বিএনএ,কুবি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সর্বশেষ (ইলিয়াস-মাজেদ) কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে চলতি বছরের ৬ মার্চ। দীর্ঘ সাত মাস পর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে আগামী ৯ অক্টোবর (সোমবার) কর্মীসভা আয়োজিত হতে যাচ্ছে কুবিতে।
এই কর্মীসভাকে ঘিরে ব্যস্ত পদপ্রত্যাশীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশে ব্যানার ফেস্টুন ছেয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাস।
গুরুত্বপূর্ণ পদে আসার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অনেকের নামই আসছে আলোচনায়। এ তালিকায় আছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের প্রথম পূর্ণাঙ্গ কমিটির সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী, বিগত কমিটির সহ সভাপতি এইচ. এম. মেহেদী হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক স্বজন বরণ বিশ্বাস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মু. রকিবুল হাসান রকি, মো. ইকবাল হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমান হোসেন মাসুম, সাংগঠনিক সম্পাদক মেজবাউল হক শান্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সাবেক সভাপতি ইমরান হোসাইন, শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হলের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ, কাজী নজরুল ইসলাম হলের সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ, নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী হলের সভাপতি ইসরাত জাহান জেরিন, ছাত্রলীগ নেতা তাহারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন শুভ, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক সালমান চৌধুরী, আইন অনুষদ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল সিফাত, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুর বিশ্বাস সহ আরো অনেকে। তবে কে কোন পদের প্রত্যাশা করছেন সেটি তারা প্রতিবেদকের কাছে স্পষ্ট করেননি।
কুবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাবেক সহ সম্পাদক রেজা-ই-ইলাহী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতৃত্বে বাছাই করবে যোগ্যতা, দলীয় মতাদর্শ, সেক্রিফাইজ, ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে শুরু করে দলের প্রতি কতটুকু নিবেদিত এই বিষয়গুলো দেখে এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতামত নিয়ে ছাত্রলীগ নেতৃত্ব বাছাই করবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি নেতৃত্বে আসতে পারলে প্রথমেই নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং নারী নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করবো। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করে সে সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে কাজ করবো। সেই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু, সুন্দর শিক্ষাজীবন নিশ্চিত এবং সুশৃঙ্খল ক্যাম্পাস বিনির্মানে মাননীয় উপাচার্য মহোদয় এবং প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবো।’
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগের কমিটিতে এমন শিক্ষার্থীদের চাই, যারা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করেছে, ছাত্রদের জন্য কাজ করছে। এই ক্যাম্পাস যেন অস্ত্রাগার না হয়ে ফুলের বাগান হয়। তাছাড়া ভবিষ্যত নির্বাচনকে সামনে রেখে যারা শেখ হাসিনার আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে পারবে। নির্বাচনে নৌকা যেন পাস হয় সেই লক্ষে কাজ করবে তাদের মধ্য থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যত নেতৃত্ব যেন বাছাই করে।’
কাজী নজরুল ইসলাম হল শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসান পলাশ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন যারা এখানে রাজনীতি করেছি আমরা চাই যোগ্য, স্মার্ট, মেধাবী, সাংগঠনিক এমন কাউকে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ নির্বাচন করুক। যাদের সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং যারা নেতৃত্বে এলে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে পারবে, ছাত্রলীগের কর্মী বাড়বে এমন কাউকেই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ নির্বাচন করবে বলে আমাদের আস্থা আছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম এতদিন সকলেই দেখেছে, আমি যদি আসি তাহলে আমি চেষ্টা করবো সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগের মধ্যে যেন কোন দূরত্ব যেন না থাকে। প্রতিটি সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ছাত্রলীগ কর্মী যেনো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে, প্রতিটি সাংস্কৃতিকসহ অন্যান্য যত ছাত্র সংগঠন আছে সেগুলো যেন একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারে সেই চেষ্টা করবো।’
ছাত্রলীগ নেতা তাহারাতবির হোসেন পাপন মিয়াজী বলেন, ‘বিগত সময়গুলোতে যারা শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে গঠনমূলক প্রগতিশীল চর্চায় সম্পৃক্ত ছিলো তাদের থেকেই গঠনতান্ত্রিকভাবে মেধাবী পরিশ্রমী ও গ্রহনযোগ্য স্মার্ট ছাত্রনেতাদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হউক। একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে আমি চাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ হবে স্মার্ট ও নিরাপদ যেখানে শিক্ষার্থীরা শতভাগ স্বাধীনভাবে ক্যাম্পাসে চলাফেরা করবে। আমরা চাইনা অস্ত্রের ঝনঝনানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোন মায়ের বুক খালি হোক।’
বিএনএ/আদনান, ওজি