বিএনএ ডেস্ক: বাজারে যে জিনিসটা ভাল সেটা ক্রেতারা বেশি দাম দিয়েই কেনে। ইলিশও একটি ভাল সুস্বাদু পণ্য সঙ্গত কারণেই এর দাম একটু বেশি হবে। এ মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম।
বৃহস্পতিবার (৬ অক্টোবর) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২২ বাস্তবায়ন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী। ইলিশের দাম বেশি হওয়ার তা এখন সাধারণ ভোক্তার নাগালের বাইরে। দাম এত বাড়ছে কেন? সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জনান মন্ত্রী বলেন, এক শ্রেণির অসাধু সিন্ডিকেটের কারণে দাম অনেক সময় বেশি হয়ে যায়। তবে এটা দেখার দায়িত্ব মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের না। এটা দেখভাল করবে যারা বাজার মনিংটরিং করে বা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের।
গত একযুগে দেশে ইলিশ আহরণ দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে রেজাউল করিম বলেন, ইলিশের উৎপাদনে একসময় খারাপ অবস্থা হয়েছিল। সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাপনায় ইলিশের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে গত ১২ বছরে ইলিশ আহরণ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। ইলিশের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সকল মানুষ ইলিশের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী জানান, ইলিশের জন্য অভয়াশ্রম তৈরি, মা ইলিশ ধরতে না দেয়া, জাটকা আহরণ বন্ধ রাখা এবং ইলিশ যেখানে ডিম দেয় সে জায়গায় উপযোগী পরিবেশ রক্ষার ফলে ইলিশের উৎপাদন এভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখাকালে ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত মৎস্যজীবীদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, সেজন্য তাদের সরকার চাল দেয়, বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য সহযোগিতা দেয়। মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা মৎস্যজীবীদের অতীতে পরিবার প্রতি ২০ কেজি করে চাল দেয়া হতো। এ বছর এটি ২৫ কেজিতে উন্নীত করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে এর পরিমাণ আরও বাড়বে।
মন্ত্রী জানান, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে কেউ মাছ আহরণ করে কী না সেটা বিমানবাহিনীর মাধ্যমে আকাশপথে মনিটর করা হবে। নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তর সম্মিলিতভাবে কাজ করবে। মা ইলিশ ধরা বন্ধ রাখতে কোথাও কোথাও বরফকল বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার সময় যারা আইন অমান্য করবে তাদের তাৎক্ষণিক সাজা প্রদানে মোবাইল কোর্টের ব্যবস্থা থাকবে।
বিদেশে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩৫২ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়েছে ১ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার। এই মুহূর্তে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি না পেলে আমরা রপ্তানি করে এ বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারতাম না।
মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার অথবা অন্য কোনো দেশের কেউ এসে আমাদের ভৌগলিক এলাকায় মৎস্য আহরণের কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে চায় আমরা তাদের গ্রেফতার করবো। এ ব্যাপারে আমরা কঠোরভাবে নজরদারি করছি।
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে আগামী ৭ হতে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এ সময়ে দেশের স্বার্থে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী।
বিএনএ/এ আর