প্রথম আমাদের বিভাগে ৪টি ব্যাচ মিলে একটা প্রোগ্রাম আয়োজিত হয়। ১৬ তম ব্যাচকে ধন্যবাদ এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য। আশা করি ভবিষ্যতেও শিক্ষার্থীরা এমন নানা ধরনের ব্যাতিক্রমী আয়োজন করবে। এই ধরনের আয়োজন বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলে যা শিক্ষা ও চাকরি জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

আড্ডা, গান, কবিতা, গল্পে মুখরিত সময়টা যেন চড়ুই পাখির মতো ফুরৎ করে উড়ে চলে গেলো! শৈশবের স্মৃতি মোড়ানো হরেক রকম খেলা, প্রাণখুলে আড্ডা, গলা ছেড়ে গান, গুচ্ছ গুচ্ছ গল্প, চমৎকার সব রান্না। নীল দীঘির পাড়ের দুপুরটা অসাধারণ, অনবদ্য, রোমাঞ্চকর। জীবন এখানে বেশ রঙিন।

নোবিপ্রবির এমন রূপ হরহামেশাই দেখা যায়। উৎসব প্রিয় ক্যাম্পাসে প্রতিদিনই কেউ না কেউ, কোনো না কোনো বিভাগের শিক্ষার্থীরা চড়ুইভাতির মতো নানা আয়োজন করে থাকে।

বিএনএ/শাফি/এইচ.এম।

Loading


শিরোনাম বিএনএ