31 C
আবহাওয়া
২:২৮ পূর্বাহ্ণ - এপ্রিল ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » সালমান শাহের মৃত্যু:প্রতিবেদনেই আটকে আছে বিচার

সালমান শাহের মৃত্যু:প্রতিবেদনেই আটকে আছে বিচার

সালমান শাহ

।।সাহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া।।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের মরদেহ ১১/বি নিউ ইস্কাটনের বাসার নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়।কিন্তু মৃত্যুর ২৫ বছর পরও মামলাটি শুধু তদন্ত ও প্রতিবেদনেই আটকে আছে।

কয়েকটি সংস্থার তদন্তে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তা এখনো মেনে নিতে পারেনি পরিবার।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের শেষের দিকে পিবিআইকে নতুন করে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটিতে সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম। পিবিআই’র দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনটির ওপর নারাজি দিবেন সালমান শাহ’র মা নীলা চৌধুরী।

গত ৩১ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের আদালতে মামলাটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। কিন্তু সালমান শাহর মা লন্ডনে থাকায় নারাজি দাখিলে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে শুনানির জন্য আগামি ৩১ অক্টোবর নতুন তারিখ ধার্য করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ জানান, ‘সালমান শাহ হত্যা মামলায় পিবিআই যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে আমরা এর বিরুদ্ধে নারাজি দাখিল করবো। সালমান শাহর মা মামলার বাদী নীলা চৌধুরী লন্ডনে আছেন। তিনি দেশে ফিরে আসলেই আমরা নারাজি দাখিল করবো।’

তিনি জানান, ‘পিবিআই যে প্রতিবেদন দিয়েছে আমরা তা মানি নি। আমরা মনে করছি মামলাটি সঠিকভাবে তদন্ত হয়নি। চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার আগে পিবিআই সালমান শাহর মায়ের সাথে যোগাযাগ করেনি। সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিষয়টি জানতে পেরেছি। যাই হোক আমরা মামলাটি পুনরায় তদন্তের আবেদন করবো। র‌্যাব বা অন্য কোনো সংস্থাকে দিয়ে মামলাটি যেন পুনরায় তদন্ত করা হয়। সেটা না হলে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো।’

ওই সময় সালমানের মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী একটি অপমৃত্যুর মামলা করেন। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই সালমানকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়। অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। তদন্ত শেষে ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। সেখানে সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়।

এরপর সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করা হলে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠান আদালত। দীর্ঘ প্রায় এক যুগ মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তাধীন ছিল। ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার তৎকালীন সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক। এ প্রতিবেদনেও সালমানের মৃত্যুকে অপমৃত্যু হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন করা হয়। নারাজি আবেদনে আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন সালমান শাহ’র হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা বলা হয়। আদালত নারাজি আবেদনটি মঞ্জুর করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানকে (র‌্যাব) মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর মামলাটিতে র‌্যাবকে তদন্ত দেওয়ার আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল মহানগর দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন মামলা করেন। ওই বছরের ২১ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর তৎকালীন বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ রিভিশন আবেদন মঞ্জুর করে র‌্যাব মামলাটি আর তদন্ত করতে পারবে না বলে আদেশ দেন। এরপর ৭ ডিসেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট লস্কর সোহেল রানা মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। গত বছর ২৫ ফেব্রুয়ারি সালমান শাহ আত্মহত্যা করেছেন মর্মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই।

বিএনএ নিউজ/ ওজি

Loading


শিরোনাম বিএনএ