বিএনএ,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে মো. ফরহাদ হোসেন রুবেল (২৮) নামে এক হাজতিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার (৬ মার্চ) ভোর ৬টা থেকে তাকে খুঁজে পাচ্ছে না কারা কর্তৃপক্ষ।
রুবেলের হাজতি নম্বর ২৫৪৭/২১। রুবেল কেন্দ্রীয় কারাগারে ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের ‘পানিশমেন্ট’ ওয়ার্ডে থাকতেন। সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাগারে যান।
নিখোঁজ রুবেল নরসিংদি জেলার রায়পুরা থানার মীরের কান্দি গ্রামের শুক্কুর আলীর ভাণ্ডারীর ছেলে।
এদিকে দিনভর কারা অভ্যন্তরে তল্লাশি করেও হদিস না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান কোতোয়ালী থানায় জিডি করেন। জিডি নম্বর-৪১৭।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অর্ন্তবর্তীকালীন হাজতের পরোয়ানা মোতাবেক গত ৯ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে কারাগারে পাঠানো হয়। শনিবার সকাল ৬টা থেকে কারা অভ্যন্তরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। তার সন্ধানে কারা অভ্যন্তরে তল্লাশি চলছে।
কারা সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কারাগারের ১৫ নম্বর কর্ণফুলী ভবনের ‘পানিশমেন্ট’ওয়ার্ডে হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন রুবেলসহ অন্য আসামিদের রুমে তালাবদ্ধ করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শনিবার ভোর ৬টায় যখন আবার কক্ষের তালা খোলা হয় তখন হাজতিদের রোলকল করা হয়। তখনই সন্ধান মিলছিল না রুবেল নামের ওই হাজতির। কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যেও তালাবদ্ধ একটা ভবন থেকে একজন হাজতির হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় চলছে কারা অভ্যন্তরে। কারা অভ্যন্তরেই ওই হাজতি লুকিয়ে থাকতে পারে ধারণা করে সেখানে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। বাজানো হচ্ছে পাগলা ঘণ্টা এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশও কারাগারে প্রবেশ করানো হয়েছে। জিডির পর তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার এস আই আইয়ূব উদ্দিনও কারাগারে প্রবেশ করেছেন।
জানা যায়, এরআগে ২০১৮ সালে নরসিংদীর রায়পুরার ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগারে গেলে সেই সময় দুইবার কারাগারের ড্রেনে ও ছাদে আত্মগোপন করেন। সেই সময় ব্যাপক খোঁজাখুঁজির পর দুই বারই তাকে উদ্ধার করে কারা কর্তৃপক্ষ। এবারও তিনি সেই কাজ করেছেন ধারণা করে কারা কর্মকর্তারা আশা করছেন, রাতের মধ্যেই কারাগারের ভেতর থেকে তার সন্ধান মিলবে।
জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, একজন হাজতি নিখোঁজের ঘটনায় কারা কর্তৃপক্ষ থানায় একটি জিডি করেছে। ওই হাজতি সদরঘাট থানায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি হিসেবে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।
জিডি’র তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আইয়ূব উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আমি কারাগারে এসেছি। প্রাথমিকভাবে তথ্য যাচাইবাছাই করছি।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার শফিকুল ইসলাম খান ও জেলার রফিকুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ স্থাপন করা যায়নি।
রুবেল সদরঘাট থানার এসআরবি রেল গেইট এলাকায় ৫ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে তুচ্ছ ঘটনায় আবুল কালাম আবু নামের এক ভাঙ্গারি ব্যবসায়ীকে বুকে ছুরিকাঘাত করেন। পরদিন সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কালাম হাসপাতালে মারা যান। ৬ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে হত্যার অভিযোগে ডবলমুরিং থানার মিস্ত্রি পাড়া থেকে ফরহাদ হোসেন রুবেলকে গ্রেপ্তার করে সদরঘাট থানা পুলিশ। ওই মামলায় ৯ ফেব্রুয়ারি আদালতের মাধ্যমে কারাগারে যান রুবেল।
বিএনএনিউজ/মনির