38 C
আবহাওয়া
৩:১১ অপরাহ্ণ - এপ্রিল ২৩, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন ফারদিনের পিতা

প্রধানমন্ত্রীর কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাইলেন ফারদিনের পিতা

বিচার চাইলেন ফারদিনের পিতা

বিএনএ ডেস্ক: বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যার মাস হতে চলেছে। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্তদের এখনও শনাক্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ অবস্থায় ফারদিনের পরিবার ও সহপাঠীরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। হত্যার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দীন।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বুয়েট শহিদ মিনারে দ্রুত ফারদিন হত্যার তদন্ত ও দোষীদের বিচার দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন নূর উদ্দীন। ফারদিনের সহপাঠী ও বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ সমাবেশের আয়োজন করেন।

সমাবেশে ফারদিনের বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘সন্তান হারিয়ে আর বলার কিছু নেই। বুয়েটে সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, শুধু আমার বাবা (ছেলে) নেই।

নূর উদ্দীন বলেন, এটা দুঃখজনক যে, ছেলেকে হারিয়েছি প্রায় এক মাস হলো। এখন পর্যন্ত আমরা সুনির্দিষ্ট কোনো অগ্রগতি দেখিনি। তার সঙ্গে কী হয়েছে, তা এখনো জানি না। এটি যে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, এখন পর্যন্ত তদন্তে চিহ্নিত করা যায়নি। তদন্ত সংস্থাগুলো কোনো অগ্রগতি করতে পারেনি। এটি হতাশার বিষয়। তবে আমি আস্থা রাখি যে, তদন্তকারী সংস্থাগুলো যথাযথভাবে কাজ করবে। আমি ছেলের হত্যাকারীর বিচার চাই। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন করে দোষীদের খুঁজে বের করা হোক, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হোক।’

ফারদিনের বাবা বলেন, ‘বুয়েট থেকে আর কোনো সন্তান যেন এভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার না হয়, আর যেন কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। সবাই একটি অনিশ্চয়তার ভেতর আছে। দ্রুত যদি এটার বিচার হয়, তাহলে অন্যরা আস্থা রাখতে পারবে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের বন্ধু ও সহপাঠীকে হারিয়ে এখানে দাঁড়িয়েছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। আমি ফারদিনের বাবা কিন্তু বুয়েট কর্তৃপক্ষ তো আমার ছেলের অভিভাবক ছিল। এক্ষেত্রে তারা যদি পদক্ষেপ নেয়, তাহলে বিচারের অগ্রগতি হবে বলে আশা করি।’

এ সময় ফারদিন হত্যার দ্রুত বিচারের দাবিতে বুয়েট শিক্ষার্থীরা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। তারা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা বুঝতে পারছি অবশ্যই এটা একটি হত্যাকাণ্ড।’

ফারদিন নূর পরশ।
ফারদিন নূর পরশ।

তদন্তের দীর্ঘসূত্রিতা বুয়েট শিক্ষার্থীদের আশাহত করছে মন্তব্য করে তারা বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধারের আজ ২৯তম দিন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটিত হয়নি এবং হত্যাকারীরাও চিহ্নিত হয়নি। আমরা প্রথম থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের দ্রুত তদন্তের জন্য দাবি করে আসছি। জানি না কী কারণে আমাদের বন্ধু ফারদিনকে হত্যা করা হলো। তদন্তের এই দীর্ঘসূত্রিতা দেখে আমরা আশাহত।’

তারা আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি এবং ছায়া তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাবের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে আসা পরস্পরবিরোধী তথ্য দেখে আমরা বিভ্রান্ত। আমরা বুয়েট শিক্ষার্থীরা ফারদিন নুর পরশের খুনিদের শনাক্ত করে দ্রুততম সময়ে গ্রেফতার করা এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বুয়েট ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় ‘নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা চাই’, ‘ফারদিন হত্যার বিচার চাই’, ‘আমরা সবাই ভাই ভাই, ফারদিন হত্যার বিচার চাই’, ‘তদন্তে বিলম্ব কেন’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে তারা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘আমার মায়ের কান্না, বৃথা যেতে দেব না’ইত্যাদি স্লোগান দেন।

প্রসঙ্গত, গত ৪ নভেম্বর বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ নিখোঁজ হন। ৭ নভেম্বর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ৮ নভেম্বর ফারদিনের ময়নাতদন্ত শেষে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, ফারদিনের বুকে এবং মাথায় অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন ফারদিনের বাবা কাজী নূর উদ্দীন। ইতোমধ্যেই ফারদিনের বান্ধবী বুশরাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

বিএনএ/এ আর

Loading


শিরোনাম বিএনএ