বিএনএ, কুবি: ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে দেওয়া প্রজ্ঞাপন হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষণার প্রতিবাদে ও প্রজ্ঞাপন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক আবারো অবরোধ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই অবরোধে অংশ নেয় শিক্ষার্থীরা। এই অবরোধের ফলে সড়কের দুইপাশে প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
রোববার (৭ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে চারটার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এসে সড়ক অবরোধ করেন। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে।
তাদের আজকের আন্দোলনের একাত্মতা পোষণ করে অংশ নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজসহ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজ, জেলার বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই, আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাই নাই, লেগে ছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন।
আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী সানজিদা বলেন, ‘আমরা মেয়ে হলেও কোটা চাই না। মেয়েরা এখন মেধায় অগ্রসর। বিশ্ববিদ্যালয়েও মেয়েদের আসন ছেলেদের প্রায় সমান। উচ্চ শিক্ষায়ও মেয়েদের সংখ্যা বেশি। মুক্তিযোদ্ধা দেশে এখন তেমন জীবিত নেই। তাদের জন্য এত বেশি কোটা থাকা বৈষম্যমূলক।’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রিফাত হোসেন বলেন, সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধা এক শতাংশও নেই। তাদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। কোটার কারণে মেধাবীরা জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। একটি দেশে এভাবে চলতে পারে না।’
এই বিষয়ে ২০২০-২১ সেশনের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাদাত তানভীর রাফি বলেন, ‘সরকারি চাকরিতে কোটার বৈষম্য দূর করতে হবে এবং মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ চাই। আর নয় আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।’
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম মাহিন জানান, ‘আমার বয়স ১৯। এ বছর গুচ্ছে পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকায় কিছুটা পেছনে ছিলাম। কোটা না থাকলে অনায়াসে একটি সাবজেক্ট পেয়ে যেতাম। কোটার কারণে সাবেজেক্ট পাইনি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়েও একই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি।’
ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন,অবরোধের কারনে মহাসড়কে যানযটের সৃষ্টি হয়েছে। অবরোধ সরে গেলে আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে যানযট নিরসনের চেষ্টা করবো।’
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৪ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে চারদফা দাবি জানিয়ে অবরোধ তুলে নেয় তারা।
বিএনএনিউজ/আদনান, এমএফ/এইচমুন্নী