বিএনএ ডেস্ক, ঢাকা: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সারা দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনের ষষ্ঠ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল দুটোই গত কয়েক দিনের তুলনায় বেড়েছে। যদিও কঠোর অবস্থানে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আগের মতোই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্ট। প্রতিটি চেকপোস্টে যানবাহন ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যারা যথাযথ কারণ দেখাতে পারছেন, তারাই কেবল যেতে পারছেন। অন্যথায় মামলা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে চেকপোস্টের এলাকাগুলোয় সকাল থেকে ছিল দীর্ঘ যানজট। এতে প্রতিটি গাড়িকে চেকপোস্টে দাঁড়াতে হচ্ছে। ফলে লকডাউনেও যানজট দেখা দিচ্ছে সড়কে। এ ছাড়া আগের চেয়ে মানুষের চলাচল বাড়ায় গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে।
সড়কে জরুরি সেবার নামে চলছে অসংখ্য ব্যক্তিগত গাড়ি ও মাইক্রোবাস। এ ছাড়া মোটরসাইকেল ও রিকশার সংখ্যাও নগরীতে বেড়েছে। তবে মোটরসাইকেলে দুজন চলাচল করা যাচ্ছে না। যারা নিয়ম অমান্য করে মোটরসাইকেলে দুজন করে বসছেন, তাদের জরিমানা করা হচ্ছে।
রামপুরা এলাকায় চেকপোস্টের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় যানবাহন ও মানুষের চলাচল আগের তুলনায় বেড়েছে। এ জন্য অনেক জায়গায় যানজট তৈরি হচ্ছে। তবে অযাচিতভাবে অনেকেই বাইরে আসছেন। কী জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এসেছেন জানতে চাইলে সাধারণ মানুষ যথাযথ যুক্তি ও ব্যাখ্যা দিতে পারছেন না। এ ধরনের ব্যক্তি এবং যানবাহনের চালকদের আমরা মামলা দিচ্ছি।
রাজধানীর প্রধান সড়কের পাশের অলিগলির দোকানপাটও আগের চেয়ে এখন বেশি খুলেছে। মানুষের চলাচল আগের তুলনায় বেড়েছে। বেড়েছে চায়ের দোকানের আড্ডাও।
বেসরকারি একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করেন জুনায়েদ আহমেদ। তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ঘরে থাকতে চাইছে না। সবাই জরুরি প্রয়োজন দেখিয়ে বাইরে আসছেন। কিন্তু আসলে কয়জন মানুষের জরুরি কাজ আছে, সেটাই দেখার বিষয়। প্রশাসন যদি সাধারণ মানুষের অপ্রয়োজনে অবাধ চলাচল বন্ধ না করতে পারে, তাহলে এ ধরনের লকডাউন দিয়েও কোনো ফল আসবে না।
মালিবাগ এলাকায় নুরুল আমিন নামের এক রিকশাচালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, গতকাল থেকে সকালের দিকে মানুষের চলাচল ভালোই বেড়েছে। কিছু ভাড়া মারতে পারছি। তবে সন্ধ্যার পরে যাত্রী একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। ইনকাম না হওয়াই লকডাউনে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষদের কষ্টের মধ্যেই দিনযাপন করতে হচ্ছে।
করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় চলমান কঠোর লকডাউন আরও সাত দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। এ সময় আগের সব বিধিনিষেধ অব্যাহত থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে বাস, ট্রেন ও লঞ্চ এবং রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিএনএ/এমএইচ