18 C
আবহাওয়া
১০:০৬ অপরাহ্ণ - জানুয়ারি ৮, ২০২৫
Bnanews24.com
Home » রাবি শিক্ষিকার বিচার চেয়েছেন চাকরিচ্যুত চিকিৎসক

রাবি শিক্ষিকার বিচার চেয়েছেন চাকরিচ্যুত চিকিৎসক


বিএনএ, রাবি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফলিত রসায়ন ও কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোসা. সাবিনা ইয়াসমিনের উপযুক্ত বিচার ও রাবি প্রশাসনের কাছে চাকরিতে পুর্নবহালের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যৌন নির্যাতনের অভিযোগে চাকরিচ্যুত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-প্রধান দন্ত চিকিৎসক ডা: রাজু আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পিছনে সাংবাদিকদের নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি জানান ডা: রাজু।

সংবাদ সম্মেলনে ডা: রাজু আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্র ছাড়াও নগরীর তালাইমারির আমেনা প্রাইভেট ক্লিনিকে বিকেল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আমি প্র্যাকটিস করি। ২০২৩ সালে ৩০ অক্টোবর বিকেল সাড়ে ৬টায় রাবির ফলিত রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোসা: সাবিনা ইয়াসমিন আমার চেম্বারে আসার এ্যাপয়েনমেন্ট চাইলে তাকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আসতে বলা হয় কিন্তু তিনি যথা সময়ে না এসে রাত ৯.৫৩ মিনিটে আমাকে ফোন করে চেম্বারে আসতে চান। তখন চেম্বার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরেও তার মেয়ের গুরুতর দাঁতে ব্যথা হচ্ছে জানালে সম্পূর্ণ মানবিক কারনে আমার সহকারীকে দ্বিতীয়বার চেম্বার খুলতে বলি।

এদিকে রাত ১০টার পর চেম্বারে আসেন সাবিনা ইয়াসমিন ও তার মেয়ে। পরে চিকিৎসা প্রদান শেষে আমার সহকারী আবুল কালাম চিকিৎসার ফিস চাইলে ড. সাবিনা ইয়াসমিন ফিস চাওয়া নিয়ে দুর্ব্যবহার শুরু করেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। আমি এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে তিনি আমার সাথেও খারাপ ব্যবহার করেন এবং একপর্যায়ে আমাকে মারতে তেড়ে আসেন। আমার মাথায় ভারী পেপারওয়েট দিয়ে পরপর দুবার আঘাত করেন। ফলে আমি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তিনি চিৎকার দিয়ে ওনার পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী কয়েকজন দুর্বৃত্তকে চেম্বারে প্রবেশ করতে বলেন এবং দুর্বৃত্তরা আমার বুকে সজোরে লাথি মারতে থাকে। এছাড়াও আমার চেম্বার ভেঙ্গে তছনছ করে দেন যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনুমানিক প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।

সঠিক তদন্ত ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন না করেই বেআইনীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন ডা: রাজু আহমেদ। অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করার এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে প্রশাসনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশান দায়ের করেন তিনি; আদালত চাকরিচ্যুতির এ আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে। এছাড়াও দূর্বৃত্তদের নিয়ে ক্লিনিকে হামলার অভিযোগ এনে ড. সাবিনা ইয়াসমিনসহ আরও তিনজনকে আসামি করে কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেন ডা: রাজু। মামলা নং- সি.আর-১৩৮৭/২৩ (বোয়ালিয়া)। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

শিক্ষিকার বিচার চেয়ে তিনি দাবি জানান, ড. সাবিনা ইয়াসমিন একজন ফৌজদারী মামলার আসামী হয়েও অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে চাকরিতে বহাল রয়েছেন। আমার নামে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অভিযোগ এনে আমার নামে মিথ্যা মামলা এবং আমাকে চাকরিহারা করার জন্য আমি তার উপযুক্ত বিচার চাই এবং আমাকে চাকুরীতে পূর্নবহালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট সহযোগিতা কামনা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক নারী শিক্ষার্থীর সামাজিক মাধ্যমে জানানো অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে ডা. রাজু জানান, “আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের আগের প্রশাসনকেও বলেছি, আমার বিরুদ্ধে থানা-পুলিশে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, রেজিস্ট্রার—কারো নিকট কোনো নারী শিক্ষার্থী লিখিত অভিযোগ তো দূরে থাক কোনো ধরণের অভিযোগই জানায়নি। আপনারাও খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন। কি কারণে ফেসবুকে আমাকে এসব নিয়ে লেখালেখি হয়েছিল, তা আমার জানা নেই।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৩০ অক্টোবর রাতে নগরের তালাইমারি এলাকার আমেনা ক্লিনিকে রাবি শিক্ষক ড. সাবিনা ইয়াসমিনের মেয়েকে নিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে রাজু আহমেদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৬তম সিন্ডিকেট সভায় রাজু আহমেদকে চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে চাকরিচ্যুত করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ডা. রাজুর সাংবাদিক সম্মেলনে করা অভিযোগের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ফলিত রসায়নের শিক্ষক ড. সাবিনা ইয়াসমিন জানান, “আমি ডা: রাজু আহমেদের নামে মামলা করার ১৩দিন পর, তিনিও আমার নামে মামলা করেছেন। আমাকে হয়রানি করার জন্যই মূলত তিনি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে আমি লিখিত অভিযোগ জমা দিলে তদন্ত কমিটির সদস্যরা সত্যতা পেয়েই তাকে চাকরিচ্যুত করেছেন।”

বিএনএ/ সৈয়দ সাকিব/এইচমুন্নী  

Loading


শিরোনাম বিএনএ