20 C
আবহাওয়া
২:২৭ পূর্বাহ্ণ - ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪
Bnanews24.com
Home » ১৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

১৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি

বন্যা

বিএনএ ডেস্ক, ঢাকা: টানা প্রবল বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। দুই জেলায় পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় মধ্যাঞ্চলের পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। গতকাল বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, কাল-পরশুর মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই মাসের মাঝামাঝি সারা দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

বন্যায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভোগও বাড়ছে। অনেক মানুষ নদীভাঙনে হারিয়েছেন ঘর-বাড়ি-স্থাপনা। আশ্রয় হারিয়ে তারা এখন দিশাহারা। বন্যার কারণে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি নানা রোগবালাই হানা দেওয়ায় অবস্থা এখন শোচনীয়।

পাউবোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার এই ধারা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি কমছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি কমছে। রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ ও শরীয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, বর্তমানে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, পাবনা, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরীয়তপুর জেলা বন্যাকবলিত। আটটি নদীর পানি ১৯টি পয়েন্টে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তুরাগ, কালীগঙ্গা, পদ্মা, আত্রাই ও ধলেশ্বরীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে বইছে বলেও জানান এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

এ ছাড়া, পদ্মা নদীর পানি সুরেশ্বর, মাওয়া, ভাগ্যকুল ও গোয়ালন্দ পয়েন্টে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদীর পানি আরিচা, মথুরা, পোড়াবাড়ী, সিরাজগঞ্জ, কাজীপুর, সারিয়াকান্দি, বাহাদুরাবাদ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি—এই ৯টি স্টেশনে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে বইছে।

আত্রাই নদীর পানি বাঘাবাড়ী, ধলেশ্বরীর পানি এলাসিন, তুরাগের পানি কালিয়াকৈর ও কালীগঙ্গার পানি তারাঘাটে বিপত্সীমার ওপরে রয়েছে। এছাড়াও ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে গতকাল যমুনা নদীর পানি বিপত্সীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। জেলার পাঁচটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ১ লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

এদিকে যমুনা নদী-তীরবর্তী কাজীপুর ও চৌহালী উপজেলায় চলছে তীব্র নদীভাঙন। জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার অন্তত ৪০টি ইউনিয়নের ১ লাখেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সিরাজগঞ্জের কাজীপুর ও চৌহালী উপজেলায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

টাঙ্গাইল: গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি আট সেন্টিমিটার কমলেও এখনো বিপত্সীমার ৬১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরমধ্যে টাঙ্গাইলের সাতটি উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ বন্যাকবলিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। বন্যাকবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিলেও ত্রাণসহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ বানভাসিদের।

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামে ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি কিছুটা কমলেও এখনো বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

তিস্তার ভাঙ্গনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা-তীরবর্তী ভাঙনকবলিত মানুষ। অব্যাহত নদীভাঙনে বদলে যাচ্ছে গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ ও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়ন। নদীভাঙনের শিকার লালমনিরহাটের গোকুন্ডা ইউনিয়ন, রাজপুর ইউনিয়ন, রংপুরের পীরগাছার ছাওলা ইউনিয়নের অনেক গ্রাম। ভাঙন দেখা দিয়েছে ঘাঘট নদের তীরেও।

রাজবাড়ী: রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মার পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় গতকাল রবিবার সকাল থেকেই দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

বিএনএনিউজ২৪/ এমএইচ

Loading


শিরোনাম বিএনএ