বিএনএ,বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বোরো আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সিড সোয়িং মেশিন ব্যবহার করে সিডলিং ‘ট্রে’তে প্রথমবারের মতো উপশী জাতের ধানের বীজ বপন করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
আগামী ২০-২২ দিনের মধ্যে এ বীজতলায় উৎপাদিত চারা লাগানোর উপযোগী হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ। তিনি বলেন, সিডলিং ‘ট্রে’তে উৎপাদিত চারা রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে সমলয় পদ্ধতিতে জমিতে রোপণ করা হবে। মেশিনের মাধ্যমে ঘণ্টায় ৪০ শতক জমিতে চারা রোপণ করা যাবে। সে হিসেবে ৪০ একর জমিতে চারা রোপণের জন্য ১০-১২ দিন সময় লাগবে। এতে ধানের উৎপাদন খরচ, সময় ও শ্রম সাশ্রয়ী হবে।
উপজেলার পূর্ব আমুচিয়ার স্থানীয় কৃষকেরা এ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার মেশিনের মাধ্যমে ৪০ একর বা ১০০ কানি জমিতে এসব চারা সমলয় পদ্ধতিতে রোপণ করবেন। এতে শ্রম, সময় ও অর্থ সাশ্রয় হবে বলে আশাবাদী স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে আমুচিয়ায় ইউনিয়নের বগাচরা বিলের ৪০ একর জমিতে বোরো আবাদের জন্য ‘ট্রে’ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা ৬০ জন কৃষক তাদের জমিতে রোপণ করবেন। সে লক্ষ্যে বীজতলা তৈরিতে তাদের সময় লেগেছে মাত্র দুইদিন। উৎসবমুখর পরিবেশে কৃষকরা বীজতলা তৈরিতে সহযোগিতা করছেন।
তিনি আরো জানান, কৃষি বিভাগের খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের সহায়তায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমুচিয়া ইউনিয়নের বগাচরা বিলে বোরো আবাদ করা হচ্ছে। এতে ৬০ জন কৃষককে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তারা একমত হয়ে বোরো আবাদে আগ্রহী হয়েছেন। তাদেরকে বীজতলা তৈরীর যন্ত্র, ধানের বীজ, ট্রে ও কয়েকজন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারা পালা করে সিড সোয়িং মেশিন ব্যবহার করে ট্রে’তে বীজতলা তৈরি করেছেন।
আমুচিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. আব্দুল জলিল, অভি বড়ুয়া, রুপন দে বলেন, ‘মেশিনের মাধ্যমে আগে কখনো ধান চাষ করিনি। এবারই প্রথম এ পদ্ধতিতে ১২ একর জমিতে বোরো ধান চাষাবাদ করার পরিকল্পনা নিয়েছি। এরই মধ্যে ট্রেতে বীজ বপন করে ফেলেছি। এ বছর যদি ফলন ভালো হয় তাহলে প্রতিবছরই এ পদ্ধতিতে ধানের চাষাবাদ করবো।’
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম ও সৌমিত্র দে বলেন, ৪০ একর জমিতে রোপণের জন্য ২ হাজার ট্রেতে ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। প্রতিটি ট্রেতে ১৩০ গ্রাম থেকে ১৫০ গ্রাম ধানের বীজ বপন করা যায়। এ পদ্ধতিতে একজন কৃষক ঘণ্টায় ৪০ শতক জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে পারবেন। ট্রে পদ্ধতিতে চারা টেনে তুলতে হয় না, তাই চারার শিকড় ছিঁড়ে না। ফলে শিকড় দ্রুত মাটি থেকে খাদ্য গ্রহণ করে এবং গাছ দ্রুত বাড়ে।
বিএনএ/ বাবর মুনাফ, ওজি