বিএনএ, ঢাকা : ঢাকার ধামরাইয়ে ব্যাটারি চুরির দায়ে হাছেন আলী নামে এক যুবককে ব্লক তৈরির ফ্যাক্টরির ভেতরে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতন ও অপমান সইতে না পেরে ওই যুবক জুলমতের বাড়ির পাশে ডুমুর গাছে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত হাছেন আলী (৪১) কুশুরা ইউনিয়নের কুনি কুশুরা এলাকার মৃত আনোয়ার হোসেনের ছেলে। তিনি বাস চালক ছিলেন।
নিহত হাছেন আলীর স্ত্রী বলেন, আমার স্বামীকে প্রতিবেশী জুলমত নামে এক ব্যাক্তির ইলেকট্রিক অটো রিকশার ব্যাটারি চুরির অপবাদ দেয়। তাকে কেউ চুরি করতে দেখে নাই এমনকি কোন প্রমাণও নেই। তারপরও রাত ১০টার দিকে হাবিব মেম্বারের ভাই নজরুল ইসলামের ব্লক তৈরির ফ্যাক্টরিতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে হাবিব মেম্বার ও তার ভাই নজরুল বিচার করে। বিচারে আমার স্বামীকে মারধর করে এবং ব্যাটারি চুরির দায়ে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে। পরে রাতে বাড়ি ফিরে আমার শাশুড়িকে বলে দেখ মা আমি চুরি করি নাই। তারপরও আমাকে অনেক মারছে আর এক লাখ টাকা জরিমানা করছে। তারপরেই শুনতে পাই জুলমতের বাড়ির পাশে ফাঁসি দিয়ে মারা গেছে।
নিহতের স্ত্রী আরও বলেন আমার স্বামী নিজেই ফাঁসি দিয়ে মারা গেছে নাকি যারা মারছে তারা এঘটনা ঘটাইছে এটা বলতে পারবো না। জরিমানার টাকা দিতে না পারলে জমি লিখে দিতে হবে বলে জানান।
শামছুল আলম নামে এক অটোরিকশা চালক জানান, অটোরিকশায় সাধারণত চারটি ব্যাটারি থাকে। ড্রাইভিং সিটের নিচে দুইটা এবং পিছনের সিটের নিচে দুইটা ব্যাটারি সহ মোট চারটি ব্যাটারি থাকে। চারটা নতুন ব্যাটারির দাম ৬০হাজার টাকা। পুরাতন ব্যাটারির দাম ২৮-৩০ হাজার টাকা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মেম্বারের ভাই নজরুলের ব্লক তৈরির ফ্যাক্টরিতে হাছেন আলীকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর হাছেন আলীকে অমানুষিক নির্যাতন করে। তারপর এক লাখ টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাছেন আলী বাড়ি ফিরে আসে। শনিবার সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে যেভাবে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এটা অস্বাভাবি মনে হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব বিচারের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন আমি গত দুই দিন ধরে বাসায় নেই। আমার ছেলের জ্বর হয়েছে। এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
কুশুরা বৈন্যা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আব্দুল জব্বার বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করতেছি। আগামীকাল সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে যদি আঘাতের চিহ্ন আসে তাহলে মামলা এক ধরনের হবে। না হলে তদন্ত মামলা হবে।
বিএনএনিউজ/ ইমরান খান/এইচ.এম।