বিএনএ, ঢাকা: স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে দেশের পানি, বায়ু ও মাটিকে ভালো রাখতে হবে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ ডায়রিয়া ও কলেরার প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এর প্রধান কারণ পানি দূষণ ও অতিরিক্ত গরমে। এ অবস্থায় সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরে দেড় কোটিরও বেশি লোক বসবাস করে। তাদের অনেকেই স্বাস্থ্যগত ক্ষতিকর পরিবেশে বসবাস করে থাকেন। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ হচ্ছে। খাদ্যে ভেজালের কারণেও মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিচ্ছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, মানুষের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে সব কিছুই ভালো থাকবে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর জলবায়ু দূষিত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হয় গ্রিন হাউজ ইফেক্ট। বায়ু দূষণ, যানবাহনে ধোঁয়া, কল কারখানা থেকে দূষিত বায়ুতে। এসবের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এতে করে বরফ গলে সমুদ্রের পানি বেড়ে যাচ্ছে। বন্যা হচ্ছে, টর্নেডো হচ্ছে, এগুলো প্রতিটিই মানুষের স্বাস্থ্যকে ক্ষতিকর অবস্থায় ঠেলে দিচ্ছে। ঢাকা শহরে বায়ু দূষণ অনেক বেশি। এর ফলে অনেক অসুখ-বিসুখ হচ্ছে। নগরায়ন এত হচ্ছে যে গাছপালা থাকছে না। প্রতি বছর বিশ্বে ৬০ লাখ হেক্টর বনায়ন ধ্বংস করা হয়, যা বাংলাদেশের অর্ধেক। বাংলাদেশ বেশি দূষণ করে না। সবচেয়ে বেশি আফ্রিকা, চীন, আমেরিকা, ব্রাজিল, ভারতসহ অন্যান্য দেশ করে। কিন্তু ক্ষতিটা আমাদের বেশি ভোগ করতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের ২০ শতাংশ জমি শিগগিরই পানিতে তলিয়ে যাবে। দূষণের প্রভাবে দেশে ক্যান্সার বাড়ছে, কিনডি রোগ বাড়ছে, ডায়াবেটিস বাড়ছে। তাই দূষণরোধে ব্যবস্থাপনাটা আমাদের ভালো রাখতে হবে উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জলবায়ু মোকাবিলায় বাংলাদেশ কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নদী দখল মুক্ত করছেন, নদীগুলো দূষণমুক্ত করার চেষ্টা করছেন। দূষণরোধে আমাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) কাজী জেবুন্নেছা বেগম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. মো. শাহাদত হোসেন মাহমুদ।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বার্ধান জাং রানা, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার খুরশিদ আলম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. ইকবাল আর্সনাল ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
বিএনএ/আজিজুল,এমএফ