।। সৈয়দ সাকিব ।।
বিএনএ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বর্তমান চেয়ারম্যান নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ। ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দুই বছরের জন্য চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ পান তিনি। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয়বারের মতো তিন বছরের জন্য পুনরায় চেয়ারম্যান হিসাবে তাকে পুনরায় নিয়োগ দেয়া হয়। আগামী ২৪ এপ্রিল বর্তমান চেয়ারম্যান দোভাষের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
পাঁচ বছর টানা দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে দৃশ্যত কোন দূর্নীতির অভিযোগ নেই। তবে তাকে এবার সরিয়ে দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজনকে এই পদে বসাতে চান চট্টগ্রামের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী।
বর্তমানে ওমরা পালনে থাকা ১৪ দলের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খোরশেদ আলম সুজন সৌদি আরবে যাওয়ার আগে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী র, আ, ম, উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় এক সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘অভিনন্দন সুজন ভাই। নতুন চেয়ারম্যান সিডিএ’ এমন একটি স্ট্যাটাস দেন। এরপরই চট্টগ্রামসহ সারাদেশে হৈচৈ পড়ে যায়। আলোচনা- সমালোচনার ঝড় ওঠে। যদিও সিডিএ চেয়ারম্যান পরিবর্তনের বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর। সিডিএ চেয়ারম্যান সুজন হচ্ছেন নাকি দোভাষ পুনরায় নিয়োগ পাচ্ছেন তা আগামী ৮ই এপ্রিল চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সৌদি আরব থাকা খোরশেদ আলম সুজন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘মানুষের মুখে মুখে শুনতেছি। এখনো আমার কাছে সরকারিভাবে কোনো কনফারমেশন আসেনি। আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহ যা-ই করেন, ভালোর জন্যই করেন। যদি এমন কোন প্রস্তাব পাই তাতেই আমি সন্তুষ্ট।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ১০ আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ডা. আফসারুল আমীন মৃত্যুর পর উপ নির্বাচনে অন্যতম দাবিদার ছিলেন খোরশেদ আলম সুজন। কিন্তু তাকে মনোনয়ন না দিয়ে দেওয়া হয় বর্তমান সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুকে। ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদেও মনোনয়ন চেয়েও পাননি। এর আগে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন সুজন। তারপরও দল ও রাজনীতির মাঠে দমে যাননি দলের পরীক্ষিত ও পোড় খাওয়া এই নেতা ।
২০২০ সালের ৬ আগস্ট খোরশেদ আলম সুজন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ‘নগরসেবায় ক্যারাভ্যান’ ব্যতিক্রমী শোভাযাত্রা শুরু করেছিলেন। নগর ঘুরে ঘুরে নগরবাসীর সমস্যা চিহ্নিত করে তা দ্রুত সমাধানে সচেষ্ট ছিলেন।
১৮০ দিনের দায়িত্ব পালনে নগরবাসীর বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। বিশেষ করে করোনাকালে প্রশাসক হিসেবে স্বল্পকালীন দায়িত্ব পালনের সময় ঝুঁকি নিয়ে তিনি নগরীর আনাচে কানাচে যেভাবে ঘুরে বেড়িয়েছেন। নগরবাসীর সমস্যা- দুর্ভোগ নিজের মতো করে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলেন, সেটি নিকট অতীতে আর কোন নেতার মধ্যে দেখা যায়নি। তবে ব্যক্তিগত কিছু অনিয়মের উল্টো কথাও শোনা যায় তার বিরুদ্ধে।
সবমিলিয়ে পাওয়া না পাওয়ার দোলাচলে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে-সুসময়ে এবং দেশের সংকটময় মুহূর্তে আন্দোলন-সংগ্রামে, কখনো নাগরিক সংকট সমাধানের দাবিতে বারবার রাজপথে সরব উপস্থিতি রয়েছে সুজনের।
বিএনএনিউজ/ বিএম