ঢাকা : জনগণের গণমাধ্যমের ওপর আস্থা আছে, তবে রাজনৈতিক, সরকারি ও প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপকে বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের ক্ষেত্রে বড় অন্তরায় হিসাবে দেখছেন তারা। প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়ে অনলাইন মাধ্যমের ওপর মানুষ বেশি নির্ভরশীল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন এর জন্য ‘গণমাধ্যমের ব্যবহার’ নিয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এ জরিপ করে। বৃহস্পতিবার(৬ ফেব্রুয়ারি) এটি প্রকাশ করা হয়।
কাগজের চেয়ে মোবাইলে অনলাইন সংস্করণ পড়েন বেশি
জুলাই আন্দোলনে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের প্রেক্ষাপটে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতাদের মনোভাব জানার জন্য পরিচালিত জরিপে এ চিত্র উঠে এসেছে।
এতে দেখা গেছে মানুষ মুদ্রিত খবরের কাগজের চেয়ে মোবাইলে অনলাইন সংস্করণ বেশি পড়ছেন। জাতীয় দুর্যোগ বা সংকটে তথ্য খোঁজার জন্য এখনো মানুষ টেলিভিশন বিশ্বাস করেন। তবে তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসাবে রেডিও’র অবস্থান তলানিতে। জরিপে গণমাধ্যমকে স্বাধীন, পক্ষপাতহীন, সরকারি ও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে। তবে বেশিরভাগ উত্তরদাতাই মনে করেন বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত।
খবরের কাগজ পড়ার প্রয়োজন মনে করেন না
গণমাধ্যম বিষয়ক জাতীয় এ জনমত জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৭৩ শতাংশ জানিয়েছেন তারা মুদ্রিত সংবাদপত্র পড়েন না। কারণ হিসাবে ৪৬ ভাগ অংশগ্রহণকারী জানিয়েছেন, তারা খবরের কাগজ পড়ার প্রয়োজন মনে করেন না। টেলিভিশনের ক্ষেত্রে এ হার ৫৩ শতাংশের বেশি। তবে জরিপে অংশ নেওয়া ৬৫ ভাগ মানুষ জানিয়েছেন তারা টেলিভিশন দেখেন। ৯৪ শতাংশ জানিয়েছেন তারা রেডিও শোনেন না। তাদের ৫৪ শতাংশ বলেছেন তারা রেডিও শোনার প্রয়োজন মনে করেন না। প্রায় ৩৫ শতাংশ অংশগ্রহণকারী রেডিও সেটের অপ্রাপ্যতার কথা উল্লেখ করেছেন।
এ বছর এক থেকে সাত জানুয়ারি দেশের ৬৪ জেলায় ৪৫ হাজার খানা (হাউজহোল্ড) থেকে ১০ বছরের বেশি বয়সের সদস্য থেকে উত্তর সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে গণমাধ্যমের বিস্তার, মানুষের সংবাদ গ্রহণের অভ্যাসের পরিবর্তন, গণমাধ্যমের ওপর মানুষের আস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয় প্রতিফলিত হয়েছে।
ফেসবুকে আস্থা রয়েছে ৩১ শতাংশ উত্তরদাতার
সামগ্রিকভাবে ৮৮ শতাংশ উত্তরদাতা জানান তারা গণমাধ্যমের জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহারের হার ৭ শতাংশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে খবরের জন্য ৩১ শতাংশ উত্তরদাতার আস্থা রয়েছে ফেসবুকে। এরপর ইউটিউব, ১৬.৫ শতাংশ । ৪২ শতাংশ উত্তরদাতার কাছে জ্ঞানার্জনের জন্য প্রচলিত গণমাধ্যমের চেয়ে শিক্ষকই সর্বাধিক বিশ্বাসযোগ্য।
বিএনএ,এসজিএন