বিএনএ, চট্টগ্রাম: সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনার পর তাড়াহুড়ো করে চট্টগ্রাম বন্দরে পড়ে থাকা ৬২ কনটেইনার হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিলামে বিক্রি করেছে কাস্টমস হাউস। সোমবার (৬ জুন) ২০ ফুট লম্বা ২টি কনটেইনারে থাকা ৬০৯ ড্রামের ৩০ হাজার ৪৫০ কেজি হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মেসার্স এয়াকুব ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৫ লাখ ২০ হাজার টাকায় কিনে নেয়। এর সঙ্গে যোগ হবে সাড়ে ১৭ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স মিলে ৯১ হাজার টাকা।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, গাজীপুরের কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি পোশাক কারখানা চার বছর আগে তুরস্ক থেকে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইডের চালানটি আনে। আমদানির পর প্রতিষ্ঠানটি সেগুলো খালাস করেনি। এরপর থেকে দুই কনটেইনারের চালানটি বন্দরের চত্বরে পড়ে আছে। চালানটিতে ৩০ হাজার ৪৫০ কেজি হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড রয়েছে। এই চালানের সংরক্ষিত দাম ধরা হয় ২৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপো দুর্ঘটনার পর বন্দর কর্তৃপক্ষ বিপজ্জনক এ পণ্য নিলামে তোলার জন্য গতকাল (রোববার) কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। চিঠি পাওয়ার পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে সেগুলো নিলামে তুলে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়।
কাস্টমস হাউস চট্টগ্রামের ডেপুটি কমিশনার আলী রেজা হায়দার জানান, ২০১৮ সালে তুরস্ক থেকে গাজীপুরের কেয়া নিট কম্পোজিট লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান এ রাসায়নিক আমদানি করেছিল। বন্দরের এনসিটি ওয়াই এলাকায় এ চালানের দুইটি কনটেইনার পড়েছিল। কাস্টমস হাউস কর্তৃপক্ষের স্পেশাল অনুমোদনে সোমবার স্পট নিলামে বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি জানান, আমদানি করা এ রাসায়নিকের গায়ের লেবেলে মেয়াদ খুঁজে পাইনি আমরা। বিষয়টি বিডারদের জানানো হয়। নমুনা এনে দেখানো হয় আগ্রহী বিডারদের। এর মধ্যে সর্বোচ্চ দর হাঁকিয়ে ৫ লাখ ২০ হাজার টাকায় এয়াকুব ট্রেডিং এসব রাসায়নিক কিনে নিয়েছে। টাকা জমা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানটি মঙ্গলবার (৭ জুন) ডেলিভারি নিতে পারবে আশাকরি।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে আগুন লাগার ঘটনা শোনার পর দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়েছিল ফায়ার সার্ভিসের সীতাকুণ্ড ও কুমিরা ইউনিটের দুটি দল। তাঁদের কেউ আগুন নেভাতে কনটেইনারে পানি দিচ্ছিলেন, আবার কেউ সঞ্চালন লাইন ঠিক করছিলেন। এমন সময় বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয় রাসায়নিক থাকা কনটেইনারগুলো। এতে হতাহত হয়েছেন বহু মানুষ। এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের ৮ কর্মীর মরদেহ শনাক্ত হয়েছে। তবে এখনো ৪ জনের বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ।
বিএনএ/এমএফ