বিএনএ, ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের তারাকান্দায় নিখোঁজের ১৩ দিন পর বিল থেকে বাবুল মিয়া (৪৫) নামে এক যুবকের পাটের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার মহিষবেড় এলাকার সিধলং বিল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বাবুল মিয়া তারাকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের মৃত হাসেন আলীর ছেলে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলার মহিষবেড় গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৪৫) এবং তার স্ত্রী সখিনা বেগম (৪০)।
তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল খায়ের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগী বাবুল মিয়া গত ২৪ আগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল। নিখোঁজের পর আশপাশের অনেক এলাকা ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে বেশ কয়েকদিন খোঁজাখুঁজি করে। তবে, বাবুল মিয়ার কোন সন্ধ্যান মিলেনি। কোথাও খোঁজ না পেয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর বাবুল মিয়ার ছেলে সোহেল বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করেন।
পরে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার (৬ আগস্ট) গাজীপুরের তুরাগ এলাকা থেকে শাহজাহান মিয়া এবং তার স্ত্রী সখিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেখান থেকে তারাকান্দা থানায় এনে শাহজাহান ও সখিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বাবুল মিয়াকে হত্যার পর মরদেহ গুম করার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সিধলং বিল থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: ১৫ অঞ্চলের নদীবন্দরে এক নম্বর সতর্ক সংকেত
গ্রেপ্তারদের বরাত দিয়ে ওসি আবুল খায়ের বলেন, ভুক্তভোগী বাবুল মিয়া গ্রেপ্তার সখিনার ফুফাত ভাই। সখিনা স্বামী সংসার থাকার পরেও সে বাবুল মিয়ার সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। তবে, সর্ম্পকের বিষয়টি সখিনার স্বামী শাহজাহান টের পেয়ে বাবুল ও সখিনাকে সতর্ক করে দেন। কিন্তু বাবুল মিয়া কোনমতেই বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। তারপরেও সখিনাকে বিরক্ত করত বাবুল মিয়া। এমতাবস্থায় কোন উপায় না পেয়ে বাবুল মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে সখিনা ও তার স্বামী শাহজাহান। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক গত ২৪ আগস্ট মোবাইলে বাবুল মিয়াকে ডেকে সিধলং বিলের কাছে ডেকে নিয়ে যায় সখিনা। বাবুল মিয়া সেখানে যেতেই স্বামী স্ত্রী মিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার পর মরদেহ গুম করার জন্য পাটের বস্তায় ভরে বিলের মাঝখানে পুতে রাখে ও বস্তা যেন ভেসে না উঠে সে জন্য খুঁটির সাথে বেধে রাখে।
এই ঘটনার পর ভুক্তভোগী বাবুল মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া বাদী হয়ে তারাকান্দা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান ওসি আবুল খায়ের।
বিএনএনিউজ/ হামিমুর রহমান, বিএম