বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র একটি প্রামাণিক গ্রন্থ যা ১৯৭১ সালে এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত তথ্যভান্ডার হিসাবে স্বীকৃত। ১৫ খণ্ডে প্রকাশিত এ তথ্য ভাণ্ডারে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা সাধারণ মানুষের অজানা। বিশেষ করে এ প্রজন্ম জানেই না কত রক্ত, কত কষ্ট, নির্যাতন ও ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল ছিন্ন করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে।
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অর্জন ও উন্নয়নে বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বাঙ্গালি জাতি বিলীন হয়ে যেত! এমনটাই মনে করেন সমাজ বিজ্ঞানীরা। নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস জানাতে বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি (বিএনএ) ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে আসছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিলপত্র ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করছে।
আজ প্রকাশিত হলো
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৪
দৃষ্টিপাত(প্রথমাংশ)
১৪ জুন, ১৯৭১
আমাদের চোখের সামনেই যেন একটি মর্মান্তিক ইতিহাস তার পৃষ্ঠাগুলো দিনের পর দিন উন্মোচন করে দিল। আর আমরা সবাই হয়ে থাকলাম ইতিহাসের এক-একজন উজ্জ্বল সাক্ষী। সর্বযুগের, সর্বকালের এবং সর্বদেশের একটি নিষ্ঠুরতম ঘটনা, একটি অমানুষিক পৈশাচিকতা, একটি হৃদয়বিদারক, বিশ্বাসঘাতকতা আমাদের চোখের সামনেই ঘটে গেল। আমরা চোখ দিয়ে দেখলাম, আমাদের সমগ্র অনুভূতি দিয়ে অনুভব করলাম এবং আমরা সবাই বহু ত্যাগের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করে আবার নতুন সূর্যের অভিমুখে যাত্রা শুরু করলাম। নতুন দিনের আশায় আমরা সাড়ে সাত কোটি বাঙালী আজ উজ্জীবিত নতুন সংগ্রামে আমরা সমগ্র বাঙালী আজ শপথ গ্রহণ করেছি। এ সংগ্রাম আমাদের সুনিশ্চিত মুক্তি নিয়ে আসবে, এ সংগ্রাম আমাদের বিজয়ের তোরণদ্বারে উপস্থাপন করবেই।…..
বন্ধু, আমরা তো কোন অন্যায় করি নাই। বৃটিশ বেনিয়াদের উৎখাত করে এদেশে স্বাধীনতা আন্দোলনকে জোরদার করতে সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বাঙালীর অবদান সবচেয়ে বেশী। মহামতি গোখলে তাই একদিন বাঙালীকে লক্ষ্য করে এ যুগের একটি পরম সত্যবাদী উচ্চারণ করেছিলেন What Bengal thinks today, Indian thinks tomorrow- অর্থাৎ বাঙালী আজ যা ভাবে, সারা ভারত তা চিন্তা করে আগামীকাল। রামমোহন, চিত্তরঞ্জন, রবীন্দ্রনাথ, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, নেতাজী সুভাষ বসু, নজরুল ইসলাম এবং এই জাতীয় আরও বহু নাম উচ্চারণ করা যায় যাঁরা সারা ভারতীয় উপমহাদেশকে মানবতার শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন এবং স্বাধীনতার দীক্ষায় দীক্ষিত করেছেন। পাকিস্তান আন্দোলনের ভিত্তিও ছিল বাংলাদেশ।
১৯০৬ সালে মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের ঢাকায়। ১৯৪০ সালে পাকিস্তান প্রস্তাব যিনি সারা বিশ্বের কাছে পেশ করেছিলেন তিনিও ছিলেন একজন বাঙালী- বাংলার নয়নমণি, বাংলার বাঘ ফজলুল হক। পাকিস্তান অর্জনের প্রাক্কালে পাঞ্জাবে এবং সিন্ধুতে মুসলিম লীগের বিরোধী মন্ত্রীসভা ছিল- সীমান্ত প্রদেশ পাকিস্তান চায় কিনা তা নির্ধারণ করতে হয় গণভোট নিয়ে।
(তথ্যসুত্র:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র -৫ম খন্ড। পৃষ্ঠা নং ৮৭) চলবে।
আগের পর্ব সমূহ :
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫৩
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫২
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫১
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৫০
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৯
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৮
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৭
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৬
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৫
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৪
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪৩
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪২
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪১
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ : দলিলপত্র-পর্ব-৪০
সম্পাদনা: এইচ চৌধুরী, গ্রন্থনায়: ইয়াসীন হীরা